যশোরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৫-তে, নতুন করে আরও ১১ জন শনাক্ত

0

স্টাফ রিপোর্টা ॥ যশোরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। বুধবার আরো ১১ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৫-তে। আক্রান্তদের মধ্যে চিকিৎসক-সাংবাদিক ও স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারের প থেকে বুধবার দুপুরে এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়। যদিও সকালে প্রথম জানানো হয়েছিল, শনাক্তের সংখ্যা ২৬। কিন্তু পরে তা প্রত্যাহার করে নিয়ে সংশোধিত ফলাফল পাঠানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারে বুধবার ১১৩টি নমুনা পরীা করা হয়। এরমধ্যে যশোরের ৬৫টি নমুনা পরীা করে ১১টি পজেটিভ রেজাল্ট পাওয়া যায়। বাকি ৪৮টি নমুনা যশোরের পাশের জেলা ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইলের। এর সবকটিরই নেগেটিভ রেজাল্ট আসে। নেগেটিভ রেজাল্টের মধ্যে ঝিনাইদহের ৩৩টি, মাগুরার নয়টি এবং নড়াইলের ছয়টি নমুনা রয়েছে। সকালে যবিপ্রবি থেকে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল, সেখানে নতুন করে ২৬টি নমুনা পজেটিভ হয়েছে বলা হয়েছিল। কিন্তু কিছুসময়ের মধ্যে এই তথ্য সংশোধন করা হয়। পরে জানানো হয় ১১টি নমুনা পজেটিভ। এই প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন জানান, কিছু নমুনা রিচেক না করেই রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে। রিচেকের পর আগামীকাল এগুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, ‘জেনোম সেন্টারে কর্মরত প্রফেসর ড. ইকবাল কবীর জাহিদের নেতৃত্বাধীন গ্রুপটি সদস্যরা কোয়ারেন্টাইনে গেছেন। সেই কারণে সকালে রিপোর্ট দেওয়ার েেত্র সামান্য জটিলতা সৃষ্টি হয়। এটা তেমন গুরুতর কিছু নয়। তবে বিষয়টি যেহেতু খুবই সেনসেটিভ, সেই কারণে পরিপূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে রিপোর্ট দেওয়া হবে না বলে তিনি জানান। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনোম সেন্টারের পরীাগারের সদস্য ও এনএফটি বিভাগের চেয়ারপারসন ড. শিরিন নিগার জানান, জেনোম সেন্টারে আজ ১১৩টি নমুনা পরীার ফলাফলে মোট ১১ জনের শরীরে করোনার জীবাণু রয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্তরা সবাই যশোর জেলার। বাকি ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইলের ৪৮টি নমুনার মধ্যে সবকটিরই নেগেটিভ রেজাল্ট এসেছে। পরীার ফলাফল আইইডিসিআর-সহ সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জনকে ই-মেইলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যশোর জেলা সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন বলেন, যবিপ্রবি জেনোম সেন্টার থেকে যে ১১ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে তার মধ্যে একজন চিকিৎসক, একজন ডাক্তার ও ৬ জন স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ৪ জন, মনিরামপুর উপজেলায় ৪ জন, কেশবপুর উপজেলায় ৩ জন ও চৌগাছা উপজেলায় ১ জন রয়েছে। নতুন শনাক্ত হওয়া এসব করোনা রোগীদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে তাদের বাড়ি ও আশপাশ এলাকায় লকডাউন করাসহ স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদিকে গত কয়েকদিনে যশোরে করোনা রোগী শনাক্তের তালিকায় চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যাওয়ায় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্বাবধায়ক দিলীপ কুমার রায় বলেন, আমরা এখন আর কেউ শঙ্কামুক্ত নয়। প্রতিদিন চিকিসক-স্বাস্থ্যকর্মীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় খুবই চিন্তিত। তিনি বলেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে হাসপাতাল লকডাউন করা ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না। যবিপ্রবি জেনোম সেন্টারে বৃহত্তর যশোরের চারটি জেলার করোনা সন্দেহ রোগীদের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। জেলাগুলো হলো যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা ও নড়াইল জেলা। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে মঙ্গলবার কুস্টিয়া মেডিকেল কলেজের ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে চিকিৎসক-নার্সসহ ২৮ জনের শরীরে যে করোনা পজেটিভ এসেছে বলে রেজাল্ট দেয়া হয়েছে সেটি সন্দেহজনক হওয়ায় আইডিসিইআর গ্রহন করেনি। যেকারণে ওই ২৮ জনের নমুনা পূনরায় সংগ্রহ করে যবিপ্রবি ল্যাবে পরীক্ষার জন্য কুস্টিয়া জেলা সিভিল সার্জন অফিস পাঠিয়েছে। নমুনাগুলো আজ থেকে পরীক্ষা চলছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।