আ’লীগ নেতা রিপন হত্যার ঘটনায় খুনিরা অধরা অভিযোগের তীর দুলাল গ্রুপের দিকে

0

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ ।। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার মীনগ্রামে আওয়ামী লীগ নেতা ও ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান রিপন হত্যার ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতারি করতে পারেনি। মঙ্গলবার রাত ৮টা পর্যন্ত কোন মামলাও হয়নি। এ তথ্য নিশ্চত করেন শৈলকুপা থানার ওসি ঠাকুর দাস মন্ডল। তিনি জানান এজাহার না দিলে আসামি শনাক্ত করা যাচ্ছে না। এদিকে রিপন হত্যা নিয়ে শৈলকুপা আওয়ামী লীগে নতুন করে দ্বন্দ্ব শুরু হয়েছে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও শৈলকুপার সংসদ সদস্য আব্দুল হাই পক্ষ এই হত্যার পেছনে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম দুলাল পক্ষকে দায়ী করছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে শৈলকুপায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। এ দিন বিকালে উপজেলা, পৌর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগী সংগঠন এই বিক্ষোভ কর্মসুচির আয়োজন করে। মিছিলটি শৈলকুপা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পৌর বাজারের চৌরাস্তা মোড়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মতিয়ার রহমান বিশ্বাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম. আব্দুল হাকিম আহমেদের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য আব্দুল হাই। তিনি এই নৃশংস হত্যাকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, ‘নিহত রিপন আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তার পিতা আবুল কালাম আজাদ দীর্ঘ ৪২ বছর ধরে আবাইপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগকে আগলে রেখেছেন। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে অনুপ্রবেশকারীরা কাপুরুষের মতো রাতের আঁধারে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। যারা এ হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত তারা পুরুষত্বহীন। যদি তারা পুরুষ হতো তাহলে তারা রাতের আঁধারে কাপুরুষের মতো হামলা করতো না’। সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে শৈলকুপা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার তানভীর হাসান জিসান, উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জাহিদুন্নবী কালু, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম হোসেন মোল্লা, সাবেক সভাপতি স.ম রানাউজ্জামান বাদশা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান নওরোজ, মনোহরপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, কাঁচেরকোল ইউপি চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন জোয়ার্দার মামুন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজিব হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মনিরুজ্জামান মিশন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ বাবু, সাবেক সভাপতি দিনার বিশ্বাস ও সাধারণ সম্পাদক শাওন শিকদার। এদিকে শৈলকুপায় তুচ্ছ দ্বন্দ্বের জেরে একের পর এক হত্যাকান্ড ঘটছে। ভাঙচুর করা হচ্ছে বাড়িঘর। লুটপাট করা হচ্ছে সম্পদ। বাড়ি ছাড়া হচ্ছে নারী, শিশু ও শিক্ষার্থীরা। এ সব মামলায় গণহারে আসামি করার কারণে মানুষের মাঝে বাড়ছে দুর্ভোগ। এই অবস্থায় আবাইপুর ইউনিয়নের মীনগ্রামের ইউপি সদস্য রিপন খুনের ঘটনায় গণ আসামি হওয়ার আতংকে রয়েছে গ্রামবাসী। সরজমিন দেখা গেছে, হত্যা ঘটনার পর ১৭ টি বাড়ি-ঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ভয়ে অন্তত ৫০ পরিবার বাড়িছাড়া হয়েছেন। শৈলকুপা পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আজম বলেন, গত দশ বছরে শৈলকুপায় যে খুনের ঘটনা ঘটেছে তাতে হাজার হাজার মানুষ আসামি হয়েছেন।
শৈলকুপা থানার ওসি ঠাকুর দাস মন্ডল মঙ্গলবার রাতে জানান, এ ঘটনায় রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। ফলে আসামি শনাক্ত করতে না পারার কারণে কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তিনি বলেন, মীনগ্রামে পুলিশ টহল জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য রোববার মধ্য রাতে আবাইপুরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান রিপনকে হত্যা করা হয়। এ হত্যাকান্ডের পর শৈলকুপায় টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে।