জালিয়াতি করে ব্যাংকের ৭ লাখ টাকা লোপাট

0

আসিফ কাজল, ঝিনাইদহ ॥ শৈলকুপার জনতা ব্যাংকের পর এবার ঝিনাইদহ শহরের হামদহ অগ্রণী ব্যাংকের শাখা থেকে জাল কাগজ তৈরির মাধ্যমে প্রতারক চক্র রেমিটেন্সের প্রায় ৭ লাখ টাকা উত্তোলন করে চম্পট দিয়েছে। এ নিয়ে আজ রোববার ব্যাংক পাড়ায় তোলপাড় শুরু হয়। প্রতারক চক্রকে ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। জাল ভোটার আইডি তৈরির দায়ে শহরের সমবায় মার্কেটের মোল্লা কম্পিউটার থেকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দু’জনকে নিয়ে গেছে পুলিশ। জব্দ করা হয়েছে একটি কম্পিউটার। খবরের সত্যতা স্বীকার করেছেন অগ্রণী ব্যাংকের ডিজিএম মানস কুমার পাল।
পুলিশ ও ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে একদল প্রতারক জাল ভোটার আইডি ও রেমিটেন্সের কাগজ নিয়ে অগ্রণী ব্যাংক হামদহ শাখায় প্রবেশ করে। তারা একে একে রেমিটেন্স অফিসারের কাছ থেকে কাগজপত্র স্বাক্ষর করিয়ে ক্যাশ থেকে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৮৫৫ টাকা তুলে নেয়। ৭টি ভোটার আইডির বিপরীতে এই টাকা প্রদান করা হয়। ভোটার আইডি ও ব্যাংক ম্যানজার আরিফ উদ্দীনের স্বাক্ষর জাল করা হয়। জাল স্বাক্ষরে কীভাবে রেমিটেন্সের টাকা প্রদান করা হলো তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। জাল ভোটার আইডির মালিকরা হলেন-ঝিনাইদহ পৌর এলাকার ছোট কামারকুন্ডু গ্রামের আব্দুল্লাহ ছেলে মিজান, একই গ্রামের সাহাবুদ্দীনের ছেলে আজাদ, আব্দুল মালেকের ছেলে আবুল, ষাটবাড়িয়ার মানিক মিয়ার ছেলে মহসীন, একই গ্রামের আব্দুল কাদেরের ছেলে আলমগীর, জয়নাল আবেদীনের ছেলে হাসান ও লেহাজ উদ্দীনের ছেলে আশরাফ উদ্দীন।
খবর পেয়ে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের এসআই সিরাজুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন এবং ঝিনাইদহ শহরের সমবায় মার্কেটের মোল্লা কম্পিউটারে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে আটক ও একটি কম্পিউটার জব্দ করেন।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের অভিযোগ, মোল্লা কম্পিউটার থেকে এই জাল ভোটার আইডি তৈরি করা হয়। পবহাটী ভটিয়ারগাতি এলাকার জনৈক যুবক এই জাল ভোটার আইডি তৈরি করে থাকেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা।
এ বিষয়ে ঝিনাইদহ শহরের হামদহ অগ্রণী ব্যাংক শাখার ম্যানেজার আরিফ উদ্দীন বলেন, ‘আমি কিছুক্ষণের জন্য আঞ্চলিক অফিসে গেলে এই সুযোগে তারা জাল কাগজপত্র এমনকি আমার এবং ব্যাংকের রেমিটেন্স অফিসার আব্দুল মান্নানের স্বাক্ষর জাল করে টাকা তুলে নিয়ে চম্পট দেয়।’ তিনি বলেন. ‘এ বিষয়ে আমরা সিসিটিভির ফুটেজ পুলিশকে দিয়েছি। প্রাথমিকভাবে ক্যাশ অফিসার সাইফুলকে দায়ী করে তার কাছ থেকে এই টাকা রিকোভারি করে ব্যাংকে জমা দেওয়া হয়েছে।’ ক্যাশ অফিসার সাইফুল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করবেন বলেও জানান ম্যানেজার আরিফ উদ্দীন।
ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের এসআই সিরাজুল ইসলাম জানান, ‘তদন্তের স্বার্থে এখন কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমরা প্রতারক চক্রকে সনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।’
উল্লেখ্য, দেশব্যাপী ব্যাংকগুলোতে জাল কাগজপত্র তৈরি করে টাকা উত্তোলনের ঘটনা বৃদ্ধি পেলেও ঝিনাইদহ অগ্রণী ব্যাংক হামদহ শাখায় বাড়তি কোন সতর্কতা ছিল না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। এর আগে গত ৮ জুন জনতা ব্যাংক শৈলকুপা শাখা থেকে প্রতারণা করে ৪ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে উধাও হয় প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় সুমী বেগম নামে এক মহিলা প্রতারককে আটক করে পুলিশ। আটক সুমি খুলনার তেরখাদা উপজেলার নলিয়ারচর ইউনিয়নের বলরধনা গ্রামের কামাল হোসেনের স্ত্রী।