প্রত্যাশিত বৃষ্টি এলো : তীব্র গরম কমে জনজীবনে স্বস্তি

0

 

আকরামুজ্জামান ॥ জ্যৈষ্ঠ মাসকে প্রমাণ করতেই কাঠফাটা গরম পড়েছিল গত প্রায় এক মাস ধরে। সেই ধারাবাহিকতা ছিলো আষাঢ়ের শুরুর গত দুই দিনেও। এ সময়ে আকাশটা মাঝে মাঝে ভারী হয়ে বৃষ্টির জানান দিতে থাকলেও প্রত্যাশিত সেই বৃষ্টির দেখা মিলছিলো না। তবে গতকাল আষাঢ়ের মান রাখতেই যেন মাসের তৃতীয় দিনেই আকাশ উপচে বৃষ্টি নেমে আসে যশোরে।
দুপুরের পর থেকে যেভাবে আকাশ কালো হয়ে আসছিলো, তাতে মনে হচ্ছিলো সন্ধ্যা ঘনাচ্ছে বুঝি। গতকাল সকাল থেকে ঢাকাসহ দেশের প্রায় সবখানেই বৃষ্টি দিয়ে সকাল শুরু হলেও যশোরে তার ছিঁটেফোঁটা ছিলো না । অবশেষে সন্ধ্যার আগ মুহূর্তে বৃষ্টি শুরু হয়েছে যশোরে, তবে বৃষ্টির পরিমাণ কোথাও ছিল কম, কোথাও বেশি।
শুক্রবার রাতে যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমানঘাঁটি নিয়ন্ত্রিত আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বর্ষার প্রকৃতিগত নিয়মেই যশোরাঞ্চলে মৌসুমী বৃষ্টি শুরু হয়েছে। বৃষ্টির ধারাবাহিকতা থাকবে আরও বেশ কয়েকদিন। বৃষ্টির কারণে এখন ধীরে ধীরে কমতে থাকবে দিনের তাপমাত্রা বলে জানান এক কর্মকর্তা। বলা চলে আজ থেকে বর্ষাকাল শুরু হয়ে গেলো এমন কথা বলেন ওই কর্মকর্তা।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, আগামী দুদিন আরও বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ সময় দিনের ও রাতের তাপমাত্রা হ্রাস পেতে পারে। প্রত্যাশিত বৃষ্টি মানুষসহ প্রাণীকূলের মাঝে স্বস্তি এনে দেয়। এ বছর যশোরসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বৈশাখ- জ্যৈষ্ঠ মাসে প্রত্যাশিত বৃষ্টি পাওয়া যাচ্ছিলনা। যে কারণে গরমের তীব্রতায় মানুষকে বেশ কষ্ট পেতে হয়। সমস্যা দেখা দেয় মাছ চাষে। চাঁচড়ার মৎস্যপল্লীতে রেণু ও পোনা বিক্রির ভরা মৌসুমের মাঝামাঝি সময়েও বৃষ্টির দেখা না পাওয়ায় মাছ চাষিরা বেশ বেকায়দায় ছিলো। তবে গতকালের বৃষ্টি শুরু হওয়াতে তারা একটু আশা দেখছেন বলে জানান।
যশোর জেলা হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ ফিরোজ খান ও সাধারণ সম্পাদক জাহিদুর রহমান গোলদার বলেন, বৃষ্টিহীনতা এ বছর আমাদের মারাত্মক সংকটে ফেলেছে। এ সময়টা চাঁচড়ার মৎস্য বাজারে রেণু ও পোনা বিক্রির হিড়িক পড়ে যায়। কিন্তু প্রত্যাশা অনুযায়ী বৃষ্টি না হওয়ায় বাইরের জেলা থেকে কোনো ক্রেতা আসেননি এখানে। যেকারণে আমরা যারা চারা মাছ বিক্রি করি তারা মারাত্মক আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। তিনি বলেন, মনে হচ্ছে আষাঢ়ের বৃষ্টি হয়ে গেলো। এখন থেকে চাঁচড়ার রেণু ও পোনার বাজার জমে উঠবে বলে আশা করছি।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর যশোরের উপপরিচালক নুরুজ্জামান বলেন, বৃষ্টি খ্বু জরুরি হয়ে পড়েছিলো। আশা করছি সামনে বৃষ্টিপাত আরও বেশি। এখন বৃষ্টি হলে ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না, বরং সবজি ও পাট ক্ষেতের জন্য এ বৃষ্টি খুব উপকার হবে।