২০৪০ সাল নাগাদ দ্বিগুণ হবে এলএনজির বৈশ্বিক চাহিদা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বৈশ্বিক উষ্ণায়নের কারণে বিভিন্ন দেশ কয়লার মতো উচ্চ মাত্রার কার্বন ও গ্রিনহাউজ গ্যাস নিঃসরণকারী জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছে। এর বিপরীতে ব্যবহার বাড়ছে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি হিসেবে পরিচিত তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি)। জ্বালানি খাতের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান রয়েল ডাচ শেল বলছে, ২০৪০ সাল নাগাদ পণ্যটির চাহিদা দ্বিগুণ হয়ে ৭০ কোটি টনে উন্নীত হতে পারে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত প্রতিষ্ঠানটির এলএনজি বাজারসংক্রান্ত বার্ষিক পূর্বাভাসে এমনটি জানানো হয়। খবর রয়টার্স।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করা হলে প্রাকৃতিক গ্যাস কয়লার তুলনায় ৪৫ থেকে ৫৫ শতাংশ কম গ্রিনহাউজ গ্যাস এবং ১০ ভাগের ১ ভাগের কম বায়ু দূষণকারী পদার্থ নিঃসরণ করে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে কয়লার তুলনায় বেশি গ্রহণযোগ্য হওয়ায় ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের আমদানি বেড়েছে ৭৪ শতাংশ। শেল জানিয়েছে, কম কার্বন নিঃসরণকারী জ্বালানি ব্যবস্থায় এলএনজির অবস্থান অপরিবর্তিত থাকবে। শুধু গত বছরই পণ্যটির বৈশ্বিক চাহিদা বেড়েছে ১২ দশমিক ৫ শতাংশ। এ সময় পণ্যটির চাহিদা বেড়ে ৩৫ কোটি ৯০ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে।
পূর্বাভাসে জানানো হয়, এশিয়ার দেশগুলো আসন্ন দশকে এলএনজির চাহিদা সৃষ্টিতে নেতৃত্বস্থানীয় অবস্থানে থাকবে। বিশেষ করে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় অর্ধেকের বেশি চাহিদা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে।
শেলের ইন্টিগ্রেটেড গ্যাস এবং নিউ এনার্জিস বিভাগের পরিচালক মার্টেন ওয়েটসেলার বলেন, জ্বালানি ও জ্বালানিবহির্ভূত খাতে এলএনজি এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা বাড়ায় ২০১৯ সালে বৈশ্বিক এলএনজি বাজারের সম্প্রসারণ অব্যাহত ছিল। রেকর্ড পরিমাণ বিনিয়োগের কারণে বর্ধিত সরবরাহ পরিচ্ছন্ন এ জীবাশ্ম জ্বালানির চাহিদা মেটাবে।
এবার শীত তেমন তীব্র না হওয়ায় এবং চীনে নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে চাহিদা কমে আসার বিপরীতে অতিরিক্ত সরবরাহের কারণে বৈশ্বিক বাজারে এলএনজির দাম রেকর্ড পরিমাণ কমে যায়। তবে অচিরেই বাজারে ভারসাম্য ফিরে আসবে বলে আশা করছেন মার্টেন ওয়েটসেলার। তিনি বলেন, রেকর্ড পরিমাণ নতুন সরবরাহ, টানা দুটি মৃদু শীত মৌসুম এবং নভেল করোনাভাইরাসের কারণে বর্তমানে বাজারে মন্দা ভাব বিরাজ করলেও ভারসাম্য ফিরে আসবে বলে আমরা আশা করছি। অব্যাহত চাহিদা বৃদ্ধি এবং ২০২০ সালের মধ্যভাগ পর্যন্ত নতুন সরবরাহ হ্রাসের সমন্বয়ে এমনটি ঘটবে।
শেলের আশা, চীনে এলএনজির চাহিদায় নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাব ক্ষণস্থায়ী হবে। তবে নতুন এ ভাইরাসের কারণে এরই মধ্যে ফেব্রুয়ারিতে পণ্যটির চাহিদা কমেছে এবং তা মার্চেও অব্যাহত থাকতে পারে। এরপরও চলতি বছর চীনে এলএনজির চাহিদা ৪০ লাখ থেকে ৬০ লাখ টন বাড়বে বলে জানিয়েছে শেল। বায়ুমান উন্নয়নে সরকারি পদক্ষেপের কারণে গত বছর চীনে এলএনজির আমদানি ১৪ শতাংশ বেড়েছে। বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানেও একই প্রবণতা দেখা গেছে বলে জানানো হয় এ পূর্বাভাসে।
এ পূর্বাভাস প্রকাশের পর এক ওয়েবকাস্টে শেল এনার্জির ইভিপি স্টিভ হিল জানান, পাঁচ প্রান্তিক ধরে আমরা দেখছি, সরবরাহ খুব দ্রুত বাড়ছে এবং এ সরবরাহ শোষণ করে ইউরোপ বাজারে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে। তবে ২০২০ সাল থেকে, বিশেষ করে এ বছরের মধ্যভাগ থেকে সরবরাহ প্রবৃদ্ধি কমে আসবে এবং আপনি দেখবেন বাজার ভারসাম্য রাখতে ইউরোপ ভূমিকা রাখছে না। বরং আগামী দিনে এশিয়া বর্ধিত সরবরাহ শোষণ করে নেবে।