জালিয়াতির তদন্ত হোক সব বিশ্ববিদ্যালয়ে

0

অবৈধ প্রক্রিয়ায় ভর্তি হওয়ার অভিযোগে ৬৭ শিার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাঁদের বিষয়ে এরই মধ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত ও প্রচারিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সভাপতিত্বে সিন্ডিকেটের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা যায়, এর আগে ওই শিার্থীদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে সাত কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছিল। জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা পরিষদের সুপারিশ অনুযায়ী তাঁদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ১৪ জানুয়ারি শৃঙ্খলা পরিষদের সভায় ভর্তি জালিয়াতির অভিযোগে তাঁদের আজীবন বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
শৃঙ্খলা পরিষদের প্রধান বলেছেন, এ সিদ্ধান্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্মরণীয় বিষয় হয়ে থাকবে বলে তাঁর বিশ্বাস। তাঁরা গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্লেষণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে তদন্তের পরিপ্রেেিত এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জালিয়াতি করে যে বা যাঁরা ভর্তির চেষ্টা করবেন তাঁদের জন্য এ সিদ্ধান্ত একটি সতর্কবার্তা। যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিার্থীর বিরুদ্ধে ভর্তি-জালিয়াতির অভিযোগ ওঠে, তাহলে তিনি পাস করে গেলেও তদন্ত সাপেে তাঁর সনদ বাতিল করা হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে এ অবস্থান ধন্যবাদযোগ্য। প্রতিটি অনিয়ম বা অপরাধের েেত্রই কর্তৃপ যদি এমন দৃঢ় নৈতিক ভূমিকা পালন করতে পারে, তাহলে তা অবশ্যই প্রশংসনীয় বিষয় হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ প্রশাসনিক ও নৈতিক ভূমিকা যথাযথভাবে পালন করলে অভিভাবকদের মধ্যে এবং সমাজে আস্থা বাড়বে।
প্রসঙ্গত গত বছরের ৩০ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীার প্রশ্ন ফাঁসসংক্রান্ত মামলায় ১২৫ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন এবং পাবলিক পরীা আইনে আলাদা দুটি অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। আসামিদের ৮৭ জনই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিার্থী। তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এর আগে ১৫ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়। তাঁদের মধ্যে মঙ্গলবার স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা শিার্থীও রয়েছেন। মামলা দায়ের করা হয়েছিল রাজধানীর শাহবাগ থানায়। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ভর্তি জালিয়াতি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হয়নি বা হয় না দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অভিযোগ রয়েছে, যা তদন্ত করা প্রয়োজন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা স্পষ্ট অভিযোগ ও তদন্তের ভিত্তিতেই নেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত কর্তৃপরে প্রশাসনিক ও নৈতিক ভূমিকা পালনের স্মারক। নানা কারণে ঐতিহ্যবাহী এ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ীয়মাণ। এ সিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠানটির মান-মর্যাদা অনেকাংশে উদ্ধার করবে। বিশ্ববিদ্যালয় শুধু একটি শিাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি শিার এবং নীতি-নৈতিকতার মানদণ্ডও বটে। শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বকীয় অবস্থানে দীপ্তিমান থাকুক, এটাই আমরা আশা করি। আমরা মনে করি, ভর্তি জালিয়াতি ও প্রশ্ন ফাঁস বাণিজ্যের অভিযোগ যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে উঠেছে তার সবগুলো তদন্ত করা প্রয়োজন