রোহিঙ্গা নির্যাতনকে নাৎসীদের নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা মিয়ানমারের পক্ষ নেয়া আইনজীবীর

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) এক সময় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে চলমান গণহত্যার বিচারে মিয়ানমার পক্ষের আইনজীবী ছিলেন প্রফেসর উইলিয়াম শাবাস। তিনি এখনও মিয়ানমারের আইনজীবী। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলিমদের সঙ্গে সরকার যে আচরণ করে তাকে তিনি হলোকাস্ট চলাকালে ইহুদিদের বিরুদ্ধে জার্মানির নাৎসীদের তুলনা করেছেন। ২০১৩ সালে অপ্রকাশিত এক ভিডিও ফুটেজে তিনি এমন তুলনা করেছেন। ওই ফুটেজ শুক্রবার প্রকাশ করেছে ফোর্টিফাই রাইটস নামের মানবাধিকার বিষয়ক সংগঠন। এই প্রফেসর উইলিয়াম শাবাসকেই আবার ২০১৯ সালে রোহিঙ্গা মুসলিমদের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলায় আইসিজেতে মিয়ানমারের পক্ষ নিতে ভাড়া করা হয়। ফোর্টিফাই রাইটসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ম্যাথিও স্মিথ বলেছেন, ২০১৩ সালে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রফেসর শাবাস যে বর্ণনা দিয়েছিলেন তা ছিল যথার্থ। সেই নির্যাতন বছরের পর বছর অব্যাহত আছে।
তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ ও ২০১৭ সালে গণহত্যার মতো অপরাধ সংঘটিত হয় মিয়ানমারে। ওই ভিডিও ফুটেজ জনস্বাস্থের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এটাকে প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এজন্য যে, মিয়ানমার রাখাইন রাজ্য নিয়ে যে বর্ণনা দেয় তা মিথ্যা।
এডিট না করা ওই ভিডিও ২০১৩ সালে আল জাজিরা প্রামাণ্য চিত্র ধারণের জন্য ক্যামেরাবন্দি করেছিল। ওই প্রামাণ্যচিত্রের নাম ছিল ‘দ্য হিডেন জেনোসাইড’। এতে ছিল প্রফেসর শাবাসের কমপক্ষে ২১ মিনিটের সাক্ষাতকার। তাতে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে যে গণহত্যা চালানো হয়েছে তার বিস্তারিত বর্ণনা আছে। তিনি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকারের আচরণের কারণে তাদেরকে অত্যাচারী শাসক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। ওই সাক্ষাতকারে প্রফেসর শাবাসের কাছে তার নিজের ভাষায় মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের জীবন সম্পর্কে বর্ণনা করার আহ্বান জানান আল জাজিরার পুরস্কার বিজয়ী সাংবাদিক ও ছবি নির্মাতা ফিল রিজ। জবাবে প্রফেসর শাবাস বলেন, এটা এমন একটা বিষয় যা ঘটিয়েছিল ইউরোপে নাৎসী দখলদাররা ইহুদিদের বিরুদ্ধে। রাখাইনে লোকজনকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। তাদেরকে মৌলিক অধিকার বঞ্চিত রাখা হয়েছে। রাজ্যের মধ্যে মুক্তভাবে তাদের চলাচলের অধিকার নেই। দেশ ছাড়ার অনুমতি নেই। তবে লোকজন অবৈধ উপায়ে দেশের বাইরে গিয়েছে এবং প্রবেশ করেছে।