বাঘারপাড়ায় সাবমারসিবল পাম্প বসাতে গোবর-পানি ব্যবহারের অভিযোগ

0

বাঘারপাড়া (যশোর) সংবাদদাতা : বাঘারপাড়ায় সাবমারসিবল পানির পাম্প বসাতে গোবর পানি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। মন্ত্রণালয়ের বেন্টোনাইট-ক্লে (এক ধরনের রাসায়নিক মিশ্রণ) ব্যবহারের নির্দেশনা থাকলেও এসব মানা হয়না এ উপজেলায়। উপজেলা জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উদাসীনতায় গোবর-পানি দিয়েই উপজেলায় ২৩৪ টি সাবমারসিবল পানির পাম্প বসানোর কাজ কাজ শেষ করেছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এমনকি বেন্টোনাইট-ক্লে উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসে আনাই হয় না।
উপজেলা প্রকৌশলী অফিস সুত্রে জানা যায়, সমগ্র দেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় ২০২৩-২০২৪ অর্থ বছরে এ উপজেলায় ২৩৪ টি সাবমারসিবল পানির পাম্প (নলকূপ) বরাদ্দ দেয় অধিদপ্তর। প্রতি নলকূপ স্থাপনে গ্রাহককে ১০ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে চালান জমা দিতে হয়। এরপর সরকার ঠিকাদারের মাধ্যমে ছয়শত ফুট পাইপ, ১ হর্স পাওয়ার পাম্প, ১০০০লিটারের ১টি ট্যাংকি (পানি ধরে রাখার জার), ২০ কেজি বেন্টোনাইট -ক্লে ও ৫ ফিট উচ্চতার ১০ ইঞ্চি গাথুনি স্টান্ড সরবরাহ করে। এতে প্রতিটি নলকূপ স্থাপনে সরকারের ব্যয় হচ্ছে ১ লাখ টাকা।
অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী দরপত্র চুক্তি মোতাবেক নলকূপ খননের সময় অবশ্যই বোরিং ফ্লুইড হিসেবে বেন্টোনাইট -ক্লে মিশ্রিত পানি ব্যবহার করতে হবে। কোনক্রমেই বোরিং ফ্লুইড হিসেবে গোবর মিশ্রিত পানি ব্যবহার করা যাবে না। নলকূপ স্থাপনের সময় মনিটরিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা ও মেকানিকরা নলকূপ খননের সময় রোরিং ফ্লুইড হিসেবে বেন্টোনাইট-ক্লে মিশ্রিত পানি ব্যবহার নিশ্চিত করবেন। গোবর মিশ্রিত পানি ব্যবহার করলে কাজ বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। একই সাথে বলা হয়েছে নলকূপ স্থাপনের সময় গোবর পানি ব্যবহারের কারণে ভূগর্ভের পানি দূষণে স্থায়ী সমস্যা হতে পারে যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
আব্দুল ওহাব এন্টারপ্রাইজ ঢাকা ও মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজ যশোর নামের দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নলকূপ স্থাপনের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। অধিদপ্তরের আদেশ উপেক্ষা করে এ সব ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব শ্রমিক দিয়ে নলকূপ বসানোর সময় রোরিং ফ্লুইড হিসেবে গোবর মিশিয়ে নলকূপ বসানোর কাজ শেষ করছেন।
চাড়াভিটা এলাকার অরুন দে জানান, আমি উপজেলা জনস্বাস্থ্য অফিসের মাধ্যমে একটা সরকারি নলকূপ পাই। নলকূপ বসানোর সময় ঠিকাদারের লোকজন গোবর ব্যবহার করতে বাধ্য করছেন। গোবর ছাড়া নলকূপ বসাতে রাজি হচ্ছেন না তারা।
আব্দুল ওহাব এন্টারপ্রাইজ মালিক শাহাদাত হোসেন ও মেসার্স সুমন এন্টারপ্রাইজ মালিক আলমগীর কবির সুমন অভিযোগের বিষয় অস্বীকার করে জানান, বেন্টোনাইট -ক্লে ব্যবহার করে নলকূপ বোরিং করা হচ্ছে। গোবর ব্যবহার হচ্ছে না ।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী আবু হানিফ জানান,ঠিকাদারকে বেন্টোনাইট-ক্লে’র দাম বাদ রেখে বিল পরিশোধ করা হয়। অধিদপ্তরের চিঠির নির্দেশনা অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নলকূপ বোরিংয়ে গোবর ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। বেন্টোনাইট-ক্লে ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।