বাঘারপাড়া ও শার্শায় বিএনপির ৮ জন আটক

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ শুক্রবার রাতে যশোরের বাঘারপাড়া ও শার্শায় বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৮ জনকে আটক করেছে পুলিশ। দুই উপজেলার নেতাদের অভিযোগ গত ২২ ডিসেম্বর যশোরে বিএনপির গণসমাবেশে অংশ নেয়ার পর থেকেই পুলিশ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে আটক করা শুরু করেছে।
বাঘারপাড়া : বাঘারপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক সাবেক পৌরমেয়র আব্দুল হাই মনাসহ যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে বাঘারপাড়া থানা পুলিশ তাদের নিজ বাড়িতে থেকে আটক করে। আটককৃত অন্য দুই জন হলেন দরজহাট ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোক্তাদির হোসেন টগর ও জহুরপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল মিশরী। বাঘারপাড়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক শামসুর রহমান জানান, আব্দুল হাই মনা একজন প্রবীণ বিএনপি নেতা। তিনি ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, হার্টজনিত রোগে আক্রান্ত। নিয়মিত চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে থাকতে হয়। শুক্রবার উপজেলা সদরের দোহাকুলা গ্রামের নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। এসময় একদল পুলিশ গিয়ে তাকে তুলে নিয়ে আসে। শামসুর রহমান আরো জানান, ওই রাতে পুলিশ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মশিয়ার রহমানসহ একাধিক বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানা দেয়। এসময় উপজেলার হাবুল্যা গ্রাম থেকে দরজহাট ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোক্তাদির হোসেন টগর ও জহুরপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল মিশরীকে আটক করে। পরে তাদেরকে যশোর কোতয়ালি থানা পুলিশের দায়ের করা একটি মামলায় আটক দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিকেলে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন বলে বিএনপি নেতা শামসুর রহমান জানান।
বাঘারপাড়া থানা যুবদলের আহবায়ক এখলাছ হোসেন জানান, ২২ ডিসেম্বর যশোর টাউন হল ময়দানের স্মরণকালের বৃহত্তম গণসমাবেশের পর থেকে পুলিশ বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছে। শুক্রবার উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক নাফিস ইকবাল ইসাসহ ছাত্রদল-যুবদলের একাধিক নেতাকর্মীর বাড়ি পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় যাদের বাড়িতে পায় তাদেরকে আটক করে। পুলিশে গ্রেফতারের ভয়ে নেতাকর্মীরা বাড়িতে থাকতে পারছেন না বলে তিনি অভিযোগ করেন।এ বিষয়ে বাঘারপাড়া থানার ওসি ফিরোজ উদ্দীন বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগে আটক করা হয়েছে। পুলিশ কাউকে বিনাকারণে গ্রেফতার করছেনা।
শার্শা : শার্শা উপজেলা মৎসজীবীদলের আহ্বায়কসহ বিএনপি ও যুবদলের পাঁচ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতদের যশোর কোতয়ালি থানার একটি নাশকতা মামলায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আটকের খবর শুনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির খুলনা বিভাগীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত তাদের খোঁজখবর নেন। শার্শা থানায় আটককৃতদের খোঁজ নেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুজ্জামান মধু। নেতাকর্মীরা জানান, গত ২২ ডিসেম্বর বিএনপির চেয়ারপার্সন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে যশোর বিএনপির গণসমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। ওই সমাবেশে অংশ নেওয়ার অভিযোগে শার্শা ও বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ শুক্রবার দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে ৫নেতাকর্মীকে আটক করে।আটককৃতরা হলেন, শার্শা উপজেলা মৎসজীবী দলের আহ্বায়ক বেনাপোল উত্তর কাগজপুকুর গ্রামের বাসিন্দা সোহারাব হোসেন (৫৫), যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক বেনাপোল গাতিপাড়া গ্রামের জুলফিকার আলী জুলু (৫০), ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাগআঁচড়া গ্রামের আমিনুর রহমান মনি(৫০), সাতমাইল মেঠোপাড়ার হারুন মোল্লা (৪০) ও গোড়পাড়া গ্রামের হারুন খা ( ৫৫)। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক খায়রুজ্জামান মধু অভিযোগ করে বলেছেন , গত ২২ ডিসেম্বর যশোরে বিএনপির সমাবেশে যাওয়ায় বিভিন্ন নেতাকর্মীর নামের তালিকা করে পুলিশি অভিযান শুরু হয়েছে। যে কারণে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের শতাধিক নেতাকর্মী বাড়ি ছাড়া হয়েছে। তিনি আটককৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেছেন। এ বিষয়ে শার্শা থানার অফিসার ইনচার্জ বদরুল আলম খান বলেন, ‘আটককৃতদের যশোরের কোতয়ালি থানায় একটি নাশকতা মামলায় আটক করা হয়েছে।’