দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে করোনায় আক্রান্ত ১৮০ জন, মৃত ২

0

সুন্দর সাহা॥ যশোরসহ দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ১০ জেলায় গতকাল পর্যন্ত ১৮০ জন কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। সব থেকে বেশি করোনা পজিটিভ শনাক্ত করা হয়েছে যশোর জেলায়। আর সাতক্ষীরা জেলায় রয়েছে সব থেকে কম, মাত্র একজন। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর ও সংশ্লিষ্ট জেলার সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলায় আক্রান্ত ৫৫ জন। এরপরই ঝিনাইদহে ২২ জন, নড়াইলে ১৩ জন, কুষ্টিয়ায় ৩২ জন, খুলনায় ১২ জন, চুয়াডাঙ্গায় ৩৬ জন, মাগুরায় ৪ জন, মেহেরপুরে ৩ জন, বাগেরহাট ২ জন ও সাতক্ষীরায় ১ জন করোনা শনাক্ত করা হয়েছেন। খুলনা বিভাগের সবকটি জেলায় এখন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। যদিও সাতক্ষীরা জেলায় আক্রান্ত একমাত্র ব্যক্তি যশোরে কর্মস্থলে আক্রান্ত হয়ে সাতক্ষীরায় চিকিৎসাধীন। সাতক্ষীরা জেলার সিভিল সার্জন জানান, ওই ব্যক্তি সাতক্ষীরা সদরে নিজ বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশিদা খানম বলেন, বিভাগের খুলনায়, যশোরে ও কুষ্টিয়ায় পিসিআর মেশিনের মাধ্যমে করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। খুলনার রূপসা উপজেলার এক ব্যক্তি এবং মেহেরপুরে এক ব্যক্তি করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যান। পরে তাদের নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, করোনা ভাইরাস পজিটিভ আক্রান্তে শীর্ষে রয়েছে যশোর জেলা। যশোরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) ল্যাবে গতকাল আরও ১১ জন নতুন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে যশোরে করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫৫ জন। মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) চার জেলার ১১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা শেষে বুধবার (২৯ এপ্রিল) সকালে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। তবে এদিন যশোরে নতুন রোগীর সন্ধান মিললেও অন্য জেলায় নতুন কোনো করোনা পজিটিভ রোগী পাওয়া যায়নি। যবিপ্রবির জনসংযোগ কর্মকর্তা আব্দুর রশিদ জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যাবে মঙ্গলবার ১১তম দিনে চার জেলার ১১৩ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ১১ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। নতুন আক্রান্ত সবাই যশোর জেলার।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী করোনাভাইরাসে সাতজন চিকিৎসকসহ ৩৬ জন আক্রান্ত হয়েছে। যার মধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাত চিকিৎসকসহ ১৯ জনের করোনা পজিটিভ। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের নার্সসহ ৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। আক্রান্ত ডাক্তার ও নার্সরা শরীরে করোনা নিয়ে কদিন ধরেই হাসপাতালে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। হাসপাতালটি লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আলমডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাদি জিয়া উদ্দিন আহমেদ জানান, যাদের পজিটিভ এসেছে তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয় কুষ্টিয়া সরকারি হাসপাতাল ল্যাবে। এদের মধ্যে ৭জন ডাক্তার সহ নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন।” তিনি আরো বলেন, “শনাক্ত হওয়া প্রত্যেকে আইসোলেশনে রয়েছেন। হাসপাতালের বাদ বাকিদের জরুরীভিত্তিতে নমুনা সংগ্রহ করে পরীার চেষ্টা করা হচ্ছে।” এর আগেই এই জেলায় করোনা শনাক্ত হয় ৮জন। সব মিলিয়ে জেলায় মোট আক্রান্ত ৩৬জন। এদিকে, চুয়াডাঙ্গায় করোনাভাইরাসে সাতজন চিকিৎসকসহ ২৮ জন আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করার পর গত মঙ্গলবার জানানো হলো রিপোর্টগুলো অমীমাংসিত। চুয়াডাঙ্গা জেলার সিভিল সার্জন এএসএম মারুফ হাসান জানালেন, ২৮ জনের রিপোর্ট নেগেটিভ বা পজিটিভ কোনোটাই নয়। সিভিল সার্জন বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের ল্যাব থেকে করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট আসে। সেখানে বলা হয় জেলায় ২৮ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করার ৫ ঘণ্টা পর জানানো হয় রিপোর্টগুলো অমীমাংসিত রয়েছে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ থেকে ২৮ জনের নমুনা পুনরায় পরীক্ষার জন্য যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, ঝিনাইদহের নতুন করে সর্বশেষ মঙ্গলবার আরও আট জন করোনা রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন জন চিকিৎসক রয়েছেন। জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিক্যাল অফিসার ও করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা. প্রসেনজিৎ বিশ্বাস পার্থ জানান, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৩ জনের নমুনা পরীক্ষার পর গত মঙ্গলবার এই আট জনের করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। এ নিয়ে গত চার দিনে জেলায় ২২ করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ঝিনাইদহ সদরে ৫ জন, কালীগঞ্জে ছয় জন, শৈলকুপায় সাত জন, মহেশপুরে একজন, কোটচাঁদপুরে দুই জন ও হরিণাকুন্ডুতে একজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। সিভিল সার্জন ডা. সেলিনা বেগম জানান, আমাদের হাতে এই ২৩টি নমুনার ফল এসেছে। এ নিয়ে জেলায় মোট প্রাপ্ত ফলের সংখ্যা ১৮৬ । এর মধ্যে নেগেটিভ ১৬৫ এবং পজিটিভ ২২।
এছাড়া, দিন দিন করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় নড়াইল জেলাকে আনুষ্ঠানিকভাবে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) বিকেল ৩টা থেকে এ লকডাউন কার্যকর হয়েছে। জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ লকডাউন ঘোষণা করেন। নড়াইলের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল মোমেন জানান, মঙ্গলবার কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি। তবে সোমবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব থেকে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুব্রত কুমারসহ তিন চিকিৎসকের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে। এছাড়াও গত রোববার জেলা প্রশাসনের এক কর্মচারীর করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। এ নিয়ে জেলায় মোট সাতজন চিকিৎসকসহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ১৩ জন। আক্রান্তরা সবাই নিজ নিজ বাসায় আইসোলেশনে রয়েছেন। নড়াইলের জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বলেন, হঠাৎ করে নড়াইলে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৩টা থেকে এ লকডাউন কার্যকর হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এটা বহাল থাকবে। অন্য জেলার সঙ্গে এ জেলায় এবং এক উপজেলার সঙ্গে অন্য উপজেলায় আসা-যাওয়া বন্ধ থাকবে। এছাড়া যেকোনো গণপরিবহন ও জনসমাগম নিষিদ্ধ থাকবে। তবে জরুরি পরিষেবা লকডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।
তাছাড়া, খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের ল্যাবে সর্বশেষ মঙ্গলবার আরও তিনজন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তরা হলেন খুমেকের নার্স, রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নারী পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও নৈশপ্রহরী।এ নিয়ে খুলনায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২ জনে দাঁড়াল। এদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের চিকিৎসক সুজ্জাত আহমেদ। তিনি বলেন, মঙ্গলবার খুমেকের ল্যাবে ৬৮টি নমুনার পরীক্ষা করা হয়। এতে তিনজনের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। তারা তিনজনই করোনায় আক্রান্ত রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। রূপসা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাসরিন আক্তার বলেন, রূপসা হাসপাতালের দুই কর্মীর করোনা শনাক্ত হয়েছে। তাই হাসপাতালের ৪র্থ শ্রেণির কোয়ার্টার (২) লকডাউন করা হয়েছে। সবাইকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে, সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী কুষ্টিয়া জেলায় ৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। সর্বশেষ মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত একজন স্বাস্থ্যকর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামে এক শিশু আক্রান্ত হয়েছে। কুষ্টিয়ায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে রাখা হয়েছে। শিশুটির পিতা-মাতাও করোনায় আক্রান্ত তারাও কুষ্টিয়ায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম নতুন করে এই দুজনের করোনা আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার ৭৬ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। এর মধ্যে দুজনের রেজাল্ট পজিটিভ আসে। সিভিল সার্জন জানান, ঢাকায় বসবাসকারী দম্পতি করোনা পজিটিভ নিয়ে কুষ্টিয়ায় আসার সময় পথিমধ্যে পুলিশের হাতে আটক হন। পরে তাদের কুষ্টিয়ায় আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তবে স্বামী-স্ত্রী দুজনের পজিটিভ আসলেও মেয়ের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছিল বলে জানান ওই দম্পতি। এর আগে গত ২৬ এপ্রিল কুষ্টিয়ায় পিসিআর ল্যাবে পরীক্ষায় কুষ্টিয়ায় একদিনে এক আওয়ামী লীগ নেতা, এক উপজেলা চেয়ারম্যান, এক এসিল্যান্ড, সরকারি হাসপাতালের দুজন চিকিৎসক, দুটি পরিবারের ৯ জন সদস্যসহ ১৭ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া যায়। এ নিয়ে কুষ্টিয়া জেলায় বর্তমানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩২ জনে। কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, গত ২৬ এপ্রিলের পরীক্ষায় যে ১৭ জনের পজিটিভ রেজাল্ট আসে তাদের পুনরায় পরীক্ষা করার জন্য নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে, সর্বশেষ গত রোববার মাগুরার শালিখা উপজেলায় এবার এক মসজিদের ইমাম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। তার বাড়ি যশোর জেলার বাঘারপাড়া উপজেলায়। তিনি শালিখা ইউনিয়নের আদাডাঙ্গা গ্রামের একটি মসজিদের ইমাম। জেলায় এ নিয়ে চারজনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হলো। শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান এক জরুরি গণবিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। শালিখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তানভীর রহমান জানান, এ ঘটনায় আদাডাঙ্গা প্রাম লকডাউন করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উক্ত গ্রাম থেকে কোনো ব্যক্তি বাইরে বের হতে পারবেন না এবং বাইরের কোনো ব্যক্তি উক্ত গ্রামে প্রবেশ করতে পারবেন না। এ আদেশ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনআনুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার এক ব্যক্তির নমুনায় করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন এ তথ্য জানিয়েছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) সাদিয়া সুলতানা। তিনি জানান, করোনা শনাক্ত করতে গাংনীর ২০০ জনের নমুনা পরীার জন্য পাঠানো হয়েছিল। ১৮৫ জনের রিপোর্ট পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে একজনের রিপোর্টে করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে। তার বয়স ৩০ বছর। এছাড়া, মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার ভবরপাড়া গ্রামে করোনাভাইরাসে একজনের হয়েছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার থেকে মুজিবনগর উপজেলা লকডাউন করা হয়েছে। একই সঙ্গে মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক, দুইজন চিকিৎসক, ১৪ জন নার্স, একজন ওয়ার্ড বয় ও তিনজন কিনার্সসহ ২১ জনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ। পাশাপাশি মৃত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসায় মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, একজন চিকিৎসক ও ওসিসহ তিনজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।
তাছাড়া, মেহেরপুরে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন। ৪০ বয়সী ওই ব্যক্তি ব্র্যাকের যক্ষ্মা প্রতিরোধ বিভাগে কর্মরত। তার বাসা লকডাউন করে দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসন। রিপোর্ট পজিটিভ আসায় বুধবার সকালে বাড়িটি লকডাউন করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে কোনো উপসর্গ নেই এবং তিনি সুস্থ আছেন। গত এক সপ্তাহ তিনি কার কার সংস্পর্শে গেছেন তাদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে. বুধবার (২৯ এপ্রিল) বাগেরহাটের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোর করোনা ভাইরাসের আক্রান্ত হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের বাঁশবাড়িয়া গ্রামে তার সন্ধান পায় স্বাস্থ্য বিভাগ। বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ূন কবির জানান, বাগেরহাট সদর উপজেলার এক ব্যক্তি তার ১৩ বছর বয়সী ছেলেকে হৃদরোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে ওই কিশোরের শরীরে করোনা ভাইরাস ধরা পড়ে। এদিকে, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার পাটরপাড়া গ্রামে জেলার প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। করোনা আক্রান্ত ওই যুবক মাদারীপুর জেলার একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। তার করোনা পজেটিভ বলে নিশ্চিত করেছেন বাগেরহাটের সিভিল সার্জন কে এম হুমায়ূন কবির।
অপরদিকে, গত রোববার পাওয়া রিপোর্টে সাতক্ষীরায় এই প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন একজন স্বাস্থ্যকর্মী। তিনি যশোরের শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট। সাতক্ষীরা শহর থেকে অফিসে যাতায়াত করতেন তিনি। তার বাড়ি সাতক্ষীরায়। গত শনিবার সন্দেহজনক তার নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। এরপর তিনি কর্মস্থল থেকে সাতক্ষীরা শহরে ফেরেন। রোববার সকালে পরীক্ষার ফলাফলে তার শরীরে করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন সাফায়াতের নেতৃত্বে আক্রান্ত স্বাস্থ্যকর্মীর স্বাস্থ্য পরীা করে একটি মেডিকেল টিম।