চৌগাছার সুতায় তৈরী দড়ি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে॥ সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের

0

মুকুরুল ইসলাম মিন্টু চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় আধুনিক পদ্ধতি অবলম্বন করে সুতা থেকে তৈরী হচ্ছে দড়ি। বর্তমানে ছোট ছোট বেশ কয়েকটি কারখানায় অনেকেরই কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চৌগাছায় তৈরী দড়ি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এখানে অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন উদ্যোক্তারা।
চৌগাছা পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের অত্যান্ত নিরিবিলি একটি মহল্লা হচ্ছে কারিগরপাড়া। মহল্লার বাসিন্দাদের মূল পেশা হচ্ছে ব্যবসা ও কৃষিকাজ। কারিগরপাড়া মহল্লার বেশ কিছু যুবক সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে পাড়ি জমায় এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। সেখানে থেকে অনেকেই মুল কাজের পাশাপাশি দড়ি তৈরীর কাজকে রপ্ত করেন। দেশে ফিরে সেই যুবকের অনেকেই স্বল্প টাকা ব্যয়ে নিজ বাড়িতে তৈরী করেছেন দড়ি তেরীর কারখানা। পরিবারের সদস্যরা নিজেদের কারখানায় কাজ করে প্রতি দিনই বাড়িত রোজগার করছেন।
গতকাল সরেজমিন যেয়ে দেখা গেছে, জসিম উদ্দিন ও মন্টু মিয়ার হাতে তৈরী সুতার কারখানায় অন্তত ১৫ জন শ্রমিক কাজ করছেন। সেখানে কর্মরতদের অনেকেই নারী। নিজের সংসারের কাজ করার পাশাপাশি এই সুতার কারখানায় কাজ করে তারা বাড়তি আয় করে যাচ্ছেন। কারনখানার কাজে নিয়োজিত শ্রমিক আলী বক্্র, রাজিয়া সুলতানা, মরিয়ম বেগম, মহোন আলী বলেন, বাড়ির পাাশেই কারখানা হওয়ায় আমরা এখানে কাজ করে বেশ স্বাচ্ছন্দবোধ করি। নিজ সংসারে কাজ শেষ করে কারখানায় চলে আসি। এখানে দায়িত্ব পালন করে বাড়িতে যেয়ে আবার সংসারের কাজ করি। কিছুটা পরিশ্রম হলে তাতে সমস্যা হয়না।
কারখানা মালিক জসিম উদ্দিন বলেন, প্রথম দিকে ছোট পরিসরে একটি কারখানা তৈরী করি। সেখানে মোটামুটি লাভ হওয়ায় কারখানার পরিধি বৃদ্ধি করি। অপর মালিক মন্টু মিয়া বলেন, প্রায় ২ বিঘা জমি বাৎসরিক ১৮ হাজার টাকা লিজ নিয়ে আমরা কারখানা তৈরী করেছি। এ পর্যন্ত ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হয়েছে। সুতা তৈরীর জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই লাগেনা। বর্তমানে কারখানায় ৬টি মটর, ১২ জন শ্রমিক ও পরিমান মত সুতা নিয়ে কাজ চলছে। শ্রমিকদের ৫ থেকে ১২ হাজার টাকা মাসিক বেতন প্রদান করি। ঢাকার বিভিন্ন টেক্্রটাইল মিল থেকে সুতা সংগ্রহ করে সেই সুতা দিয়ে তৈরী হচ্ছে দড়ি। ১ কেজি দড়ি তৈরী করতে তাদের ব্যয় হয় ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, আর বাজারে পাইকারী বিক্রি হয় ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। চৌগাছায় তৈরী দড়ি পাশ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা উপজেলাসহ দেশের নানা অঞ্চলে যায়। সুতায় তৈরী দড়ি মূলত নতুন বাসাবাড়ি নির্মানের সময় ভারা ও আলমসাধু, নছিমন, করিমনে মালামাল বহনে ব্যবহার করা হয়। ক্ষুদ্র শিল্প উদ্যেক্তারা বলেন, কোন প্রশিক্ষন বা অন্যের পরামর্শে না নিজেদের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে এবং অল্প পুজি নিয়ে কারখানা প্রস্তুত করেছি। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এর পরিধি বৃদ্ধি করা সম্ভব হত। কারখানা বড় হলে এখানে অনেক বেকারদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হত।