১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়নি ফলন ভালো হলেও বোরো উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না কেশবপুরে

0

জয়দেব চক্রবর্ত্তী, কেশবপুর (যশোর)॥ কেশবপুর উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বোরো ধানের ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষক। তবে ঘেরের পানির কারণে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ না হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১০ হাজার ৭২৫ মেট্রিকটন ধান কম উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। যার বাজার মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
সারা দেশের মধ্যে ধান-চালসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য উৎপাদনের উদ্বৃত্ত উপজেলা হিসেবে কেশবপুরের খ্যাতি দীর্ঘদিনের। ধান খেতের মাঠগুলো এখন সোনালী রঙের আভায় এক অপরূপ শোভা ছড়াচ্ছে। বোরো ধানের সোনালী শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। সেচ, আগাছা পরিষ্কারসহ সব কাজ সম্পন্ন করে এখন ধান ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর এ উপজেলার হাজারো কৃষক। পুরো উপজেলায় এবার হাইব্রিড ছাড়াও উফশী ব্রি-ধান- ২৮, ব্রি-ধান- ৫০, ব্রি-ধান- ৬৩, ব্রি-ধান- ৭৪, ব্রি-ধান- ৮৮ ও ব্রি-ধান- ১০০ জাতের ধানের আবাদ হয়েছে সবচেয়ে বেশি।
কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৫ শ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছিল ১ লাখ ১ হাজার ৩০৭ মেট্রিকটন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলেও ঘেরের পানির কারণে বিলের অতিরিক্ত পানি নিষ্কাশন সম্ভব না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর কম জমিতে ধানের চাষ হয়। এরমধ্যে হাইব্রিড- ৪ হাজার ১৭০ হেক্টর ও উফশী- ৮ হাজার ৯০০ হেক্টর জমি। ধান আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ায় এবার ১০ হাজার ৭২৫ মেট্রিকটন ধান কম উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য ২ কোটি ৭৮ লাখ ৮৫ হাজার টাকা। ঘেরের পানি নিষ্কাশন সম্ভব না হওয়ায় উপজেলার বাগডাঙ্গা, পাঁজিয়া, কালিচরণপুর, বিলখুকশিয়া, কাটাখালি, মনোহরনগর, নারায়নপুর ও হদ বিল এলাকার হাজারো কৃষক এ বছর বোরো ধানের আবাদ করতে পারেন নি।
ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম, মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, তাদের গরালিয়া বিলের জমি ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে। ঘের মালিক মাছ চাষের জন্যে প্রতি শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করেন। আবার ইরি- বোরো মৌসুমে স্যালো মেশিন দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করে কৃষকরা ধান আবাদ করে। পানির কারণে বিলের ১ হাজার বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়নি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মাহমুদা আক্তার বলেন, পাউবো নদী খাল খনন করলেও শ্রীনদীর নাব্য না থাকায় তা আবারও পলিতে ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে ঘেরের পানি নিষ্কাশন সম্ভব না হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার ৪৩০ হেক্টর কম জমিতে ধানের আবাদ হয়। কৃষকের চাহিদামত সার, বীজের কোনো ঘাটতি ছিল না, আবহাওয়াও ছিল অনুকূলে। ইতোমধ্যে উপজেলার অনেক এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে।