‘টিএসআই’ রফিক ও এক মিল মালিকের ফাঁদে সাবেক প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর সদর পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক টিএসআই (পদোন্নতি পেয়ে বর্তমানে ট্রাফিক ইনসপেক্টর) রফিকুল ইসলাম রফিক ও তার সহযোগী রাইচমিল মালিক আবু ফারুকের ফাঁদে পড়ে বিপাকে আছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত পরিদর্শক (ইনসপেক্টর) মাহাবুবর রহমান। এক বছর আগে তিনি সাতক্ষীরায় তার ১ একর ২৭ শতক জমি বিক্রির জন্য অগ্রিম ২৫ লাখ টাকা গ্রহণ করে আবু ফারুকের সাথে ৪৫ লাখ টাকায় লিখিত বায়না করেছিলেন। কিন্তু তাকে বাকি ২০ লাখ টাকা দেওয়া হচ্ছে না। আবার ওই জমি রেজিস্ট্রি করেও নেওয়া হচ্ছে না। জমি রেজিস্ট্রি করে নিয়ে বাকি ২০ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য আবু ফারুককে তাগাদা দিলে অবসরপ্রাপ্ত সরকারি ওই কর্মকর্তাকে সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলামকে দিয়ে হয়রানি করানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।
যশোর শহরের বেজপাড়া চিরুনিকলের পেছন এলাকার বাসিন্দা প্রানিসম্পদ অধিদফতরের অবসরপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর মাহাবুবর রহমান জানান, সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের বলাডাঙ্গা মৌজায় তার ১ একর ২৭ শতক জমি রয়েছে। ওই জমি তিনি বিক্রি করতে চাইলে দালালের মাধ্যমে তার কাছে আসেন সদর পুুলিশ ফাঁড়ির সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলাম এবং রামনগর এলাকার শেখ আবু বক্কার সিদ্দিকীর ছেলে আবু ফারুক। রামনগর রেললাইন সংলগ্ন স্থানে আবু ফারুকের একটি রাইচমিল রয়েছে। সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলাম রাইসমিল মালিক আবু ফারুকের ঘনিষ্ঠজন। চুক্তি হয় তিনি ৪৫ লাখ টাকায় জমি বিক্রি করবেন। এ জন্য একটি বায়নানামা তৈরি করা হয়। বায়নানামায় আবু ফারুককে ক্রেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয় সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলামের পরামর্শ অনুযায়ী। ওই সময় মাহাবুবর রহমানকে নগদ ২৫ লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। যা বায়নানামায় উল্লেখ করা হয়েছে। মৌখিকভাবে চুক্তি হয়, বায়নানামার এক সপ্তাহের মধ্যে বাকি ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি করে নেবেন আবু ফারুক। কিন্তু প্রায় ১ বছর পার হয়ে গেলেও বাকি ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করে জমি রেজিস্ট্রি করে নেননি ফারুক। এ জন্য বেশ কয়েকবার আবু ফারুক এবং সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করেছেন মাহাবুবর রহমান। কিন্তু প্রতিবারই তারা তার সাথে প্রতারণামূলক কথাবার্তা বলেন। ফলে তিনি পড়েছেন বিপাকে। ওই জমি তিনি অন্যত্র বিক্রিও করতে পারছেন না।
তিনি অভিযোগ করেন, ৪৫ লাখ টাকায় বিক্রির কথা বললেও সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলামের পরামর্শে বায়নানামায় ৮৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা জমির বিক্রয় মূল্য এবং পরিশোধ ৬৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা লিখিয়ে নিয়েছেন আবু ফারুক। বিষয়টি তার কাছে সন্দেহজনক মনে হয়েছে।
এদিকে যোগাযোগ করা হলে রাইসমিল মালিক আবু ফারুক দাবি করেন, তিনি মিল থেকে চাল বিক্রি করেন। সাবেক টিএসআই রফিকুল ইসলামের শ্যালক মনুর যশোর শহরের পুনাক মার্কেটে চাল বিক্রির দোকান রয়েছে। ওই দোকানে চাল বিক্রি করতে গিয়ে রফিকুল ইসলামের সাথে তার পরিচয় হয়। তিনি মনুর কাছে অনেক টাকা পেতেন। এখনো কিছু টাকা পাওনা রয়েছে। তিনি বলেন, ঝাউডাঙ্গার বলাডাঙ্গা মৌজায় জমির সরকারি মূল্য বেশি । এ কারণে ওই মূল্য অনুযায়ী বায়নানামায় ১ একর ২৭ শতক জমির মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে ৮৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা। জমি তিনি নিজেই কিনেছেন। কিন্তু নানা কারণে এতোদিন বাকি ২০ লাখ টাকা পরিশোধ করতে পারেননি। মাঝে একবার ২০ লাখ টাকা সংগ্রহ করে জমি রেজিস্ট্রি করতে চাইলে মাহাবুবর রহমান আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। এ জন্যই তো যতো ঝামেলার সৃষ্টি হয়।