যশোরের চৌগাছা পৌর বিএনপির সম্মেলনে অনিন্দ্য ইসলাম অমিত: দেশের মানুষকে অভুক্ত রেখে উন্নয়নের নামে সরকার টাকা জমাচ্ছে বেগমপাড়ায়

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর) ॥ দেশে আজ এক ব্যক্তির শাসন চলছে, প্রশাসনকে ব্যবহার করে গায়ের জোরে অবৈধ এই সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে। দেশের ১৮ কোটি মানুষ আজ অভুক্ত অবস্থায় দিন যাপন করছেন, আর অনির্বাচিত সরকার উন্নয়নের নামে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা কানাডার বেগম পাড়ায় জমা করছেন। তারা বেশি দিন ক্ষমতায় থাকলে মানুষের কষ্ট আরও বেড়ে যাবে। একটি অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে সরকার দলীয় অনেকের জামানত বাজেয়াপ্ত হয়ে যাবে এই আশংকায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন দিতে তারা ভয় পাচ্ছে। লক্ষ কোটি মানুষের প্রানের দাবি একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, দলকে আরও সুসংগঠিত করে সেই দাবি আমাদের আদায় করতে হবে। গতকাল বিকেলে চৌগাছা ডিভাইন সেন্টারের সভাকক্ষে পৌর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারুন্যের অহংকার খুলনা বিভাগীয় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আলহাজ অনিন্দ্য ইসলাম অমিত একথা বলেন।

এসময় তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের জীবনের কোন মূল্য নেই, প্রতি দিনই মানুষ হত্যার শিকার হচ্ছেন। অজানা এক আতংকের মধ্যে দেশবাসি আজ চলাফেরা করছেন। সরকারের কারসাজিতে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট সব ধরনের পন্যের দাম কয়েক গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। যার কারনে দেশের স্বল্প আয়ের মানুষ আজ খেয়ে না খেয়ে দিন যাপন করছেন। এসব দিকে সরকারের কোন নজর নেই। অনির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে আগামী নির্বাচনে জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে বিএনপি কাজ করে যাচ্ছে। সামনে যে কোন আন্দোলনে সকলকে প্রস্তুত থাকার জন্য তিনি আহবান জানান।

চৌগাছা পৌর বিএনপির আহবায়ক সাবেক মেয়র সেলিম রেজা আওলিয়ারের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহবায়ক হাজী আব্দুল হালিম চঞ্চলের সঞ্চালনায় সম্মেলনে উদ্বোধক হিসেবে বক্তব্য দেন যশোর জেলা বিএনপির আহবায়ক বিশিষ্ঠ শিক্ষাবিদ অধ্যাপক নার্গিস বেগম। তিনি বলেন, চৌগাছাবাসি আজ ধন্য এই কারনেই যে, অবহেলীহ চৌগাছাকে থানায় রুপ দেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আর চৌগাছাকে পৌরসভায় রুপান্তরিত করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়া। আমরা জানি চৌগাছার মাটি বিএনপির ঘাটি সেই চৌগাছায় যশোরের ১৬ টি রাজনৈতিক ইউনিটের মধ্যে প্রথম সম্মেলন হচ্ছে। এই সম্মেলনে যারাই নেতৃত্বে আসবেন তারা দলকে আরও সুসংগঠিত করে স্পাত কঠিন আন্দোলনের জন্য সকলকে প্রস্তুত করবেন।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন খুলনা বিভাগীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ড, যশোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাড. সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন খোকন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এ্যাড. মোঃ ইসাহক, মিজানুর রহামন খাঁন, একেএম শরিফুদৌলা ছোটলু,

সিরাজুল ইসলাম, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক হাজী আব্দুল হালিম চঞ্চল, উপজেলা মহিলা দলের আহবায়ক আলেয়া বেগম, উপজেলা যুবদলের আহবায়ক আব্দুল মান্নান, সদস্য সচিব আরিফুল ইসলাম ওয়াসিম, ছাত্রদলের আহবায়ক জসিম উদ্দিন প্রমুখ। এসময় উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জহুরুল ইসলাম, যুগ্ম আহবায়ক ইউনুচ আলী, এমএ সালাম, চেয়ারম্যান মাসুদুল হাসান, কাউন্সিলর সাহিদুল ইসলাম, আনিছুর রহমান, মোবারক হোসেন, নাজমুজ্জামান খোকন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিকসহ জেলা, উপজেলা, পৌর বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সম্মেলনের প্রধান অতিথি অনিন্দ্য ইসলাম অমিত চৌগাছার মাটিতে পা রেখেই সোজা চলে যান পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের পাঁচনামনা মহল্লায়। সেখানে তিনি সাবেক পৌর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মরহুম সোহরাব হোসেনের কবর জিয়ারত করেন। এরপর তিনি মুল অনুষ্ঠানে ডিভাইন সেন্টারে আসেন।

পৌর বিএনপির একাধিক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রায় একযুগ পরে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, সংগত কারনে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক আনন্দোভাব সৃষ্টি হয়। যে কোন রাজনৈতিক দলের সম্মেলন মানেই আনন্দ, উচ্চাস। আমরা প্রশাসনের কাছে আবেদন করি উপজেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে পাইলট হাইস্কুলের মাঠে খোলা জায়গায় সম্মেলন করার জন্য। কিন্তু প্রশাসন আমাদের ওই মাঠে সম্মেলন করার অনুমতি দেয়নি। যার কারনে ঘরের চার দেয়ালের মাঝে ডিভাইন সেন্টারে সম্মেলন করতে হয়েছে।

প্রশাসনের নানা বাধা উপেক্ষা করে সম্মেলনে হাজার হাজার নেতাকর্মীর ঢল নামে। এতেই প্রমানিত হয় এদেশের মানুষ আর নিশিরাতের সরকারকে এক মিনিটের জন্যও ক্ষমতায় দেখতে চাইনা।