যশোরে ছাত্রদলের সমাবেশে:আসাদুজ্জামান রিপন ভোট ডাকাতির এক তরফা নির্বাচন হতে দেয়া হবে না

0

 

মাসুদ রানা বাবু॥ যশোরে ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর সমাবেশে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে দেশ ধ্বংস করছে। আর বিএনপির দেশ বাঁচানোর জন্যে আন্দোলন করছে। আওয়ামী লীগ দেশটাকে মগেরমুল্লুক বানিয়েছে। একদিকে সীমাহীন লুটপাট,দুর্নীতি আর অর্থ পাচারের করে দেশটাকে ধ্বংস করে দিয়েছে অন্যদিকে গুম খুন, নির্যাতন,নিপীড়নের মধ্য দিয়ে গোটা দেশ কারাগারে পরিণত করেছে। আজকে তারা রঙিন খোয়াব দেখছে আরেকটি একতরফা কিংবা ভোট ডাকাতির নির্বাচন করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্যে । কিন্তু আওয়ামী লীগের রঙিন খোয়াব কোনদিন পূরণ হবে না। আমরা শহীদ জিয়ার সৈনিক, আমরা আপোষহীণ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক, শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশের মাটিতে আর কোন নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। জুলুমবাজদের সাথে অতীতে কোন আপোষ হয়নি, আগামীতেও হবে না। জাতীয়তাবদী ছাত্রদলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার জেলা ছাত্রদল আয়োজিত ছাত্রসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে নেতা-কর্মীর ব্যাপক উপস্থিতি ছিল। বিভিন্ন এলাকা থেকে তারা ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশে যোগ দেন। সমাবেশ শুরুর বেশ আগে থেকে লালদিঘিসহ গোটা এলাকা দলীয় নেতাকর্মীদের সরব উপস্থিতির মধ্য দিয়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।
সমাবেশে ড. আসাদুজ্জামান রিপন আরও বলেন, মহান স্বাধীনতার ৫১ বছর পরে এসেও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের কথা বলতে হয়। গণতন্ত্র, মানবাধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, আইনের শাসন, অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের কথা বলতে হয়। অথচ ভোটাধিকার, মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রশ্নে মুক্তিযোদ্ধারা জীবনবাজি রেখে স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করেছিলেন। আওয়ামী লীগ মুক্তিযোদ্ধারের সেই অর্জন ধ্বংস করে দিয়েছে। আজকে দেশে আইনের শাসনের পরিবর্তে জুলুমের শাসন চলছে। জুলুমবাজ সরকারের কথায় বন্দুক ওঠানামা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আওয়ামী লীগের বিশেষ বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। মগেরমুল্লুক কিংবা জুলুমবাজ সরকারের হুকুম পালনের জন্যে তাদের দায়িত্ব দেয়া হয়নি। যারা ক্ষমতায় থেকে জনগণের ওপর জুলুম , নির্যাতন, অন্যায় অপকর্ম করছে একদিন জনগণের কাছে তাদেরকে জবাবদিহি করতে হবে। তিনি বলেন, বন্দুক কামান ব্যবহার করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা যায়, কিন্তু জনগণের মন জয় করা যায় না। জনগণ আওয়ামী লীগকে আর বিশ্বাস করে না।
তিনি সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, বাড়াবাড়ি অনেক হয়েছে, আর নয়। ক্ষমা চেয়ে জনগণের কাতারের আসুন। আপনাদের দুঃশাসনে জনগণ আজ অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। তাদের ধৈর্য্যের সীমা ছাড়িয়ে গেছে। ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, দুঃশাসন থেকে মুক্তির একটি পথ গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জুলুমবাজ সরকারের পতন নিশ্চিত করা । ধ্বংসের রানীর হাত থেকে দেশকে মুক্ত করে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠার মধ্যদিয়ে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে।
সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক নার্গিস বেগম বলেন, ছাত্রদলের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদলের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। গত এক যুগের অধিক সময় ধরে সরকারের নানা নির্যাতন,নিষ্পেষণ সহ্য করে ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মী বিএনপির সাথে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ,আইনের শাসন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। যতদিন পর্যন্ত দেশে গণতন্ত্রের সুবাতাস প্রবাহিত না হবে ততদিন তাদের এই লড়াই অব্যাহত থাকবে।  বিশেষ অতিথি জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, আজকে দেশে শিক্ষার পরিবেশ নেই। একদিকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের ক্যাডারা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রেখেছে। অন্যদিকে কয়েকগুণ শিক্ষার ব্যয় বেড়েছে।  সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন, সদস্য আব্দুস সালাম আজাদ, সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ। জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমানের সাগরের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাপ্পি ও সাংগঠনিক সম্পাদক শাহনেওয়াজ ইমরানের যৌথ পরিচালনায় সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক সোহানুর রহমান শামীম, ছাত্রদল নেতা সুমন আহমেদ,আলমগীর হোসেন লিটন,রাজিবুল হক তুর্য,আজিজুর রহমান,আশরাফুল আলম রানা, শামীম রেজা,নাইম উদ্দিন, ইমন হোসেন, নাফিজ ইকবাল ইশা,তরিকুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম,ওলিয়ার রহমান,কামরুজ্জামান প্রমুখ।