রামপাল সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিতে নেওয়া হয়নি ব্যবস্থা

0

 

এম, এ সবুর রানা, রামপাল (বাগেরহাট)॥ বাগেরহাটের রামপাল সরকারি কলেজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সহকারী অধ্যাপক সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই কলেজের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেবেকা সুলতানা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন। এদিকে লিখিত অভিযোগের পরেও কোনো প্রতিকার না পাওয়ায় অভিযোগকারীসহ ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা হতাশ হয়েছেন ।
লিখিত অভিযোগে সাইদুর রহমানের সময়ে সংগঠিত অনিয়মের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। সেখানে অডিট প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করা হয়। সে তথ্য মতে, দেখা যায় ওই কলেজ শিক্ষক সাইদুর রহমান বেশ কয়েকটি খাত থেকে ৪৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮৯৪ টাকা আত্মসাত করেন। বিভিন্ন রশিদ বইয়ের মাধ্যমে টাকা আদায় করা হয় ৫১ লক্ষ ২ হাজার ৮৮২ টাকা। তাছাড়া টাকা গ্রহণ করা হয়েছে কিন্তু রশিদ পাওয়া যায়নি এইচএসসি সাধারণ শাখার ৩ লাখ ৭৪ হাজার ৭১৫ টাকা, এইচএসসি (বিএম) শাখার ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৯শত টাকা ও স্মাতক পাশ শাখার ৪ লাখ ৪০ হাজার ৫৪৩ টাকা। তার সময়কালের মধ্যে কলেজের আয় হয়েছে মোট ৬৭ লাখ ৫৩ হাজার ৪০ টাকা। ব্যায়ের পরিমাণ মোট ২২ লাখ ৬৪ হাজার ১৪৬ টাকা। তিনি ৪৪ লাখ৮৮ হাজার ৮৯৪ টাকার কোনো হিসেব দিতে পারেননি যা নিরীক্ষা প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
ওই প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা প্রতিবেদনের বাইরেও তিনি ব্যপক আর্থিক অনিয়ম করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েক দফায় টিউশন ফি’র প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও অন্যান্য ফি বাবদ ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার হদিস মেলেনি।
এ ছাড়াও হিসেব বহির্ভূতভাবে কয়েক লাখ টাকার আর্থিক অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে তার বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শিক্ষক জানান, এই কলেজটি একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ । কলেজ প্রতিষ্ঠার পর থেকে বেশ সুনামের সাথে অন্যান্য অধ্যক্ষরা দায়িত্ব পালন করেছেন কিন্তু সাইদুর রহমান দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আর্থিক অনিয়ম হওয়ায় সকলে হতাশ হয়েছেন।
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত সাইদুর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কবীর হোসেন বরাবর অভিযোগ পত্র দিয়ে সেটি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেবেকা সুলতানা প্রত্যাহার করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় তিনি কোনো অনিয়ম করেননি।
এ বিষয়ে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রেবেকা সুলতানার সাথে কথা হলে তিনি সাইদুর রহমানের আর্থিক অনিয়মের বিষয়টি স্বীকার কলে বলেন, সাইদুর রহমানের দায়িত্ব পালনের সময়ে যে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে তার দায় কলেজ কর্তৃপক্ষ নেবে না। কলেজের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি ক্ষোভের সাথে জানান, লিখিত দেওয়ার পরও কোনো প্রতিকার মিলছে না।
এ বিষয়ে রামপাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কবীর হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ প্রাপ্তির বিষটি নিশ্চিত করেন। এ সময় তিনি বলেন, বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের দফতরের অনুমতি ছাড়া ওই বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেওয়া যাবে না।