রাস্তা নির্মাণে হরিহর নদীর বালি!

0

স্টাফ রিপোর্টার,মনিরামপুর(যশোর)॥ যশোরের মনিরামপুরে বালি খেকোদের চোখ পড়েছে এবার হরিহর নদীর দিকে। দুই কোটি ১১ লাখ টাকা বরাদ্দের আড়াই কিলোমিটারের দৈর্ঘ্যরে বেশি রাস্তা নির্মাণের বালি উত্তোলন করা হচ্ছে হরিহর নদী থেকে। রাস্তা তৈরিতে বালির জন্য অর্থ বরাদ্দ থাকলেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতদিন হরিহর নদী থেকে বালি উত্তোলন করেই চলেছেন।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর(এলজিইডি) থেকে জানা গেছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে মনিরামপুর সদর ইউনিয়নের হাকোবা ঈদগাহ মোড় থেকে দেবিদাসপুর ভায়া সোনাডাঙ্গা পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র অভিমুখে দুই হাজার ৬১০ মিটার (আড়াই কিলোমিটারের) দৈর্ঘ্যরে পাকা রাস্তা তৈরিতে সরকার বরাদ্দ করে দুই কোটি ১১ লাখ টাকা। সে মোতাবেক এলজিইডি থেকে টেন্ডার আহবান করা হয়। টেন্ডারে কাজটি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিশ্বজিত কনস্ট্রাকশন। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের অংশীদার বিশ্বজিত দাস জানান, নানা প্রতিকুলতার কারণে কাজটি শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। ইতিমধ্যে রাস্তার বক্সখোঁড়া শুরু হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন,বঙ্খুঁড়ে ব্যবহৃত বালির জন্যে অর্থ বরাদ্দ রয়েছে ২০ লক্ষাধিক টাকা।
অভিযোগ রয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বালু ক্রয় না করে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তী হরিহর নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাতদিন উত্তোলন করছে। এ বালি উত্তোলনের কাজটি বাস্তবায়ন করছেন সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বালি উত্তোলন সিন্ডিকেডের হোতা ইদ্রিস আলী ও তার লোকজন।
শনিবার সকাল নয়টার দিকে সরেজমিন দেখা যায়, দেবিদাসপুর গ্রামের শুকুর আলী ও ওসমান গণির বাড়ির পাশে হরিহর নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে লম্বা পাইপের মাধ্যমে বালি উত্তোলন করে স্লুইসগেটের পাশে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। সেখান থেকে ট্রলিতে করে রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে।
এ সময় কথা হয় ড্রেজারের শ্রমিক আল আমিনের সাথে। তিনি জানান, ড্রেজার মেশিনের মালিক ইদ্রিস আলীর সাথে তারা ৩জন শ্রমিক এসেছেন একমাসের চুক্তিতে। এক মাসের মধ্যে আড়াই কিলোমিটার রাস্তার বালি তারা নদী থেকে উত্তোলন করবেন বলে জানিয়েছেন। তবে এ সময় ড্রেজারের মালিক ইদ্রিস আলীকে পাওয়া যায়নি। কথা হয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স বিশ্বজিত কনস্ট্রাকশনের বিশ্বজিত দাসের সাথে। তিনি জানান, নির্মাণ সামগ্রীর অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে কাজ হচ্ছে একটু ধীর গতিতে। অপর অংশীদার সিদ্দিকুর রহমান জানান, এলাকাবাসীর মতামতের ভিত্তিতে নদী থেকে সামান্য বালি উত্তোলন করা হচ্ছে।
তবে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুত কুমার জানান, রাস্তা নির্মাণে বালির জন্য নিদ্দিষ্ট হারে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া আছে। নদী থেকে বালু উত্তোলন করার কথা নয়।
এ ব্যাপারে সহকারী কমিশনার(ভূমি) আলী হাসান জানান, খবর পেয়ে ইতিমধ্যে বালি উত্তোলন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার বেশ কয়েকজন ব্যক্তি জানান, প্রশাসন থেকে বন্ধ করে দেওয়ার পর সন্ধ্যা থেকে আবারও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।