দেশের বাজারে করোনার মুখে খাওয়ার ওষুধ ইমোরিভির

0

ণোকসমাজ ডেস্ক॥ করোনায় মুখে খাওয়ার ওষুধ মলনুপিরাভির জরুরি বাজারজাতকরণ শুরু করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানি বেক্সিমকো ফার্মা। বাজারে ওষুধটির জেনেরিক সংস্করণের নাম দেয়া হয়েছে ‘ইমোরিভির’। এ ছাড়া, এসকেএফ ও স্কয়ার ফার্মাকে মলনুপিরাভির বাজারজাতকরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে। গতকাল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, দেশে অনুমোদিত ১০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস ওষুধটি এরইমধ্যে বাজারজাতকরণ শুরু করেছে। তিনি বলেন, মঙ্গলবার এসকেএফ ও স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসও ওষুধ তৈরি ও বাজারজাতের অনুমোদন পেয়েছে ।
মহাপরিচালক বলেন, এই প্রথম মুখে খাওয়ার কোনো অ্যান্টিভাইরাল আমাদের দেশে আসলো। মলনুপিরাভির এরইমধ্যে যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেয়েছে। সোমবার আমরা বেক্সিমকোকে এবং মঙ্গলবার এসকেএফকে ইমার্জেন্সি ইউজ এবং মার্কেটিং অথরাইজেশন দিয়েছি। আমরা মনে করি, এই ওষুধ করোনাভাইরাস মহামারি দূর করতে ভূমিকা রাখবে। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে ‘মেধাস্বত্ব ছাড়ের’ সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো দ্রুত এই ওষুধ আনতে পারছে বলে তিনি জানান। প্রতিদিন দুইবেলা চারটি করে আটটি ক্যাপসুল খেতে হবে। এই ওষুধের কোর্স চলবে ৫ দিন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এই ওষুধ খেতে হবে বলে জানিয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, এগুলো অবশ্যই টিকার বিকল্প নয়। টিকা নিতে হবে। তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট খেতে হবে। ওষুধটির জটিল কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বলে জানিয়েছেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। তিনি বলেন, ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে স্বাভাবিক কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশে ১৮ বছরের বেশি বয়সী রোগীরা এই ওষুধ ব্যবহার করতে পারবেন। ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, অনুমোদনের তালিকায় আছে আরও সাতটি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হলো-জেনারেল, বিকন, রেনেটা, ইনসেপটা, একমি, হেলথ কেয়ার ও পপুলার ফার্মাসিউটিক্যালস।
বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস চিফ অপারেটিং অফিসার (সিওও) রাব্বুর রেজা জানিয়েছেন, অনুমোদন পাওয়ার পর তারা ওষুধটির বাজারজাত শুরু করেছেন। ইতিমধ্যে কিছু ফার্মেসিতে ওষুধ পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, গত জুন থেকে ওষুধটি নিয়ে কাজ করছে বেক্সিমকো ফার্মা। সোমবার ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের অনুমোদন পাওয়ার পর আমরা ঢাকার ফার্মেসিগুলোতে ওষুধটি দিয়েছি। মঙ্গলবার ডাক্তারদের সঙ্গে ওষুধটির বিষয়ে কমিউনিকেশন করা হয়েছে। তিনি জানান, মঙ্গলবার দেশের বিভিন্ন বিভাগে ওষুধটি পাঠানো হয়। রাব্বুর রেজা বলেন, এখন ২০০ মিলিগ্রাম এমোরিভির বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিটি ক্যাপসুল ৭০ টাকা দরে বিক্রি করবেন তারা। পরে ৪০০ ও ৮০০ মিলিগ্রামের অনুমোদন পেলে তখন খরচ কমে আসবে। যুক্তরাষ্ট্রের দুই কোম্পানি মার্ক শার্প অ্যান্ড ডোম (এমএসডি) ও রিজেবাক বায়োথেরাপিউটিক যৌথভাবে তৈরি করেছে মলনুপিরাভির নামের মুখে খাওয়ার এই ওষুধ। এর আগে পরীক্ষামূলক প্রয়োগে তাদের তৈরি ওষুধ মলনুপিরাভির মারাত্মক ঝুঁকিতে থাকা কোভিড রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার ৫০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারছে বলে প্রমাণ মিলেছে। গত বৃহস্পতিবার করোনাভাইরাসের উপসর্গের চিকিৎসায় মুখে খাওয়ার প্রথম ওষুধটি যুক্তরাজ্যের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথকেয়ার রেগুলেটরি এজেন্সির (এমএইচআরএ) অনুমোদন পেয়েছে। ইউরোপিয়ান মেডিসিন এজেন্সি ও যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) ওষুধটি অনুমোদন দেয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা করছে।