মোরেলগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দম্পতির মৃত্যু

0

 

বাগেরহাট সংবাদদাতা ॥ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বিদ্যুতায়িত হয়ে বীরেন মন্ডল (৬০) ও তার স্ত্রী রীতা রানী মন্ডলের (৫৫) মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (০৮ জুলাই) সকালে উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের পূর্বজয়পুর গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ মৃত্যুকে পল্লী বিদ্যুতের গাফিলতি হিসেবে দেখছেন স্থানীয়রা। তবে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, বৃষ্টিতে সুপারি গাছ পড়ে তার ছিড়ে যাওয়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।
নিহত বীরেন মন্ডল জয়পুর গ্রামের মৃত পূন্য চন্দ্র মন্ডলের ছেলে। রীতা রানী মন্ডল বীরেন মন্ডলের স্ত্রী। তাদের দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। স্থানীয় অনিতা হালদার বলেন, বীরেন মন্ডলের ঘরের উপর থেকে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন গেছে। সকালে গাছের ডাল পড়ে বৈদ্যুতিক তারে আগুন ধরে যায়। এক পর্যায়ে একটি তার বীরেন মন্ডলের ঘরের সামনে পড়ে। ওই তার সরাতে গিয়ে বীরেন মন্ডল বিদ্যুতায়িত হন এবং তার স্ত্রী রীতা রানী মন্ডল নিজ ঘরের মেইন সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।
নিহতের ছেলে চঞ্চল মন্ডল বলেন, আগুন ধরে একটা তার ছিঁড়ে নিচে পড়ে গেছে, তারপরও ট্রান্সফর্মার থেকে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়নি। তাহলে ট্রান্সফরমারে কাটআউট কেন লাগাবে, এটাতো মানুষের জীবন বাঁচাতে লাগানো হয়। আমার বাবা পল্লী বিদ্যুতের গাফিলতিতেই মারা গেছে।
বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহা ব্যবস্থাপক (জিএম) সুশান্ত রায় বলেন, সঞ্চালন লাইনের খুব কাছেই বীরেন মন্ডলের একটি সুপারি গাছ ছিল। গাছটি তারের উপর পড়ার ঝুঁকিতে ছিল। যার কারণে আমাদের কর্মীরা ওই গাছটি কেটে ফেলতে চেয়েছিল। কিন্তু বীরেন মন্ডল ওই গাছ কাটতে না দিয়ে রশি দিয়ে বেঁধে রাখেন। শনিবার সকালে বৃষ্টি ও বাতাসে সুপারি গাছ বাঁধা রশিটি ছিঁড়ে যায়। এতে গাছটি তারের উপর পড়ে এবং তার ছিঁড়ে মাটিতে পড়ে যায়। ওই তার ওঠাতে গিয়েই বীরেন মন্ডল বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান, আর বীরেন মন্ডলকে বাঁচাতে গিয়ে তার স্ত্রী মারা যান।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় চিতলমারি জোনাল অফিসের উপ-মহা ব্যবস্থাপক শহিদুল ইসলামকে প্রধান করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি ঘটনা করা হয়েছে। এই কমিটিকে আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিবে। তদন্ত রিপোর্ট পেলে মূল ঘটনা জানা যাবে।
মোরেলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়নি।