যতো বাঁধা আসবে, কর্মসূচি ততই সফল হবে : গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা॥ চলমান আন্দোলন বিএনপির ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নয়। যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না তাদেরকে হঠানোর আন্দোলন। কর্মসূচিতে যতো বাঁধা আসবে, ততই আন্দোলনে সফলতা আসবে, বলেছেন দলটির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
২২ অক্টোবর খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ কর্মসূচিকে বাঁধাগ্রস্ত করতে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা একযোগে কাজ করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে, ভয়ভীতি দেখিয়ে লাভ হবেনা।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খুলনায় কে ডি ঘোষ রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ সব কথা বলেন খুলনায় বিভাগীয় গণ সমাবেশ বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
কর্মসূচিকে বাঁধাগ্রস্ত করতে এবং ভয়ভীতি ছড়াতে মহানগরী ও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এবং অন্যান্য জেলা থেকে খুলনায় আসা বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অসংখ্য বাড়িতে চলেছে পুলিশের তল্লাশি অভিযান। একই সাথে শাসক দলীয় ক্যাডাররা এলাকা ভিত্তিক নেতাকর্মীদের বাড়িতে গিয়ে নানা ধরনের হুমকি ও ভীতি প্রদর্শন করছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে বিএনপি সন্ধ্যায় তাৎক্ষণিক এই প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে।
গয়েশ্বর রায় বলেন, বিএনপি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রাম করছে বিএনপি। এই সরকার উন্নয়নের নামে সিংহভাগ টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করছে। পাচারের সাথে জড়িতরা সবাই সরকারের সাথে জড়িত। সরকারের ব্যর্থতা ও লুটপাটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণহীন। বিএনপি দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবিতে আন্দোলন করছে। অবৈধ পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার দাবি জানাচ্ছে।
গয়েশ্বর রায় বলেন, মাদার অব ডেমোক্রেসি বেগম খালেদা জিয়াকে ফরমায়েশি রায়ে বন্দি রাখা হয়েছে। একমাত্র নজির তিনি যাকে জামিন দেয়া হয়নি।
খুলনার ট্রান্সপোর্ট মালিকদের বাধ্য করা হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখতে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আশা করবো তারা রাস্তায় বাস নামাবেন। পুলিশকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সরকারের অন্যায় আদেশ মানা আপনাদের দায়িত্ব না। সার্ভিস রুল অনুসরণ করুন। এই সরকার আপনাদের কোন ক্ষতি করলে ভবিষ্যতে আমরা সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেবো।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, সব তথ্য সংগ্রহ করে রাখুন। আজ হয়তো সব তথ্য প্রকাশ করতে পারবেন না। কিন্ত একদিন আসবে যখন এই তথ্যের ভিত্তিতে আমরা তাদেরকে বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করাতে পারবো।
প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রারম্ভিভ বক্তব্যে নগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেফতার ও নেতাকর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালানোর পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক কাউন্সিলর মাহমুদ আলম বাবু মোড়ল, নগর বিএনপির সদস্য খন্দকার হাসিনুল ইসলাম নিক, বেলাল হোসেন, ২৫ নং ওয়ার্ড বিএনপি আহবায়ক নজরুল ইসলাম, যুবদল নেতা কাজী সেলিম, ডালিম, ডা. শাহ আলম, জুলু, গোলাম মোস্তফা ভূট্টো, মিজানুর রহমান বাবু এবং বাগেরহাট থেকে সমাবেশে যোগ দিতে খুলনায় আসা কৃষক দল নেতা মিঠুসহ চারজন। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবক দল জেলা সভাপতি শেখ তৈয়েবুর রহমান, নগর যুবদল সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, যুবদল নেতা আব্দুল আজিজ সুমন, জাবির আলী, স্বেচ্ছাসেবক দলের খায়রুজ্জামান সজীব, কাউন্সিলর হাফিজুর রহমান মনি, বুলবুল মোল্লা, তৌহিদ, ফারুক হোসেন, আলতাফ খান, আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস, কাজী মিজানসহ অসংখ্য নেতাকর্মীর বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া খুলনার বাইরে বিভিন্ন জেলা থেকে আসার পথে নানা স্থানে বাস থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে মোবাইল ফেসবুক চেক করা হয়। বিএনপি সংশ্লিষ্টতা পাওয়ার সাথে সাথেই বেদম মারপিট করে সর্বস্ব কেড়ে নেয়া হয়। বিশেষ করে বাগেরহাটের বিভিন্ন হামলা নির্যাতনের খবর পাওয়া যায়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী রকিবুল ইসলাম বকুল, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্তু কুমার কুন্ডু, নগর আহবায়ক শফিকুল আলম মনা, শেখ মুজিবর রহমান, সাহারুজ্জামান মোর্ত্তজা, জেলা আহবায়ক আমীর এজাজ খান, মনিরুল হাসান বাপ্পী, মোঃ তারিকুল ইসলাম জহীর উপস্থিত ছিলেন।