শৈলকুপার ডাবল মার্ডারের মামলা প্রত্যাহারে আসামিদের চাপে বিপাকে নিহতদের পরিবার

0

 

স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহ॥ ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার বৃত্তিদেবী রাজনগর গ্রামে আজিম মুন্সী ও কফিল উদ্দিন হত্যা মামলার সাক্ষ্য শুরু হওয়ার পর চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন নিহতদের পরিবার। এর মধ্যে একটি শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবার। আসামিরা মামলার সাক্ষীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ১৫ এপ্রিল তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে কফিল উদ্দীন ও আজিম মুন্সিকে হত্যা করা হয়। এরমধ্যে আজিম মুন্সি হচ্ছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই মহাব্বত আলী (বেসামরিক গেজেট-১৮৭৩) শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। ডাবল মার্ডারের পর কফিল উদ্দিনের মেজ ভাই হবিবর রহমান বাদী হয়ে শৈলকুপা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন যার নং-১২। মামলাটি ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জজ আদালত-১ এ বিচারাধীন রয়েছে। নিহত আজিম মুন্সির ছেলে রাজা মুন্সি অভিযোগ করেন, আদালতে সাক্ষ্য শুরু হওয়ার পর থেকে মামলার আসামী মওলা বক্স, আব্দুল কুদ্দুস, রইচ উদ্দীন ও বাচ্চুসহ অন্যান্যরা নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। প্রতিনিয়ত বাদী ও সাক্ষীদের বাড়ি গিয়ে মামলা প্রত্যাহারের জন্য হুমকি ও সাক্ষ্যদানে বাধা প্রদান করছেন।
গত ৯ মে নিহত আজিম মুন্সীর ছোট ছেলে রাজিব হাসান প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে আদালতে সাক্ষ্য দিতে গেলে তার উপর চড়াও হয় এবং হত্যার হুমকি দেয়। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানায় একটি জিডি করা হয়েছে যার নং-৬৩৮। এদিকে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য হয়েও এলাকার প্রভাবশালীদের অত্যাচারে পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যে কোনো সময় জোড়া হত্যার আসামিরা বাদী ও সাক্ষীদের নামে মিথ্যা মামলা বা খুন জখম করতে পারে বলেও তারা আশঙ্কা করছেন।
নিহত আজিম মুন্সীর বড় ছেলে রেজাউল বলেন, শৈলকুপা উপজেলায় প্রতি বছর ১৫/২০ জন মানুষ খুনের শিকার হয়। কিন্তু একটারও বিচার হয়না। এই বিচারহীনতার কারণে খুনিরা থেমে থাকে না। তিনি বলেন, তার পিতার খুনিদের বিচার হলে শৈলকুপায় খুনোখুনি অর্ধেক কমে যাবে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আজিম মুন্সী ও কপিল উদ্দিনের খুনিরা এলাকায় দুধর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। বর্তমানে আদালতে সাক্ষীরা যেন সাক্ষ্য প্রদান না করেন সে জন্য দফায় দফায় মিটিং করে হুমকি ধামকি দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা নিয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি হয়েছে। ‘আমরা তদন্ত করছি। তারপরও কোন সাক্ষীকে যেন হুমকি-ধামকি দেওয়া না হয় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’