নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে ইরানের জ্বালানি তেল রফতানিতে

0

নভেম্বরের শুরুতে ইরানের ওপর নতুন করে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়েছে দেশটির অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি খাতে। নভেম্বরে এশিয়ার দেশগুলোয় ইরানের প্রধান রফতানি পণ্য জ্বালানি তেলের চালান আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৩ শতাংশ কমে পাঁচ বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও এশিয়ার কয়েকটি দেশ ইরান থেকে জ্বালানি তেল আমদানিতে বিশেষ ছাড় পাওয়ার পরও এ পরিস্থিতি তেহরানের অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্স ও অয়েলপ্রাইসডটকম।
ইরান থেকে রফতানি হওয়া অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের প্রধান ক্রেতা চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত। নতুন করে নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের পর ইরান থেকে এশিয়ার এ চার দেশে জ্বালানি পণ্যটির মাসভিত্তিক রফতানির পূর্ণাঙ্গ তথ্য যুক্ত করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রয়টার্স। ইরানের সরকারি সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালের নভেম্বরে ইরান থেকে এ চার দেশে প্রতিদিন গড়ে ৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮০০ ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১২ দশমিক ৭ শতাংশ কম। গত পাঁচ বছরের মধ্যে নভেম্বরে এটাই ইরান থেকে এশিয়ার দেশগুলোয় জ্বালানি তেল রফতানির সর্বনিম্ন রেকর্ড।
২০১৮ সালের অক্টোবরে ইরান থেকে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারতে প্রতিদিন গড়ে ৭ লাখ ৬২ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল রফতানি হয়েছিল। সেই হিসাবে অক্টোবরের তুলনায় গত নভেম্বরে এ চার দেশে ইরান থেকে জ্বালানি পণ্যটির রফতানি কমেছে দৈনিক ৯৮ হাজার ব্যারেল।
নিষেধাজ্ঞা কার্যকরের আগে থেকেই ইরান থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি কমিয়ে দিতে এশিয়ার দেশগুলোর ওপর চাপ তৈরি করেছিল ওয়াশিংটন। এর জের ধরে আগস্টের পর থেকেই ইরানি জ্বালানি তেল আমদানি কমিয়ে দেয় জাপান। এক পর্যায়ে ইরান থেকে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি স্থগিত করে দক্ষিণ কোরিয়া। তবে ভারত দেশটি থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি অব্যাহত রেখেছিল।
নভেম্বরের শুরুতে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হলে ইরান থেকে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানিতে আটটি দেশকে বিশেষ ছাড় দেয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। এ তালিকায় চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া ও ভারত রয়েছে। ছাড় পাওয়ার পরও এ চার দেশে জ্বালানি পণ্যটির রফতানি বাড়াতে পারেনি তেহরান। অক্টোবরের তুলনায় নভেম্বরে এসব দেশে ইরান থেকে জ্বালানি তেল রফতানি আরো কমেছে।
এ বিষয়ে রয়টার্সের বিশ্লেষক ওয়াং তাও বলেন, ইরানি জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা এশিয়ার দেশগুলো। ছাড়ের আওতায় থাকলেও এসব দেশ ইরান থেকে জ্বালানি পণ্যটি কিনছে না। এটি ইরানি অর্থনীতির জন্য বড় একটি চ্যালেঞ্জ। এ পরিস্থিতি ইরানের ক্রমবিকাশমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি শ্লথ করতে পারে।