লোকসমাজ ডেস্ক ॥ ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর ২৩ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। শনিবার বেলা ২টা ৩৮ মিনিটে নয়াদিল্লি থেকে ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট যোগে তাদের ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা রয়েছে। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের সাথে চীনের উহান থেকে ওই ২৩ জন বাংলাদেশী শিক্ষার্থীকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। এক কর্মকর্তা জানান, ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মুহাম্মদ ইমরান ও ডেপুটি হাই কমিশনার এটিএম রকিবুল হক ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাদের বিদায় জানিয়েছেন। বেলা ১১ টা ৫৮ মিনিটে (নয়াদিল্লির স্থানীয় সময়) ফ্লাইটটি বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
মুহাম্মদ ইমরান বলেন, বাংলাদেশীরা ক্যাম্পে কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালে ওই ক্যাম্প কর্তৃপক্ষের সাথে বাংলাদেশ দূতাবাস সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখেছিল। বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থী ও এক শিশুসহ একটি পরিবারের ওই বাংলাদেশী নাগরিকদের প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে কেউই করোনাভাইরাস আক্রান্ত হননি। এর আগে ২৩ জনের মধ্যে এক শিক্ষার্থী ফোনে বলেন, ‘আমরা শুক্রবার স্বাস্থ্য ছাড়পত্র পাবো এবং শনিবার ঢাকায় ফিরতে পারবো বলে আশা করছি।’
ঢাকায় অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনকে ওই শিক্ষার্থী জানান, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বিমান বাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে বেশ কয়েকজন ভারতীয় নাগরিকের সাথে করোনাভাইরাসের কেন্দ্রস্থল চীনের উহান থেকে তাদেরকে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল। অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং ভারত সরকার যে অভূতপূর্ব কাজ করেছে সেজন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই।’ দলের পক্ষ থেকে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকায় সবার জন্যই বেদনাদায়ক এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বেইজিংয়ের ভারতীয় দূতাবাস স্বত:স্ফূর্তভাবে আমোদের সাহায্য করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই শিক্ষার্থী চীনের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমাদের সুরক্ষিত রাখতে ও স্বাস্থ্যের অবস্থা নিশ্চিত করতে তাদের প্রচেষ্টা নি:স্বার্থ ছিল। নিজেদের নাগরিকদের মতো বিদেশি নাগরিকদেরকেও তারা দায়িত্বশীলতার সাথে নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমরা সবসময় আপনাদের এই সহায়তা মনে রাখব।’ এছাড়া ভারতীয় কর্মকর্তাদের পেশাদারিত্ব সবাইকে মুগ্ধ করেছে উল্লেখ করে, তাদের ইতিবাচক মনোভাব ও ধৈর্য সহকারে সকল সমস্যা সমাধানে দক্ষতার প্রশংসা করেছেন বাংলাদেশী নাগরিকরা। এদিকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং স্থানীয় আরো ৩টি বিমান সংস্থা নয়াদিল্লির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ভারতে তাদের সকল ফ্লাইট স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। তবে বাংলাদেশি নাগরিকদের শনিবার সুষ্ঠুভাবে ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ হাই কমিশন এবং ভারতীয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশে ফেরত আসার জন্য অপেক্ষায় থাকা এক শিক্ষার্থী। তবে বৃহস্পতিবার ঢাকার ভারতীয় হাই কমিশন জানায়, ১২ মার্চ বা তার আগে ভারতীয় হাই কমিশন বা ভারতের সহকারী হাই কমিশন দ্বারা প্রদত্ত সকল বৈধ ভিসা ১৩ মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত থাকবে। সূত্র: ইউএনবি