আ.লীগ আগুন সন্ত্রাস করে উল্টো বিএনপি’র ওপর দায় চাপাচ্ছে : রুহুল কবির রিজভী

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রহুল কবির রিজভী ঢাকায় এক প্রেসব্রিফিংয়ে বলেছেন, আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল যাদের একমাত্র সাধনা অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখা। ক্ষমতা লাভের আগে বা পরে কোন সময় তারা ন্যায়নীতি গ্রাহ্য করেনি। এ কারণেই গণতন্ত্রের নাম শুনলেই তারা চমকে ওঠে। যেনতেন প্রকারে ক্ষমতায় এসেই আঁটঘাট বেঁধে গণতন্ত্র, গণঅধিকার, নাগরিক স্বাধীনতা ইত্যাদি বিষয়গুলো নিশ্চিহ্ন করতে উঠেপড়ে লাগে। ১০ ডিসেম্বরের ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে পুলিশ বিভিন্নভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। বিএনপি’র জনসমাবেশে জনতার বিপুল পরিমাণ সমাগম দেখে আওয়ামী সরকার তেলেসমাতি শুরু করেছে। ঢাকা বিভাগসহ সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী চিরুনী অভিযান চালাচ্ছে। পরিকল্পিত নাশকতার ঘটনা সৃষ্টি করে বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা ও গণগ্রেফতার করতে কান্ডজ্ঞানহীন বেপরোয়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী সরকার। আগুন সন্ত্রাসের মতো অপরাধ করে উল্টো বিএনপি’র ওপর দায় চাপানোর এক নোংরা রাজনৈতিক সংস্কৃতি দীর্ঘদিন চালু করেছে আওয়ামী লীগ। ওরা আগুন ছড়ানোর গভীর চক্রান্তে মেতে উঠেছে। পুরনো হাতিয়ার শান দিয়ে নতুন করে সেটির ব্যবহার করছে। এরা আগুন সন্ত্রাসের মডেল পুনরায় ব্যবহার করছে। যার নমুনা দেখা গেছে নারায়ণগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জে। এক্ষেত্রে পুলিশ-যুবলীগ-ছাত্রলীগ হাত মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে নিবেদিতপ্রাণ হয়ে। তিনি বলেন, নয়াপল্টনে বিএনপি’র গণসমাবেশ নিয়ে অবৈধ সরকার বিচার-বিবেচনাবোধহীন চাতুরীর আশ্রয় নিয়েছে। বিএনপি’র সকল দিক বিবেচনা করে ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত করার সিদ্ধান্ত দিলেও পুলিশ শর্তসাপেক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে করার জোর জবরদস্তি করছে। এটি একটি রাজনৈতিক দলের গণতান্ত্রিক অধিকারের বিরুদ্ধে সরাসরি হস্তক্ষেপ। আওয়ামী লীগ যখন যেখানে মনে করে সেখানে অনুষ্ঠান করার অনুমতি পায়। সেখানে শ শ বাসে মানুষ আনা হয়। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল যায় সেখানে। সারা ঢাকা জুড়েই মাইকের হর্ন বসানো হয়। নগরবাসীর চলাচল স্থবির হয়ে যায়। অথচ পুলিশ টু শব্দ করে না, বরং তাদেরকে সার্বিক সহযোগিতা করে যায়। অথচ বিএনপি’র কর্মসূচি পালন করতে গেলে অসংখ্য শর্তের বৃত্তে তা আটকানোর চেষ্টা করা হয়। মিথ্যা ও দাসত্বের বাড়াবাড়ি দিয়ে কখনোই বিজয় অর্জিত হয় না। রিজভী আরো বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা এখন হুমকি দিচ্ছেন-১০ ডিসেম্বর বিএনপি সমাবেশের নামে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করলে হেফাজতের পরিণতি ভোগ করতে হবে। এ কথা শুনে এখন মানুষ আবারও বিস্ময়ে প্রশ্ন করছে-আপনারা সেদিন হেফাজতকে দমন করতে কত লোককে হত্যা করেছেন? এখন পর্যন্ত সন্ত্রাসের যত আলামত দেখা যাচ্ছে তা আপনারা এবং আপনাদের পৃষ্ঠপোষক সরকারি গোয়েন্দারা করছে। যেটি গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে। আবারও আপনারা বিএনপি-কে দমনের নামে সেই হিংসার পথে নেমেছেন। আন্দোলন দমানোর নামে আরও কত যে মৃত্যু, ধ্বংস, বাস্তুচ্যুতি এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় ঘটাবে সেই নিয়ে জনমনে বিরাট সংশয় দেখা দিয়েছে। আগামী ১০ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে অনুষ্ঠেয় ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশে মানুষের প্রবল জনস্রোত তৈরি হবে। তিনি জানান, সারা দেশে দুই দিনে কমপক্ষে ৫৩৬জন বিএনপি নেত-কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি দেশব্যাপী গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলা দায়েরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।