এবারো চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর সাথে পারলো না মোহামেডান

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ এবারো চির প্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীর সাথে পারলো না মোহামেডান। শেষ দিকে দ্রুত উইকেট হারানোর কারণে হাত খুলে রানের গতি বাড়াতে না পারার খেসারত দিল শুভাগত হোমের দল। ২৫৫ রান নিয়ে শেষ রক্ষা হয়নি সাদা কালোদের। ৬ উইকেটের অনায়াস জয় নিয়ে মাঠ ছাড়লো আবাহনী। নিজেদের সরাসরি ফেবারিট দাবি করেননি। তবে আবাহনী অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন আগের দিনই বুঝিয়ে দিয়েছিলেন চির প্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীর পাল্লা ভারি। এ পেস বোলিং অলরাউন্ডার সোমবার বেশ আস্থার সঙ্গে বলেছিলেন, ‘মোহামেডানের সাথে আমরা (আবাহনী) বরাবরই এগিয়ে। তাই চাপও কম আমাদের।’ ঠিকই তাই। পারফরমারদের বোলিং আর ব্যাটিংই আবাহনী বলে দিয়েছে মর্যাদা ও চির প্রতিদ্বন্দ্বীদের লড়াইয়ে আমরাই সেরা।
নিজেদের সেরা প্রমাণের মিশনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন আবাহনী অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ৩৭ বলে ৫২ রানের হার না মানা ইনিংস উপহার দিয়েছেন আবাহনী অধিনায়ক। তার সঙ্গী আফিফ হোসেন ধ্রুবও দারুণ খেলেছেন। এ বাঁ-হাতির ব্যাট অপরাজিত ছিল ৩৮ বলে ৪৮ রানে। আফিফ-মোসাদ্দেক ৮৫ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়লে আবাহনী ২২ বল আগেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায়। জয়ের জন্য ২৫৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামার পর শুরুতেই মোহাম্মদ নাইম শেখের উইকেট হারায় আবাহনী। কোনো রান না করেই ফিরে যান নাইম। মুনিম শাহরিয়ার করেন ২৫ বলে ৩১ রান। এছাড়া ভারতীয় রিক্রুট হনুমা বিহারী খেলেন ৮০ বলে ৫৯ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। জাকের আলী নায়েককে নিয়ে ৯৮ রানের অসাধারণ একটি জুটি গড়েন হনুমা বিহারী। সে সঙ্গে দলকেও জয়ের রাস্তায় নিয়ে আসেন। তবে তারা দু’জন আউট হওয়ার পর মোহামেডানের জয়ের পাল্লা ভারি হয়ে যায়। কিন্তু সে ধারণা ভুল প্রমাণ করেছেন দুই তরুণ আফিফ হোসেন ধ্রুব আর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। শেষ ৬০ বলে ৬৪ রান দরকার থাকা অবস্থায় জ্বলে ওঠে মোসাদ্দেক ও আফিফের ব্যাট। মোহামেডানের বোলার ও ফিল্ডারদের হতাশায় ডুবিয়ে তারা স্বচ্ছন্দে খেলে দলকে পৌঁছে দিয়েছেন জয়ের বন্দরে। মোহাম্মদ হাফিজ আর রুবেল মিয়াও তৃতীয় উইকেটে ১১৫ রানের বড় জুটি গড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু সে জুটি কাজে লাগিয়ে মোহামেডান স্কোরলাইনকে বড় করতে পারেননি পরের দিককার ব্যাটাররা।
শেষ ১৫ ওভারে ৮ উইকেট হাতে থাকার পরও মোহামেডান মিডল আর লেট অর্ডাররা তুলেছেন মাত্র ৯৫ রান। অভিজ্ঞ রিয়াদ ৩৭ বলে ৪২ রান করলেও অধিনায়ক শুভাগত হোম (১৪), আরিফুল (১২) আর জাহিদউজ্জামান (১) হাত খুলে খেলতে পারেননি। তাই স্কোরলাইন বড় হয়নি। ২৫৫-তে আটকে গেছে। ঠিক প্রায় একই অবস্থায় আবাহনীর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর আফিফ হোসেন ধ্রুব অনেক বেশি হাত খুলে খেলে আবাহনীকে ঠিক জয়ের বন্দরে পৌঁছে দিয়েছেন। দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বির দ্বৈরথে জয়ী হলেও লিগ টেবিলে আবাহনীর অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। ৭ ম্যাচে ৫ জয়ে আকাশী হলুদ জার্সিধারীদের সংগ্রহ দাড়ালো ১০ পয়েন্ট। অন্যদিকে হোম ক্রিকেটে আজকের পরাজয়ে অবস্থার আরও অবনতি ঘটলো মোহামেডানের। এখন জয়ের চেয়ে পরাজয়ের পাল্লা ভারি হলো শুভগত-রিয়াদদের। ৭ ম্যাচে ৩ জয়ের বিপরীতে ৪ পরাজয়ে মোহামেডানের সুপার লিগ খেলার সম্ভাবনা গেল আরও কমে। এখন শেষ তিন ম্যাচের সবকটা না জিতলে সেরা ছয়ে জায়গা পাওয়া কঠিনই হবে সাদা কালোদের।
অন্যদিকে ইউল্যাব মাঠে শীর্ষে থাকা প্রাইম ব্যাংককে ১ উইকেট হারিয়ে লিগ টেবিলে অবস্থার উন্নতি ঘটালো শেখ জামাল। ৭ ম্যাচ শেষে ৬ জয় নিয়ে শেখ জামাল এক ম্যাচ কম খেলেও ধরে ফেললো প্রাইম ব্যাংককে। সর্বাধিক ৮ ম্যাচে দ্বিতীয় বারের মত হারের স্বাদ নেয়া এনামুল হক বিজয় আর নাসিরদের পয়েন্ট ১২-তেই বহাল থাকলো। শেখ জামালেরও পয়েন্ট ১২।