অনুমতি মেলে নি চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী বলুহ মেলার

0

 

 

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু, চৌগাছা (যশোর) ॥ বাংলা ভাদ্র মাসের শেষ মঙ্গলবার যশোরের চৌগাছার ঐতিহ্যবাহী পীর বলুহ দেওয়ান (র.)‘র রওজা শরীফকে ঘিরে হাজারও মানুষের যে মিলন মেলা ঘটে সেটিই হচ্ছে বলুহ মেলা। গত দুই বছর মহামারি করোনার কারণে মেলা অনুষ্ঠিত হয়নি। এবছর অনেকের ধারণা ছিল অত্যন্ত আর্কষণীয় হবে মেলা। তবে আজও প্রশাসনের তরফ হতে অনুমতি পায়নি মেলা কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, পীর বলুহ দেওয়ান (র.) এর রওজা শরীফ ধুয়ে মুছে ঝকঝকে করা হয়েছে, রওজার সামনে বিশাল প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছে আর প্রধান গেটে ব্যানার আর ফেস্টুন দিয়ে দর্শনীয় করে তোলা হয়েছে। বলুহ ভক্তরা আসতে শুরু করেছেন। এসময় কথা হয় যশোরের কাঁঠালতলা এলাকার বলুহ ভক্ত শাহীনুর রহমান, মনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জ এলাকার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য আব্দুর রাজ্জাক, কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলার আম্বিয়া বেগমের সাথে। তারা প্রত্যেকে জানান, বলুহর মাজারকে ঘিরে প্রতি বছর যে ওরশ শুরু হয় তাতে অংশ গ্রহণ করেন এবছরও প্রাণের টানে চলে এসেছেন।
রওজা শরীফের খাদেম জয়নাল আবেদিন বলেন, আগামী সোমবার রাত ১২ টায় পীর বলুহ দেওয়ানের মারাজরকে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলার মধ্য দিয়ে মূল কার্যক্রম শুরু হবে।
এদিকে মেলা বসা নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তার মধ্যে আছেন মেলা কর্তৃপক্ষ। কেননা বেশ আগে ভাগেই তারা উপজেলা প্রশাসন ও জেলাতে অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছেন কিন্তু কোনো খবর এখনও আসেনি বলে জানা গেছে। কোনো এক অদৃশ্য শক্তি এই মেলা যাতে না হয় তার জন্যে কাজ করে যাচ্ছে বলে ধারণা গ্রামবাসীর। মেলাকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যে কাঠের তৈরি হরেক রকমের আসবাবপত্র আসতে শুরু করেছে, দোকান নিয়ে বসেছেন শিশু খেলনা ও পোশাক বিক্রেতারা। কিন্তু মেলা হবে কিনা তা নিয়ে এক ধরনের শঙ্কা কাজ করছে।
হাজরাখানা গ্রামের ৮৫ বছর বয়সের বৃদ্ধ আব্দুল মোতালেব বিশ্বাস বলেন, তিনি বাবা দাদাদের মুখে শুনে ছেন শতশত বছর ধরে হাজরাখানা গ্রামের ঐতিহ্য বলুহ মেলা হয়ে আসছে। গত দুই বছর মেলা হয়নি, এবছর মেলা বসবে বলে আশা করেছিলেন, কিন্তু প্রশাসন অনুমতি দেয়নি।
গ্রামটির মুদি ব্যবসায়ী মিঠু বলেন, বলুহ মেলা এলেই অন্য রকমের এক আনন্দ বয়ে যায় সকলের মাঝে। এবছর জাকজমক ভাবে মেলা হবে ,কিন্তু অনুমতি না পাওয়ায় এখন সব আশা শেষ।
মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন বলেন, মেলা বসার ব্যাপারে সব কিছুই করা হয়েছে কিন্তু অনুমতি পাওয়া যায়নি।
মেলা কমিটির আহবায়ক হাজরাখানা গ্রামের বাসিন্দা নারায়নপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহিন বলেন, আজও অনুমতি পাওয়া যায়নি, কেনো অনুমতি হচ্ছেনা সেটি তার অজানা বলে জানান। তবে শেষ পর্যন্ত অনুমতি পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন।