বৈষম্য ! স্বাস্থ্য কর্মীরা সেবা দিচ্ছেন বেলা ১২ টা পর্যন্ত, পরিবার পরিকল্পনার মাঠকর্মীরা বিকেল সাড়ে ৩ টা পর্যন্ত

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সরকার টানা ছুটি ঘোষনা করলেও শুধুমাত্র স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টদের ছুটি বাতিল করেছে। তারই অংশ হিসেবে যশোরের মনিরামপুরে স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা সকাল আটটা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন। তবে বৈষম্য রয়েছে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে। অভিযোগ রয়েছে হালনাগাদ কোন দিকনির্দেশনা(পরিপত্র) না থাকায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীরা বাধ্য হয়েই স্বাস্থ্যঝুকির মধ্যে আগের মতই সকাল নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে চলেছে। এ নিয়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ বিরাজ করছে। তবে পরিবার পরিকল্পনার কর্মকর্তারা বলছেন এ সমস্যা শুধু মনিরামপুরে নয়, এ সমস্যা সারা দেশেই বিদ্যমান রয়েছে।
জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নিচ তলার উত্তরমাথায় অবস্থিত পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অফিস। আর দক্ষিন মাথায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অফিস। গোটা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র পাঁচটি কক্ষে পরিবার পারিকল্পনার অফিসিয়ালসহ বিভিন্ন কার্যক্রম চলে আসছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা: শুভ্রা রানী দেবনাথ জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমান মেডিকেল অফিসার এবং স্যাকমোসহ চিকিৎসক রয়েছেন ১৯ জন। নার্স ১৬ জন, ধাত্রী ৪ জন। ছাড়াও মাঠ পর্যায়ে স্বাস্থ্য সহকারি ৪০ এবং ৪৩ কমিউনিটি কিনিকে রয়েছেন ৪৩ জন সিএইচসিপি(হেলথ প্রোভাইডার)সহ প্রায় ১৫০ জন কর্মী। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের নির্দেশনায় বর্তমান এরা সকাল ৮ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করছেন।
অন্যদিকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আবদুস সাত্তার জানান, পরিবার পরিকল্পনায় রয়েছেন ২ জন মেডিকেল অফিসার, ৫ জন উপসহকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার(স্যাকমো), ১৬ জন পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা(এফডব্লিউভি), ১৬ জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক(্এফপিআই), ৬৫ জন পরিবার কল্যান সহকারি(এফডব্লিউএ)সহ প্রায় ১৫০ জন কর্মী।এদের মধ্যে অধিকাংশরাই মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তবে এরা সকাল নয়টা থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। শুধু তাই নয়, বর্তমান করোনা ভাইরাসের মধ্যে এসব মাঠকর্মীরা স্বাস্থ্য ঝুকির মধ্যে থেকে নিয়মিতভাবে এলাকায় স্যাটেলাইট কিনিকে উপচেপড়া কায়েন্টদের সেবাদান করে চলেছেন। এ ব্যাপারে কথা হয় বাসুদেবপুর এলাকার এফডাব্লিউএ মেনুকা রানীর সাথে। তিনি জানান, স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীরা বেলা ১২ টা পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করলেও তাদের(পরিবার পরিকল্পনা) করতে হচ্ছে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত। পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা সনকা শিকদার, ছালমা খাতুন, লায়লা আনজুমান বানু, পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক আমিনুর রহমান, আনজুমান আরা বেগম জানান, করোনাভাইরাস প্রতিরোধে কোন স্বাস্থ্য উপকরন(পিপিই) ছাড়াই প্রতিনিয়ত ঝুকির মধ্যে থেকে বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালন করতে তাদের পক্ষে দুরুহ হয়ে পড়ছে। উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা অফিসার আবদুস সাত্তার এবং মেডিকেল অফিসার(এমসিএইচ-এফপি) ডা: চন্দ্র শেখর কুন্ডু জানান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের হালনাগাদ কোন নির্দেশনা না থাকায় বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত তাদের কর্মীদের পিপিই ছাড়াই ঝুকি নিয়ে সেবাদান করতে হচ্ছে। এ ব্যাপারে কথা হয় পরিবার পরিকল্পনা যশোরের উপপরিচালক ডা:মুনশি মনোয়ার হোসেন তাপসের সাথে। স্বাস্থ্য বিভাগ ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের বৈষম্যের কথা স্বীকার করে তিনি জানান, এ সমস্যা শুধু যশোরে নয়, এ সমস্যা সারাদেশেই। তবে তিনি আশা করছেন এ বৈষম্যের ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ নিশ্চয় ব্যবস্থা নিবেন।