যশোরে সাদি হত্যায় অভিযুক্তরা আটক হয়নি, থানায় মায়ের এজাহার

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরের রেলবাজারের ইজারাদার মীর সাদি হত্যায় অভিযুক্ত সন্ত্রাসী মেহেদী ও ট্যাটু সুমনকে এখনো পর্যন্ত আটক করতে পারেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। এমনকী তাদের অবস্থান নিশ্চিত পারেনি। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, অভিযুক্ত দুই সন্ত্রাসী মোবাইল ফোন ব্যবহার না করায় তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে তাদের অবস্থান শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে তারা পালিয়ে কোথায় গিয়েছে তা নিশ্চিত হতে এবং আটকের জন্য নানা তথ্যের সাহায্যে কাজ করা হচ্ছে।

গতকাল বুধবার বিকেলে নিহত মীর সাদির মা কোতয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে সন্ত্রাসী মেহেদী ও ট্যাটু সুমনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করেছেন। মেহেদী শংকরপুর আশ্রম রোডস্থ মহিলা মাদ্রাসার পেছনের আলী মিয়ার ছেলে এবং ট্যাটু সুমন বেজপাড়া টিবি ক্লিনিক এলাকার মৃত শহিদুল ইসলাম বাবু ওরফে কানা বাবুর ছেলে।

গত সোমবার গভীর রাতে সন্ত্রাসী মেহেদী ও ট্যাটু সুমন মুজিব সড়ক রেলগেট মসজিদ পাড়ার নিজ বাড়ির ভেতর ঢুকে মীর সাদিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে। এ সময় সন্ত্রাসীরা পিস্তল দিয়ে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে। ঘটনার পরপরই সন্ত্রাসীরা সেখান থেকে দৌড়ে পালিয়ে যায়। যা সেখানকার একটি স্থাপনার সিসি ক্যামেরায় ধারণকৃত ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে।

মীর সাদি এক সময় ষষ্ঠীতলা এলাকার আলোচিত ম্যানসেলের সাথে থাকতেন। ম্যানসেলের সাথে থাকার কারণে তিনি রেলবাজারের খাজনা আদায়ের ইজারা পেয়েছিলেন। ঈদের নামাজ আদায়ের জন্য কেন্দ্রীয় ঈদগাহের সামিয়ানা টাঙানোসহ প্যান্ডেল তৈরির কাজও পেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এক পর্যায়ে বাজারের খাজনা আদায় ও বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় ম্যানসেলের কাছ থেকে সরে আসেন মীর সাদি।

কিন্তু তিনি ম্যানসেলের সাথে থাকার সময় তারই সন্ত্রাসী বাহিনীকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানায়, সন্ত্রাসীদের সাথে অর্থ সংক্রান্ত কোনো দ্বন্দ্ব ছিলো মীর সাদির। এ কারণে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ওৎ পেতে থেকে সন্ত্রাসীরা মীর সাদিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ট্যাটু সুমন ও মেহেদী ছাড়াও সন্ত্রাসী আসিফ, ছোট ফয়সাল, বড় ফয়সাল, বিদ্যুৎ, কোরবানসহ আরো কয়েকজন দীর্ঘদিন ধরে রেলবাজার এলাকায় ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছে। পুলিশ অধ্যাবধি ওই সন্ত্রাসীদের ধরতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় তারা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যার ফলশ্রুতিতে তাদের হাতে প্রাণ হারালেন ইজারাদার মীর সাদি।

কোতয়ালি থানা পুলিশের ইনসপেক্টর (তদন্ত) কাজী বাবুল হোসেন জানান, মীর সাদি হত্যার ঘটনায় নিহতের মা দুই জনকে অভিযুক্ত করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে। তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত সন্ত্রাসী মেহেদী ও ট্যাটু সুমনকে আটকের জন্য তারা কাজ করে যাচ্ছেন।

ডিবি পুলিশের ওসি মো. মঞ্জুরুল হক ভূঞা জানান, তারাও অভিযুক্ত দুই সন্ত্রাসীকে ধরতে তৎপর রয়েছেন। তিনি বলেন, অভিযুক্তরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন না বলে জানতে পেরেছেন। এ কারণে তাদের অবস্থান শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে ডিবি পুলিশ তাদের আটকের জন্য বিভিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।