ফুলতলায় কৃষক খাদ্যগুদামে ধান দিতে অনাগ্রহী # সংগ্রহমূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য মণে ৪শ’ টাকা বেশি

0

শামসুল আলম খোকন, ফুলতলা (খুলনা) ॥ ফুলতলায় গত সোমবার থেকে সরকারিভাবে আমন ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। তবে ধানের সংগ্রহমূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি থাকায় কৃষকেরা গুদামে ধান দিতে আগ্রহী হচ্ছেন না। উপজেলা খাদ্যগুদাম কর্মকর্তা রাশেদ আহম্মেদ আল রিপন জানান, এ বছর ফুলতলায় ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা সরকারিভাবে ধার্য করা হয়েছে ধান ৭৫ মেট্রিক টন ও চাল ৩হাজার ২১৬ মেট্রিক টন। ধানের সংগ্রহ মূল্য ২৭ টাকা। হাটে বিক্রি হচ্ছে ৩৭ টাকা। উপজেলা কৃষি কর্মকতা কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, কৃষক বাজারে বেশি দাম পেলে তারা সেখানে ধান বিক্রি করবেন। এটা তাদের সিদ্ধান্ত। সরকারি খাদ্যগুদামে ধান-চাল বিক্রি করতে হলে সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক কৃষকদের বিক্রি করতে হবে।
জাতীয় কৃষক সমিতির উপজেলা সভাপতি রেজোয়ান আলী খান ও সাধারণ সম্পাদক মাস্টার সন্দিপন রায় বলেন, সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক খাদ্য গুদামে ধান দিতে হলে কৃষককে নানা সমস্যায় পড়তে হয়। বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী একজন কৃষককে ধান চাষে অনেক খরচ হয়। ধান চাষে সার, কীটনাশকসহ নানা সরঞ্জামের প্রয়োজন হয়। এছাড়াও ধান রোপণ ও কাটতে চড়া দামে শ্রমিকও খাটাতে হয়। এখন সরকারি মূল্য ধরা হয়েছে কেজিপ্রতি ২৭টাকা। অথচ বর্তমান বাজারে এটি প্রায় ৩৭ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে এত কম দামে গুদামে ধান দিলে কৃষকেরা ক্ষতির মুখে পড়বেন। সরকার কৃষকের বিষয়টি বিবেচনা করে মূল্য নির্ধারণ করলে তারা ক্ষতির হাত থেকে মুক্তি পাবেন।
ফুলতলার গাড়াখোলা এলাকার কৃষক সবুর শেখ ও রোস্তম শেখ বলেন, বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী খাদ্যগুদামে ধানের দাম অনেক কম। তাই আমাদের এলাকার বেশির ভাগ কৃষক এবার খাদ্যগুদামে ধান-চাল বিক্রি করতে রাজি না। কারণ আমাদের ধান-চাল উৎপাদনে যা খরচ হয়েছে, তাতে গুদামে বিক্রি করলে অনেক লোকসান হবে। গত বছর ফুলতলা খাদ্যগুদামে ধান-চালের মূল্য কম থাকায় চালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও ধানের সরকারি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় কর্তৃপক্ষ। তবে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, গত মৌসুমে ধান-চালের মূল্য কম থাকায় অনেক কষ্টে ধান ও চালের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা হয়। চলতি মৌসুমে সরকার ২০২২ এর ২৮ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত ধান ও চাল সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করেছে। এ সময়ের মধ্যেই ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।