মোংলায় অনুমতি ছাড়া ফেরিঘাট নির্মাণের অভিযোগ

0

বাগেরহাট সংবাদদাতা॥ মোংলা সমুদ্র বন্দর চ্যানেল সংলগ্ন জেটির মধ্যবর্তী স্থানে অনুমতি ছাড়া ফেরিঘাট নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে সড়ক বিভাগের বিরুদ্ধে। ওমেরা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড ও যমুনা স্পেসটেক জয়েন্ট ভেঞ্চার লিমিটেডের জেটির মধ্যবর্তী স্থানে ঘাটটি নির্মানাধীন রয়েছে। এনিয়ে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, সড়ক বিভাগকে লিখিত কোনো অনুমতি দেয়া হয়নি।এদিকে বাগেরহাট সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দাবি, সড়ক ও সেতু বিভাগ থেকে অনুমতি নিয়ে ফেরিঘাট নির্মাণ করা হচ্ছে।
মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ীদের ধারণা, ফেরিঘাট নির্মাণ হওয়ার পর এ ঘাট হয়ে ফেরি চলাচল শুরু হলে চ্যানেলে নৌ দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়বে। এছাড়া এলপিজি প্লান্টের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা বাড়বে। এ অবস্থায় পরিবহন ফেরিঘাট নির্মাণ বন্ধ করতে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দিয়েছে এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এলওএবি)।
এলওএবি’র প্রেসিডেন্ট আজম জে চৌধুরী স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, ‘মোংলা বন্দর চ্যানেল সংলগ্ন দুটি এলপিজি প্লান্টের মধ্যবর্তী স্থানে যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপন করলে তা মোংলা বন্দর এবং এই বন্দরে স্থাপিত সকল এলপিজি স্থাপনার জন্য মারাত্মক হুমকি হবে। বিষয়টি সকলকে অবহিত করার পরে লাউডোব ঘাট স্থাপনের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু ১৬ অক্টোবর থেকে আবারও ঘাট স্থাপনের কাজ শুরু করে সড়ক বিভাগ। অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিভিন্ন এলপিজি স্থাপনার মধ্যে এরকম অনিয়ন্ত্রিত যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপনাসমূহের জন্য যেমন হুমকি স্বরূপ; তেমন সার্বিক বিবেচনায় মোংলা বন্দরের জন্যও বিষয়টি নিরাপদ নয়। তাছাড়া এলপিজি বহনকারী বিদেশি জাহাজও এরকম যাত্রী পরিবহন ঘাট স্থাপনে আপত্তি উত্থাপন করতে পারে। এছাড়া ঘাট স্থাপনের ফলে নদীর নাব্য হ্রাস পাবে। ’
মোংলা বন্দরের শিপিং ব্যবসায়ী এইচএম দুলাল বলেন, যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হয় সে এলাকায় সার্বিক উন্নয়ন ঘটে।ফেরিঘাট নির্মাণ একটি সময় উপযোগী কাজ। যতদ্রুত নির্মাণ কাজ শেষ হবে, ততই এপার-ওপার দুই উপজেলার মানুষের সাথে সেতুবন্ধনসহ ব্যবসায়ী ও অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে বলে জানান ওই ব্যবসায়ী।
এলপিজি অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’র (এলওএবি) সাধারণ সম্পাদক আহসানুল জব্বার বলেন, বন্দর চ্যানেলের স্পর্শকাতর স্থানে ফেরিঘাট হওয়া খুবই বিপদজনক। আমরা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়, মোংলা বন্দরসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের সাথে যোগাযোগ করছি। ফেরিঘাট নির্মাণ বন্ধ না হলে চ্যানেলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যাবে।  মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (প্রশাসন) শাহিনুর আলম বলেন, এটি আন্তর্জাতিক বন্দর। এর চ্যানেলে ঘাট বা অন্য স্থাপনা হলে ঝুঁকি হওয়া খুব স্বাভাবিক। এখানে কোনো ধরনের ঘাট বা রাস্তা নির্মাণ এবং ফেরি চলাচলের লিখিত অনুমতি দেয়া হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সড়ক বিভাগ অনুমতি চাইলে বন্দর থেকে উত্তর দিকে বাজুয়া এলাকায় ফেরিঘাট নির্মাণের কথা বলা হয়েছিল। সড়ক বিভাগের বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন বলেন, ফেরি চলাচলের জন্য আমরা সড়ক ও সেতু বিভাগ থেকে অনুমতি পেয়েছি। যেহেতু এ চ্যানেল দিয়ে ইঞ্জিন চালিত নৌযান চলে, আমাদের ফেরিও ইঞ্জিনচালিত; ফলে কোনো সমস্যা নেই। এছাড়া সারাদিনে ফেরি চলবে সর্বোচ্চ ১২ বার। আর চ্যানেল অনেক প্রশস্ত। তাই সতর্কতার সঙ্গে চললে অসুবিধা হবে না।