রাশিয়ায় লাইভ সংবাদে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ রাশিয়ায় লাইভ সংবাদ সম্প্রচারের সময় যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ করতে দেখা গেছে। সোমবার (১৪ মার্চ) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় দেশটির সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম ‘চ্যানেল ওয়ান’এ সংবাদ পড়ার সময় উপস্থাপকের পেছনে হঠাৎ করেই যুদ্ধবিরোধী প্ল্যাকার্ড হাতে উপস্থিত হন এক নারী। বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ উপস্থাপকের পেছনে বিক্ষোভকারী ওই নারীর প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘কোনো যুদ্ধ নয়, যুদ্ধ বন্ধ করো, এখানে প্রোপাগান্ডা (মিথ্যা প্রচারণা) ছড়ানো হচ্ছে, এসবে বিশ্বাস করো না’। বিক্ষোভকারী ওই নারীর নাম মেরিনা ওভসিয়ানিকোভা। তিনি ওই চ্যানেলের একজন সম্পাদক। এ ঘটনার পর পুলিশ তাকে আটক করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সংবাদ প্রযোজক লাইভ রেকর্ড বন্ধ করার আগে সংবাদে ওই নারীর কণ্ঠ শোনা যায়। সে সময় তিনি বলছিলেন, যুদ্ধকে না বলুন। যুদ্ধ বন্ধ করুন। লাইভ সংবাদে বিক্ষোভ প্রদর্শনের আগে ওভসিয়ানিকোভা একটি ভিডিও রেকর্ড করেন। সেখানে তিনি বলেন, ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ একটি অপরাধ। ক্রেমলিনের মিথ্যা প্রচারণায় তিনি লজ্জিত বলেও জানান। তিনি আরও বলেন, আমি লজ্জিত কারণ টেলিভিশনের পর্দায় আমাকে মিথ্যা বলতে হচ্ছে। আমি লজ্জিত যে আমরা রাশিয়ানদের মানুষ হত্যায় উদ্বুদ্ধ করছি। এ সময় তিনি রাশিয়ানদের যুদ্ধের বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু রুশ জনগণই পুতিনের এই পাগলামি বন্ধ করতে পারে। এমন সাহসী প্রতিবাদের পর ফেসবুকে প্রশংসায় ভাসছেন ওভসিয়ানিকোভা। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ক্রেমলিন সরকার রাশিয়ার সংবাদমাধ্যমগুলো কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। সেখানের প্রধান চ্যানেলগুলোতে স্বাধীন দৃষ্টিভঙ্গি বিরল। ইউক্রেনে রুশ হামলা নিয়ে সেখানকার গণমাধ্যমগুলো শুধু পুতিন সরকারের স্বেচ্ছাচারিতার সংবাদ প্রচার করে থাকে। ইউক্রেন আক্রমণের পর প্রবর্তিত নতুন এক গণমাধ্যম আইন মিডিয়ার স্বাধীনতাকে আরও খর্ব করেছে। মার্চের শুরুতে পাস হওয়া ওই আইন অনুযায়ী মস্কোর সামরিক পদক্ষেপকে ‘আক্রমণ’ বলা কিংবা এ সম্পর্কে ভুয়া সংবাদ প্রচার করাকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছে।
রাশিয়ার সরকারি গণমাধ্যমগুলোতে ইউক্রেন যুদ্ধকে বিশেষ সেনা অভিযান বলা হচ্ছে। ইউক্রেনকে আক্রমণকারী আখ্যা দিয়ে এসব চ্যানেলে বলা হয়, ইউক্রেন সরকার নব্য-নাৎসিদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের চাপের মধ্যে মস্কোর রেডিও স্টেশন ইকো এবং অনলাইন টিভি চ্যানেল ‘টিভি রেইন’সহ অন্য বেশ কয়েকটি স্বাধীন গণমাধ্যম রাশিয়ায় তাদের সম্প্রচার বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদের মধ্যে সংবাদপত্র নোভায়া গেজেটা নতুন সেন্সরশিপ আইনের লঙ্ঘন না করে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে সঠিক সংবাদ প্রচারের চেষ্টা করছে। রাশিয়ায় এরই মধ্যে বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের সাইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে ফেসবুক ও টুইটারের ওপর। সর্বশেষ গতকাল সোমবার ইনস্টাগ্রাম বন্ধ করে দিয়েছে মস্কো।