অভয়নগরে সাড়ে ৭ হাজার হেক্টরে আমন চাষ

0

নজরুল ইসলাম মল্লিক, অভয়নগর (যশোর)॥ অভয়নগরে যেদিকে চোখ যায় সেদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। মাঠে আমন ধানের ক্ষেত ভরে গেছে সবুজে। এ বছর বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর আমন চাষে ৭ হাজার ৪শ ৯০ হেক্টর জমি লক্ষ্যমাত্রা ছিল। চাষ হয়েছে ৭ হাজার ৫শ ৫০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬০ হেক্টর বেশি জমিতে আমনের চাষাবাদ বেড়েছে। ইতোমধ্যে আগাম জাতের আমন ধান ব্রি-৭৫, ব্রি-৮৭, ব্রি-৩২, ব্রি-৪৯সহ বেশ কয়েকটি আগাম জাতের আমন ধান চাষ হয়েছে। এছাড়াও ব্রি-১১, গুটি স্বর্ণা, ব্রি-৩০, ব্রি-৩৯ ধানের চাষ করেছেন কৃষকরা। ধানের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগবালাই হচ্ছে মাজরা পোকা ও বাদামী ফড়িং এবং গোড়াপচা রোগ। ধানে পোকা মাকড়ের আক্রমণও দেখা গেছে বেশ। মাজরা পোকা, পামরী পোকা, বাদামী ফড়িং ও গোড়াপচা রোগসহ নানাবিধ রোগ বালাই আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এ রোগগুলো এবার কম হওয়ায় বেশ ভাল ফসল আশা করা হচ্ছে। প্রথমদিকে বৃষ্টিপাত না হলেও মাঝে মাঝে বৃষ্টি হয়েছিল। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় অনেককে সেচ দিতে দেখা গেছে। উপজেলার ৬০০ জন কৃষককে ৫ কেজি করে ব্রি-৭৫ ও ব্রি-৮৭ ধান বীজ দেয়া হয়েছে। এবং প্রতিজনকে ১০ কেজি এমওপি, ১০ কেজি ডিএপি সার প্রদান করা হয়। এছাড়াও ২০০ জনকে হাইব্রিড ধানের বীজ দেয়া হয়েছে।
উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের একতারপুর গ্রামের শাহ আলম বলেন, মাঠ পর্যায়ে উপসহকারী কৃষি অফিসারদের ঠিকমত পরামর্শ নেয়ার জন্যে পাওয়া যায় না। কীটনাশকের দোকানদারদের পরামর্শক্রমে বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করে ফসলের রোগ বালাই দমন রাখার চেষ্টা করছি। আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। ফসলে খরচ একটু বেশিই হচ্ছে।
উপজেলার বাঘুটিয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া গ্রামের কৃষক বাবলুর রহমান বলেন, এ বছর বৃষ্টি দেরিতে ও কম হওয়ায় বীজতলা তৈরি করতে এবং ধান রোপণে দেরি হয়েছে। ঠিকমত বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিতে হয়েছে। পোকামাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়েছে। সারের দাম আগের তুলনায় বেশি। ফলে খরচ একটু বেশি হয়েছে। তারপরেও ফসল ভাল হয়েছে। তাছাড়া সরকার ধানের দাম নির্ধারণ করে দেয়ায় ভাল টাকা পাব। খরচ বাদে লাভ হবে।
এ ব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন জানান, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ হয়েছে। বিশেষ করে ভবদহ অঞ্চলের জমিগুলাতে চাষ বেড়েছে। বৃষ্টি দেরিতে হওয়ায় বীজতলা ও ধান রোপণ করতে দেরি হয়েছে। তারপরও ফসল বেশ ভাল দেখা যাচ্ছে। কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন হবে বলে আশা রাখছি।