যশোরে যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে অসহায় নারীর জমি দখলের অভিযোগ

0

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যশোর শহরতলী বিরামপুরের গৃহবধূ নাজমুন নাহার মুক্তি সব কাগজপত্র থাকার পরও তার সম্পত্তি ভোগ দখল করতে পারছেন না। স্বামী হারানো এই গৃহবধূর একখন্ড জমি ক্ষমতার দাপট ও পেশি শক্তির বলে জোরকরে দখল করে রেখেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও যুবলীগ নেতা হাদিউজ্জামান চিমা। ওই জমির প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নাজমুন নাহার মুক্তির পক্ষে। তারপরও ভূমিদস্যু হাদিউজ্জামান চিমা দখল করা জমিতে আবাসিক ভবন নির্মাণ করছেন।
নাজমুন নাহার মুক্তি জানান, তার স্বামী ফেরদৌস হোসেন ২০০৫ সালে বিরামপুর মৌজায় ৫ দশমিক ৩৭ শতক এক খন্ড জমি ক্রয় করেন তার নামে। এরপর ওই জমিতে ৬টি দোকান এবং দুই কক্ষের ছোট একটি আবাসিক ভবন নির্মাণ করে ভাড়া দেন এবং নিয়মিত ভাড়া উত্তোলন করে আসছেন। যুবলীগ নেতা হাদিউজ্জামান চিমার নজর পড়ে ওই জমির ওপর। ২০১৩ সালে হাদিউজ্জামান চিমা ওই জমি জোরকরে দখল করে নেন। জমির ওপর নির্মিত স্থাপনার ভাড়া আদায় করেন। বর্তমানে জমিতে তিনি একটি আবাসিক ভবন নির্মাণ করছেন।
গৃহবধূ নাজমুন নাহার মুক্তি আরও জানান, দখল করে নেয়ার পরও তিনি নিয়মিতভাবে ওই জমির খাজনা পরিশোধ করে আসছেন। বর্তমানে অনলাইনে তিনি খাজনা পরিশোধ করছেন। জমির দলিল থেকে শুরু করে খাজনা, দাখিলা, পর্চা সবকিছু তার অনুকূলে। দখলদার ও ভূমিদস্যু হাদিউজ্জামান চিমার হাত থেকে জমি ফিরে পেতে প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছেন।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক, স্থানীয় একাধিক বাসিন্দা এমনকি সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা জানান, হাদিউজ্জামান চিমা ওই গৃহবধূর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে জমিটি রাজনৈতিক ক্ষমতাবলে দখল করে রেখেছেন। প্রকৃতপক্ষে ওই গৃহবধূই হলেন জমিটির মালিক। জমির সকল কাগজপত্র গৃহবধূর পক্ষে থাকার পরও হাদিউজ্জামান চিমা একজন ভূমিদস্যু হওয়ায় তার সাথে পেরে উঠছেন না। এলাকাবাসীও অসহায় গৃহবধূ নাজমুন নাহার মুক্তির পক্ষে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপশহর ইউনিয়ন পরিষদের একজন জনপ্রতিনিধি বলেন, প্রয়াত ফেরদৌস হোসেনের স্ত্রী ওই জমির নির্ভেজাল মালিক । কিন্তু হাদিউজ্জামান চিমা গায়ের জোরে ওই জমিটি দখল করে রেখেছে। এটি শতভাগ সত্যি। যে ব্যক্তি ওই জমিটি দখল করে রেখেছে তার সাথে আমাদের এলাকার কোন মানুষের সম্পর্ক নেই। আমরা এলাকাবাসী অনেকবার বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেও সমাধান করতে পারিনি। যে কারণে আমি ওই অসহায় পরিবারকে বলে দিয়েছি তোমরা আইন -আদালতের আশ্রয় গ্রহণ কর। এলাকাবাসী সত্যের পক্ষে।
তিনি আরও বলেন, দখলদার কিসের বুনিয়াদে জমি দখল করে আছে? সরকার ঘোষণা দিয়েছে দলিল যার জমি তার। কিন্তু ওই জমির দলিল তো ফেরদৌস হোসেনের স্ত্রীর নামে। আমি মনেপ্রাণে চাই দখলদারের হাত থেকে জমিটি উদ্ধার হয়ে প্রকৃত মালিকের হাতে যাক। আমরা এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে চাই। কোন দখলদারের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হোক তা চাই না। কারণ কোন দখলদারকে আমরা সমর্থন করি না।
এ বিষয় হাদিউজ্জামান চিমার ফোনে একাধিকার কল দেয়ার পর কল তিনি রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে ফেরদৌস হোসেন নৃশংসভাবে খুন হন।