আন্তর্জাতিক সংবাদ

0

চীনে দাড়ি-হিজাবের জন্য বন্দী হাজারো উইঘুর: নতুন নথি ফাঁস
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ চীনে জিনজিয়াংয়ে হাজার হাজার উইঘুর মুসলিমের বন্দীদশার নতুন করে আরও নথি ফাঁস হয়েছে। বিবিসি জানায়, এ যাবৎ ফাঁস হওয়া তথ্যের মধ্যে সবচেয়ে অমানবিক দৃশ্য দেখা গেছে নথিগুলোতে। ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী হওয়ার আগে ৩ হাজারেরও বেশি উইঘুরের প্রতিদিনের কর্মকাণ্ড প্রকাশ পেয়েছে সেগুলোতে। ফাঁস হওয়া ১৩৭ পৃষ্ঠার এসব নথিতে উইঘুরদের জীবনযাপন ও ধর্মীয় আচরণের নানা তথ্য উঠে এসেছে। তারা কীভাবে প্রার্থনা করে, কেমন পোশাক পরে, পরিবারের আচরণ কেমন, কাদের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ-এসব বিষয় নথিভুক্ত করা হয়েছে প্রতিজনের নামে। বিশেষ ৩১১ জনের নামে যুক্ত করা হয়েছে অধিক তথ্য। ধর্মীয় আচার আচরণসহ তাদের অতীত কর্মকাণ্ড, শত শত আত্মীয়-প্রতিবেশী-বন্ধুদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ইত্যাদি যাচাই বাছাই করেছে চীনা কর্তৃপ। দেখা গেছে, দাড়ি রাখা, হিজাব পরা এমনকি ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য বন্দী করে রাখা হয়েছে তাদের অনেককে। নথির ৫৯৮ নং সারিতে দেখা গেছে, হেলশেম নামে ৩৮ বছর বয়সী নারীকে আটক করে রাখা হয়েছে কয়েক বছর আগে তিনি হিজাব পরেছিলেন-এই অভিযোগে। বেশ কয়েকজনকে অন্তরীণ করা হয়েছে পাসপোর্টের আবেদন করার জন্য। দেশ ছেড়ে চলে যাওয়াকেও জিনজিয়াংয়ে এখন চরমপন্থা গ্রহণ হিসেবে দেখা হয়। ৬৬ নং সারিতে দেখা গেছে, মেমেতোহতি নামে ৩৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে একই কারণে বন্দীশালায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যদিও তার নামে পাশে লেখা হয়েছে, কোনো ধরনের প্রায়োগিক ঝুঁকি নেই। তবে উইঘুরদের কোনো ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেইজিং। এসব ডিটেনশন ক্যাম্পকে তারা ট্রেনিং সেন্টার বা প্রশিণ কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করে থাকে, যেখানে সন্ত্রাসবাদ ও ধর্মীয় উগ্রপন্থা মোকাবিলা করা হয় এবং উইঘুরদের জাতীয় সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য শিা দেয়া হয়।

আসাদের নির্মমতায় শীতে জমে মারা যাচ্ছে শিশুরা
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ যুদ্ধ বিধ্বস্ত সিরিয়ার ইদলিবে হাজার হাজার মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছে। খোলা মাঠে আশ্রয় নেয়া বাস্তুচ্যুত এসব মানুষ ভয়াবহ শীতের প্রকোপে মৃত্যু ঝুঁকিতে পড়েছে, এমনকি ঠান্ডায় জমে মারা যাচ্ছে শিশুরা। খবর: আলজাজিরা। গত বছর এপ্রিলে রুশ বাহিনীর সহায়তায় বাশার আল আসাদ বাহিনী ইদলিবে হামলা চালায়। শহরটির ১০ লাখ বাসিন্দাদের অধিকাংশকেই এখানে স্থানান্তরিত করা হয় সরকার নিয়ন্ত্রিত একাধিক এলাকা থেকে। অঞ্চলটিকে ‘ডি-এস্কেলেশন জোন’ ঘোষণা করে গত ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তি সই করে রাশিয়া ও তুরস্ক। এই চুক্তি অনুযায়ী ইদলিবে সামরিক পদপে নেওয়া নিষিদ্ধ। চুক্তি কার্যকরের বিষয়টি পর্যবেণে সেখানে বেশ কিছু পোস্ট বসায় তুরস্ক। কিন্তু সেই চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ১২ জানুয়ারি থেকে ব্যাপক হামলায় চালিয়ে ইদলিবের প্রায় অর্ধেক দখল করে নেয় রাশিয়া ও সিরীয় সরকারি বাহিনী। এতে নিহত হয় প্রায় ১ হাজার ৮০০ জন। বাস্তুচ্যুত হয় কয়েক লাখ সিরীয়। ফেব্র“য়ারিতে ইদলিবে হামলাকে কেন্দ্র করে আসাদ বাহিনী তুরস্কের সেনাবাহিনীর সঙ্গে রীতিমতো যুদ্ধ জড়িয়ে যায়। এতে শরণার্থী সংকট আরও প্রকট হয়। জাতিসংঘ জানিয়েছে, নির্বিচারে বোমাবর্ষণের শিকার হয়ে অন্তত ৮২ হাজার মানুষ প্রচণ্ড ঠান্ডায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে প্রতিবাদকারী ব্রিটিশ এমপি দিল্লিতে আটক
লোকসমাজ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ লেবার এমপি ডেবি অ্যাব্রাহামস জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। তাকে দিল্লি বিমানবন্দরে আটক করে পরে দুবাইয়ে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থার বরাত দিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, দিল্লি পৌঁছানোর পরেও ডেবিকে ভারতে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বলা হয়, তার ই-ভিসা বাতিল হয়ে গিয়েছে। ব্রিটেনে কাশ্মীর সংক্রান্ত অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্র“পের চেয়ারপারসন ডেবি। দিল্লির অভিজ্ঞতার পরে এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ‘অপরাধীর মতো আচরণ’ করা হয়েছে তার সঙ্গে। এ দিকে ভারতের সরকারি সূত্রে শুধু বলা হয়েছে, এ দেশে প্রবেশের উপযুক্ত ভিসা ছিল না ডেবির কাছে। ব্রিটিশ এমপির অভিযোগ, সোমবার সকাল ৮টা ৫০ নাগাদ দিল্লিতে অবতরণের পরে বিমানবন্দরের কর্মকর্তারা বলেন, গত বছর অক্টোবরে পাওয়া তার ই-ভিসা (যা ২০২০ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বৈধ) বাতিল হয়ে গেছে। ডেবি বিবৃতিতে দাবি করেন, ‘‘বাকি যাত্রীদের সঙ্গে আমি অভিবাসন কর্মকর্তাদের সামনে আমার ছবি, ই-ভিসা ও অন্য সব তথ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলাম। তারা আমার ছবিও তুলেছিলেন। তারপর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা স্ক্রিনে আমার ছবি দেখে হঠাৎ মাথা ঝাঁকালেন। তারপর বললেন, ভিসা বাতিল হয়ে গেছে। এই বলে উনি দশ মিনিটের জন্য উধাও হয়ে যান। ফিরে আসার পরে আরও উদ্ধত এবং আক্রমণাত্মক হয়ে আমার সঙ্গে চিৎকার করে কথা বলতে শুরু করেন। আমাকে বলা হয়, তার সঙ্গে যেতে।’’ ডেবি ওই সময় বলেন, এমন আচরণ করছেন কেন? কিন্তু কথা না-শুনে ঘিরে রাখা আলাদা একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয় এমপিকে। ওখানে বসতে বলায় তিনি আপত্তি জানান। বিষয়টি ভারতে বসবাসকারী এক আত্মীয়কেও জানান। ওই আত্মীয়ের মাধ্যমেই বার্তা যায় স্থানীয় ব্রিটিশ হাইকমিশনারের কাছে। তারপরেও কিছু করা যায়নি বলে দাবি ডেবির। ডেবির বক্তব্য, ‘‘রাজনীতিতে এসেছি সামাজিক ন্যায় ও মানবাধিকার সুনিশ্চিত করতে। অন্যায় এবং নিগ্রহ চললে আমি নিজের সরকার-সহ সব জায়গায় চ্যালেঞ্জ জানাতেই থাকব।’’