ফিরে দেখা কাশ্মীর ২০১৯

0

লোকসমাজ ডেস্ক ॥ অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে বছরজুড়েই উত্তপ্ত ছিল দক্ষিণ এশিয়ার চির বৈরী দুই প্রতিবেশী ভারত-পাকিস্তান। ১৪ ফেব্রুয়ারিতে পুলওয়ামায় স্থানীয় এক যুবক ভারতীয় আধাসামরিক বাহিনীর ওপর বোমা হামলা চালায়। এতে ৪০ জওয়ান নিহত হন। প্রতিশোধে মরিয়া হয়ে ওঠে ভারত। দেশটির হিন্দুত্ববাদী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ৫ আগস্ট জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা তুলে নেয়া হয়। সেখানে পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক সেনা সদস্য।
স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সহিংসতায় ২০১৯ সালে ৮০ জন বেসামরিক কাশ্মীরি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৯ জনই নিহত হন ৫ আগস্টের পরবর্তী ঘটনায়। এদিকে ভারতীয় সরকার চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেছে আগস্ট মাসের পর কাশ্মীরে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে জম্মু-কাশ্মীর কোয়ালিশন অফ সিভিল সোসাইটির (জেকেসিসিএস) পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগস্টের পর ৬৯ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩ জনই বেসামরিক।
এছাড়া নিহতদের মধ্যে ২০জন বিদ্রোহী ও ১৬ জন নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মী রয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শুধু অক্টোবরে ১৭ বেসামরিক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরে জেকেসিসিএসের প্রকাশিত মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বার্ষিক পর্যালোচনাতে উল্লেখ করা হয়েছে এ বছরে ৮০ জন বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১২ জন নারীও রয়েছেন। এছাড়া বছরটিতে ১৫৯ জন বিদ্রোহী নিহত হওয়ার পাশাপাশি ১২৯ জন ভারতীয় নিরাপত্তা কর্মীও মারা গিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক ১৯ জন নিহত হয়েছেন, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে গোলাগুলিতে ১৭ জন ও অজ্ঞাত বন্দুকধারীর গুলিতে ২৮জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। এতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বিভিন্ন সংঘর্ষে ৮টি শিশুর প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া বিচারবহির্ভূত আটক, নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে শিশুরা। এতে আরও বলা হয়েছে, শিশুরা সামরিক বাহিনীর হাতে আটক ও প্রতিহিংসার শিকার হয়েছে। ২০১৯ সালে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে ৮৭টি বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটেছে। আগস্টে বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর জম্মু ও কাশ্মীরের রাজ্য তথ্য কমিশন, জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্য মানবাধিকার কমিশন এবং ভোক্তা কমিশনের মতো রাষ্ট্র পরিচালিত বিভিন্ন নজরদারিও বাতিল করা হয়েছে। এ বছরটিতে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সংবাদকর্মীরা লাঞ্ছিত ও প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন।
সূত্র: ইয়েনি শাফাক।