নব্বই বছরের ঝুনু সময় কাটান মাছ ধরে

0

স্টাফ রিপোর্টার, বাঘারপাড়া(যশোর)॥ নব্বই বছর বয়সের ঝুনু গোলদার সোজা হয়ে হাঁটতে পারেন না। বয়সের ভারে একেবারেই নুয়ে পড়েছেন। সংসারের কোনো কাজে সহযোগিতা করা তার পক্ষে অসম্ভব। বসে বসে খাওয়া আর অলস সময় কাটানোর কথা তিনি ভাবতেই পারেন না। তাছাড়া এভাবেও সংসারে সাহায্য করা হয়। তাইতো ঝুনু গোলদার সময় কাটান বড়শিতে মাছ ধরে।
বাঘারপাড়ার জামদিয়া ইউনিয়নের দোগাছি গ্রামের মৃত ধীরেন গোলদারের স্ত্রী ঝুনু গোলদার বেশিরভাগ সময় কাটান মাছ ধরে। মাছ ধরা তার এক প্রকার নেশা হয়েগেছে। এতে তার যেমন সময় কাটে, তেমনি সংসারের কিছুটা হলেও যোগান দিতে পারছেন। ছেলের সংসারে বসে বসেতো আর খাওয়া হচ্ছে না। এমনটাই বলছিলেন ঝুনু গোলদার। গতকাল মঙ্গলবার তার সাথে কথা হয়। এ সময় তিনি দোগাছি মোড়ের পাশে রাস্তার ধারে বসে বড়শিতে মাছ ধরছিলেন। কত বছর বয়সে তার বিয়ে হয়েছে এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন,‘কলিতো বিশ^াস হবেনাহানে তুমার। আট বছরের সময় বিয়ে অয়ছে। কিছুই বুজতাম না। বড় সংসারের কাজ করতে করতে শেষ অয়ে যাতাম। বারো বছরের সময় মা অইছি। প্রত্তোম সন্তান আমার মাইয়ে। সে আরো ১০ বছর আগে আজি(নানী) অইছে। বড়ো ছেলে শচীনও দাদু অইছে। আমার চার মায়ে আর দুই ছাওয়াল। আমি সংসারের কোন কাজকম্ম কত্তি পারিনে। তাই বসে বসে বশশি দিয়ে মাছ ধরি। যে কয়ডা পাই তাতি এক সাজ অয়ে যায়’।
সংসারের অন্য বিষয়ে প্রশ্ন করলেই বিরক্তভারে উত্তর দিয়ে ঝুনু গোলদার বলেন, ‘এতসব দিয়ে কি করবা। কনতি কী সমেস্স্যা হবেনে। এরপর ফোকলা হেসে বলেন, কউদি এতসব তুমি কী করবা। তুমি কিডা। দেখতিছোনা মাছে ঠুকাচ্ছে।’ সাংবাদিক পরিচয় দিতেই তিনি আবার বিরক্ত হয়ে বলে উঠলেন। ঝুনু গোলদার কথা বলছিলেন আর বড়শিতে শামুকের টুকরা লাগাচ্ছিলেন। মাঝে মধ্যে বড়শিতে মাছও উঠাচ্ছিলেন। কথার ফাঁকে তিনি জানান, প্রতিদিন এক দেড় পোয়া মাছ হয়। মাছের বেশিরভাগই পুটি। কিছু টাকি মাছও পান। তাকে প্রশ্ন করা হয়, এই বয়সে আপনি চোখে দেখতে পাচ্ছেন? প্রতি উত্তরে বলেন, ‘চোক আমার এ্যাহোনো ভাল আছে’।