চৌগাছার খাদ্যগুদামে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার শঙ্কা

0

 

 

স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর) ॥ চৌগাছায় বোরো মৌসুমে সরকারি খাদ্য গুদামে ধান চাল সংগ্রহ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ধান চাল সংগ্রহ কার্যক্রম শুরুর পর হতে গুদামে চাল কিছুটা এলেও ধান যা আসছে তা হতাশাজনক। গত দেড় মাসে গুদামে কৃষক ধান বিক্রি করেছেন মাত্র ২’শ ৪৭ মেট্রিকটন, যা লক্ষ্যমাত্রার ১০ শতাংশ। তবে এই সময়ে লক্ষ্যমাত্রার ৬২ শতাংশ চাল সংগ্রহ হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সূত্র মতে, বোরো মৌসুমে উপজেলায় ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয় গত ১৮ মে, শেষ হবে আগামী ৩১ আগস্ট। খাদ্যগুদামে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের কৃষকের কাছ থেকে সরাসরি প্রতিমণ ১ হাজার ৮০ টাকা দরে ধান সংগ্রহ করা হচ্ছে। ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২ হাজার ৪’শ ৭১ মেট্রিকটন। তবে নির্ধারিত সময়ের প্রায় অর্ধেক শেষ হলেও এপর্যন্ত মাত্র ২’শ ৪৭ মেট্রিকটন ধান ক্রয় করতে সক্ষম হয়েছে খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার ৬’শ ৩১ মেট্রিক টন হলেও এপর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে ১ হাজার ৮ মেট্রিক টন, যা লক্ষ্যমাত্রার ৬২ শতাংশ।
বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে চিকন ধান যেমন বাসমতি ১ হাজার ৫’শ টাকা ও মিনিকেট ১ হাজার ৩’শ টাকা টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মোটা জাতের ধান হিসেবে পরিচিত শুভলতা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১’শ থেকে ১ হাজার ১২০ টাকায় ও ব্রি ধান ৪৯/৫১ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১’শ থেকে ১ হাজার ১’শ ৫০ টাকায়।
কৃষকরা জানান, স্থানীয় হাট-বাজারে যে দামে ধান বিক্রি হচ্ছে, গুদামে সে দাম দেওয়া হচ্ছে না, সরকারি গুদামে ধান বিক্রি করতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। যে কারণে বাইরে আড়ত মালিকদের নিকট কৃষক ধান বিক্রি করে দিচ্ছে। এদিকে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলাবাজারে মোটা চালের দাম বেশি হওয়ার কারণে খাদ্যগুদামে চাল দিতে মিলারদেরও তেমন আগ্রহ নেই। কিন্তু মিলের নিবন্ধন টিকিয়ে রাখতে লোকসান সত্বেও চুক্তি অনুযায়ী গুদামে চাল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন বলে অনেক মিলার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান।
মিল মালিকরা বলেন, বর্তমানে বাজারে ৪৫ টাকার নিচে কোনো চাল নেই। অথচ সরকারি গুদামে চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৪০ টাকা। গুদামে চাল দিতে দেখা চোখে প্রতি কেজিতে ৫ টাকা লোকসান মাথায় নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে।
উপজেলা ভারপ্রাপ্ত খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান জানান, ধান চাল ক্রয়ে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে খোলাবাজারে দাম কিছুটা বেশি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে কৃষকরা এবার ধান শুকাতে বিভিন্ন সমস্যার মুখে পড়েছে। ভেজা ধানের আদ্রতা বেশি। আর ধানের আদ্রতা ১৪ শতাংশের বেশি হলে সেই ধান গুদামজাত করা সম্ভব না। একারণে কৃষকরা গুদামে ধান বিক্রি করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।