বিএফইউজে’র মনিটরিং কমিটির রিপোর্ট ১১ মাসে ২৯৬ সাংবাদিক খুনসহ নিগ্রহের শিকার

0

 

চলতি বছর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ১১ মাসে ২৯৬ জন সাংবাদিক খুন, হামলা, মামলা, গ্রেফতার, নির্যাতন, হুমকিসহ নানাভাবে আক্রান্ত ও নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে জানুয়ারি, জুন, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবরে একজন করে মোট ৪ জন সাংবাদিক খুন হয়েছেন। রহস্যাবৃত বা অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আরও ৪ জনের। রেকর্ড সংখ্যক ৪৮ জন সাংবাদিক নিগৃহীত হয়েছেন জুলাই মাসে। আগস্ট মাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৩ জন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। এর পরই মার্চ মাসে ৪০ জন সাংবাদিক নিপীড়নের মুখে পড়েন।
অন্যান্য মাসের মধ্যে জানুয়ারিতে ১৮, ফেব্রুয়ারিতে ২৫, এপ্রিলে ২৪, মে মাসে ১৪, জুন মাসে ২৯, সেপ্টেম্বরে ১৫, অক্টোবরে ৩৪ এবং সর্বশেষ নভেম্বরে সবচেয়ে কম সংখ্যক ৬ জন সাংবাদিক নির্যাতিত ও নিগৃহীত হয়েছেন। নিগ্রহ ও হয়রানির শিকার সাংবাদিকদের তালিকায় শীর্ষস্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকসহ ডিজিটাল আইনের মামলায় আসামি ও গ্রেফতার হয়েছেন এমন অনেকে রয়েছেন। বিভিন্ন মেয়াদে জেল খাটতে হয়েছে ৮ জনকে। এখনও জেলে বন্দি রয়েছেন দৈনিক ইনকিলাবের কাপাসিয়া প্রতিনিধি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন গাজীপুরের নেতা অধ্যাপক শামসুল হুদা লিটন।
দেশের প্রথম সারির সংবাদপত্র ও শীর্ষস্থানীয় অনলাইন নিউজ পোর্টালে নজর রেখে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)’র মনিটরিং কমিটি সাংবাদিক নিপীড়নের এ চিত্র পেয়েছে। বিএফইউজে’র সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকনের তত্ত্বাধানে এ মনিটরিং কমিটিতে কাজ করছেন সহসভাপতি রাশিদুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক মাহমুদ হাসান ও দফতর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন। সংবাদমাধ্যমে খবরের মর্যাদা পায়নি এমন সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনা ঘটে থাকলে তা এ পরিসংখ্যানের বাইরে।
চলতি ২০২৩ সালের প্রথম ৬ মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত) নির্যাতিত সাংবাদিকের মোট সংখ্যা ছিল ১৫০ জন। খুন হন দুই সাংবাদিক। এর পর জুলাই মাসে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে হামলা, নির্যাতন ও বাধার মুখে পড়েছেন রেকর্ড সংখ্যক ৩৫ জন সাংবাদিক। একই মাসে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ৯ জনসহ ১৩ সাংবাদিক মামলার আসামি হন। গ্রেফতার হয়ে জেলে যান একজন। জুলাই মাসে বছরের সর্বোচ্চ সংখ্যক মোট ৪৮ জন সাংবাদিক নানাভাবে নিগ্রহের শিকার হন।
আগস্ট মাসে ৪৩ জন সাংবাদিক হামলা, মামলা, গ্রেফতার, সাজা ও পরোয়ানাসহ নানাভাবে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন। এর মধ্যে ২২ জন শারীরিকভাবে আক্রান্ত হয়েছেন। তন্মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন ৭ জন। অন্যরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে দৈহিক লাঞ্ছনা ও হেনস্থার মুখে পড়েন। এ মাসে এক সাংবাদিক গ্রেফতার, ২ সম্পাদকের সাজা, ২ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং আরও ১৩ জন সাংবাদিক মামলায় আসামি হয়েছেন। এক ক্যাম্পাস সাংবাদিক বিশ^বিদ্যালয় থেকে বহিষ্কৃত হয়েছেন। হয়রানিমূলক হিসেব তলব করা হয়েছে এক গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বের। এর বাইরে মামলার হুমকি দিয়ে ১৩ জনকে আইনী নোটিশ দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ নভেম্বর মাসে আলোচিত ঘটনার মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রামে মনোনয়ন পত্র দাখিলের সময় আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর হাতে সাংবাদিক লাঞ্ছনা, মাগুরায় ৫ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নাশকতার মামলা এবং গাজীপুরে সাংবাদিক লিটনকে গ্রেফতার করে নাশকতার মামলায় জেলে পাঠানো। বিজ্ঞপ্তি।