মণিরামপুরে নববধূ হত্যা

0

 

স্টাফ রিপোর্টার,মণিরামপুর(যশোর)॥ বিয়ের দুইমাস অতিবাহিত হতে না হতেই যৌতুকের শিকার হতে হলো গৃহবধূ ফাতেমা খাতুন(১৭)-কে। অভিযোগ রয়েছে তিনলাখ টাকার যৌতুক না পেয়ে পাষন্ড স্বামী মারপিট করে হত্যা করেছে ফাতেমাকে। ফাতেমা খাতুন যশোরের মণিরামপুর পৌরশহরের দূর্গাপুর এলাকার সোহান আলীর স্ত্রী। রোববার রাতে সোহান তার স্ত্রীকে মারপিটে হত্যার পর মরদেহ ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে প্রচার করে আত্মহত্যার। এক পর্যায়ে রাত দুইটার দিকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের পর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা ফাতেমাকে মৃত ঘোষণা করেন।
সোমবার সকালে পুলিশ মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।এ ঘটনায় পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা দুপুরে অভিযান চালিয়ে ফাতেমার স্বামী সোহান ও শ্বশুর মিজানুর রহমানকে আটক করে। অভিযোগ রয়েছে, আটকের সময় সোহানের লোকজন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বাধা দেন। হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পিতা বাদি হয়ে মামলা করেছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, মাত্র দুইমাস আগে পৌরশহরের দূর্গাপুর এলাকার মিজানুর রহমানের ছেলে তরকারি ব্যবসায়ী সোহান আলীর সাথে বিয়ে হয় অভয়নগর উপজেলার জিয়েডাঙ্গা গ্রামের ইয়াছিন আলীর মেয়ে ফাতেমা খাতুনের। ফাতেমার পিতা জানান, বিয়ের কিছুদিন পর সোহান ব্যবসার জন্য তিনলাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। মেয়ের সুখের সংসারের কথা ভেবে তিনি ধারদেনা করে সোহানকে একলাখ টাকা প্রদান করেন। বাকি টাকা পরিশোধের জন্য সোহান ফাতেমাকে বার বার চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এনিয়ে তাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।
রোববার রাত দুইটার দিকে ঝগড়ার এক পর্যায়ে সোহান বেধড়ক মারপিট করেন ফাতেমাকে। ফলে ফাতেমা অচেতন হয়ে পড়েন। ফাতেমার পিতার অভিযোগ মারপিটে হত্যার পর মরদেহ ঘরের আড়ায় ঝুলিয়ে সোহান প্রচার করেন আত্মহত্যার। এক পর্যায়ে সোহান ও তার পরিবারের লোকজন ফাতেমাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। এ সময় জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিযোগ রয়েছে, এর পর পরই মরদেহ রেখে সেখান থেকে সোহান ও তার লোকজন পালিয়ে যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.তন্ময় বিশ্বাস জানান, ফাতেমাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, গৃহবধূর শরীরে আঘাতের অসংখ্য চিহ্ন রয়েছে। সোমবার সকালে পুলিশ ফাতেমার মরদেহ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
মণিরামপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নূর-ই-আলম সিদ্দিকী জানান, ইতিমধ্যে এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের পিতা বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। তার পরপরই পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা অভিযান চালিয়ে সোহান ও তার পিতাকে আটক করে।