ঝাঁপা বাঁওড়ে লবণাক্ত পানির কারণে ৭শ’ বিঘা জমিতে রোপা আমন চাষ অনিশ্চিত

0

 

ওসমান গণি, রাজগঞ্জ (যশোর)॥ যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের দু’টি ব্লকে লবণাক্ত পানির কারণে ধানের বীজতলা নষ্ট হয়েছে। আর এ কারণে চলতি মৌসুমে ৭শ বিঘা জমিতে রোপা আমনের চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এ জন্য বৃহত্তর ওই দু’টি ব্লকের আওতায় প্রায় ৫শতাধিক চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
কৃষকদের অভিযোগ, সেচ প্রকল্পে বোরিংয়ের মাধ্যমে ক্ষেতে পানি দেয়ার কথা থাকলেও সেচ কাজের সাথে সংশ্লিষ্টরা বাঁওড়ের লবণাক্ত পানি বীজতলায় দিয়েছেন। আর এ কারণে নোনা পানির প্রভাবে বীজতলা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এ অঞ্চলের শ-শ কৃষক। এদিকে জমিতে লবণাক্ত পানির প্রভাব থেকে যাওয়ায় চলতি রোপা আমন মৌসুমে ধান চাষ করা সম্ভব হবে না বলে শংকা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় কৃষকরা।
হানুয়ার গ্রামের সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নুর মোহাম্মদ নুরু জানান, সাগর হয়ে কপোতাক্ষ নদ দিয়ে ঝাঁপা বাওড়ে নোনা পানি প্রবেশ করায় কৃষকের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে ঝাঁপা বাওড়ে যে নোনা পানি ঢুকেছে এটা তার জানা ছিল না। জানলে এই ক্ষতিটা কৃষকদের হতো না।
ঝাঁপা ইউনিয়নের হানুয়ার গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক টগর হোসেন, বজলুর রহমান, শফিকুল ইসলাম, মোস্তফা ঢালি, মিজানুর রহমান, আতিয়ার রহমান, হাফিজুর রহমান ও মাহবুর রহমান জানান, এ এলাকায় সেচ প্রকল্পের দায়িত্বে থাকা নুর মোহাম্মদ নুরু সম্প্রতি ঝাঁপা বাওড় থেকে বীজতলায় নোনা পানি সেচ দেয়ায় তাদের প্রায় দেড় বিঘা জমির ধানের চারা মরে গেছে। তবে বৃহত্তর এ ব্লকে বোরিংয়ের মাধ্যমে জমিতে সেচ দেয়ার কথা ছিল বলে দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত এ কৃষকদের।
স্থানীয় সাবেক ইউপি সদস্য আজগার আলী জানান, জমিতে নোনা পানি দিয়ে সেচ দেওয়ায় বীজতলা সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বীজ ধান কিনে স্যালোমেশিনের পানি দিয়ে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হবে।
ঝাঁপা ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ভগিরাত চন্দ্র জানান, খবর পাওয়া মাত্রই তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং বীজতলা নষ্ট হওয়া কৃষকদের সাথে নোনা পানির ক্ষতির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। পাশাপাশি নতুন করে বীজতলা তৈরিসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতারও আশ্বাস দেয়া হয়েছে।
মনিরামপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা অঞ্জলী রানী জানান, গত মৌসুমে রোপা আমন চাষ হয়েছিল ২২ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে বৃহত্তর এ উপজেলায় রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৩ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে। যা গত মৌসুমের চেয়ে ৭২০ হেক্টর বেশি। এদিকে চলতি রোপা আমন মৌসুমে এ পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের চাষ হয়েছে বলে জানান এ কৃষি কর্মকর্তা।
উপজেলা বিএডিসির কার্যসহকারী লিমন হোসেন জানান, এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।