কপিলমুনিতে কাঁঠালের ফলন ভালো হলেও সাইজ ছোট অপুষ্ট কোষ

0

এইচ,এম,শফিউল ইসলাম,কপিলমুনি (খুলনা) ॥ আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ বিদ্যমান না থাকায় খুলনার কপিলমুনিতে কাঁঠালের অনেক ফলন হলেও আকার-আকৃতি ও সাইজে ছোট হয়েছে। উৎপাদন মৌসুমের শুরুতে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় কাঁঠালের বৃদ্ধি কম হয়েছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কাঁঠালের আকার-আকৃতি বাঁধাপ্রাপ্ত হওয়ায় বেশিরভাগ কাঁঠালের কোষ (কোয়া) বড় হয়নি। তবে কোনা কোনো এলাকায় বাগান মালিকরা কাঁঠালের ভাল ফলন পেতে বাগানে অতিরিক্ত পরিচর্যা করায় সে সকল এলাকায় কাঁঠালের আকার-আকৃতি স্বাভাবিক হয়েছে। কাঁঠাল পাকা শুরু হয়েছে বেশ কিছুদিন। বর্তমান মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শেষ ভাগে চলছে। কাঁঠালের ভরা মৌসুম। প্রথম দিকে বাজারে দর চড়া থাকলেও এখন দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছে।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে কাঁঠালের আবাদ হয়েছে। উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে গদাইপুর, হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়ুলীতে কাঁঠালের আলাদা বাগান রয়েছে। তাছাড়া লবণাক্ততার প্রকোপ কাটিয়ে উপজেলার চাঁদখালী ও পৌরসভার আংশিক এলাকায় কিছু কিছু কাঁঠাল গাছ বেড়ে উঠেছে। এসকল এলাকায় পরিকল্পিতভাবে কাঁঠাল বাগান গড়ে ওঠেনি। তবে মিশ্র বাগানে কাঁঠাল গাছ রয়েছে।
সূত্র জানায়, তবে আগের মতো এখন আর বড় কাঁঠাল গাছ চোখে পড়ে না।কাঁঠাল কাঠের দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই বড় গাছ বিক্রি করে দেন। তারপরও যা আছে তাতে যদি সুবিধামতো কাঁঠাল পাওয়া যেতা তা হলে বাগান মালিকরা লাভবান হতেন।
এ ব্যপারে কপিলমুনির আজিবার ফকির, মো. আসলাম হোসেন বলেন তারা বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিবছর কাঁঠাল বাগান কিনে থাকেন। এবার ফলন ছোট হওয়ায় বাজার ধরতে কষ্ট হচ্ছে। নাছিরপুরের মিলন বলেন এবার কাঁঠালের বাজার দর স্বাভাবিক রয়েছে।
কৃষি অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী উপজেলায় ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৮শ’ মেট্রিকটন কাঁঠাল উৎপাদন হবে। বাজারে পাকা কাঁঠালের পাশাপাশি সব্জি হিসেবেও চাহিদা রয়েছে। আকার ভেদে প্রতিটি কাঁঠাল ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ২শ’ টাকারও অধিক দামে বিক্রি হচ্ছে।
চাষিরা জানান, আষাঢ়-শ্রাবণ মাস মূলত কাঁঠাল পাকার উৎকৃষ্ট সময়। তবে জ্যৈষ্ঠ মাস থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ কাঁঠাল বাজার বেঁচা-কেনা হচ্ছে। কাঁঠাল রসালো ও সু-স্বাদু একটি ফল। কৃষি বিভাগসহ স্থানীয়রা জানান, কাঁঠাল এমন একটি ফল যার কোনো অংশই বাদ যায় না। কাঁঠালের কোষ, খোসা ও বিচি সব কিছুই প্রয়োজনীয়। বিচি উৎকৃষ্টমানের উপাদান হিসেবে তরকারিতে মিশ্রণ উপকরণ হিসেবে রান্না করে খাওয়া হয়। এর খোঁসা ও গাছের পাতা গবাদি পশু গরুছাগল ও ভেঁড়ার প্রিয় খাদ্য। তাছাড়া কাঁঠাল উৎপাদনে তেমন খরচ না থাকায় চাষিরা লাভবান বেশি হয়। কিন্তু এবার ফলনের আকার ও অপুষ্টতা নিয়ে ক্রেতা বিক্রেতাদের ক্ষোভ রয়েছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, আবহাওয়ার প্রতিকূল পরিবেশেও পাইকগাছা উপজেলায় কাঁঠালের ফলন বেশি ছিল। তবে ফলনে অপুষ্তা, কোষ বড় না হওয়াসহ কিছু সমস্যা হয়েছে। মৌসুমের শুরুতে বৃষ্টির অভাবে এমন হওয়ার প্রবণতা থাকে। তিনি বলেন, তারপরও আগামীতে কাঁঠালের ফলন আশানুরূপ হবে, মানুষ এ ফল চাষ ও বিক্রিতে লাভবান হবেন এমনটিই আশা তার।