পাটুরিয়া ঘাটে এসে ডুবে গেল গাড়িসহ ফেরি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় ৫ নম্বর ফেরি ঘাটে গাড়িসহ আমানত শাহ নামে একটি ফেরি পদ্মা নদীতে ডুবে গেছে। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন (বিআইডবি¬উটিসি)-র উপ মহাব্যবস্থাপক জিল¬ুর রহমান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট থেকে যানবাহন নিয়ে পাটুরিয়া ঘাটে আসে ফেরিটি। ফেরি থেকে দুই থেকে তিনটি যানবাহন নামার পরপরই ফেরিটি ডুবে যায়। জানা যায়, দুর্ঘটনায় পড়ার সময় ফেরি আমানত শাহে ১৭টি পণ্যবাহী ট্রাক ছিল। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ায় দুর্ঘটনায় পড়া ফেরি শাহ আমানত ঘাটে ভেড়ার আগেই পানি উঠতে শুরু করেছিলেন বলে জানিয়েছেন দুই যাত্রী। অমল ভট্টাচার্য্য নামে যশোরের মনিরামপুরের এক ব্যক্তি সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে ফরিদপুর থেকে দৌলতদিয়ায় এসে ফেরি শাহ আমানতে উঠেছিলেন নদী পার হওয়ার জন্য।ফেরি উল্টে যাওয়ার সময় তিনি কোনোক্রমে উদ্ধার পেলেও মোটরসাইকেলটি হারিয়েছেন। ঘটনার বিবরণ দিয়ে তিনি বলেন, “ফেরিতে বেশিরভাগ ছিল মালবোঝাই ট্রাক আর কভার্ড ভ্যান। আমরা মোটর সাইকেল নিয়ে ছিলাম পাঁচ-সাতজন। ফেরি এপারে ঘাটের কাছে আসার পর এখানে যারা ফেরি কন্ট্রোল করে, তারা চিৎকার করছে যে, ফেরিতে পানি ঢুকছে, পানি ঢুকছে।” তখন নিজেও ফেরিতে পানি উঠতে দেখেন জানিয়ে অমল বলেন, “আমি তাকিয়ে দেখি আস্তে আস্তে ফেরিটা ডান দিকে কাত হচ্ছে।ৃ আমরা চিন্তা করছি ফেরি কখন দাঁড়াবে। কিন্তু যখনই দাঁড়াতে গেছে, তখন আরও কাত হয়ে গেছে। “ফেরি ঘাটে ভেড়ার পর দুইটা গাড়ি সম্ভবত পার হয়েছে। আমার সামনে একটা মোটর সাইকেল ছিল। আমি দেখলাম যে সেই মোটর সাইকেলটা অলরেডি ট্রাকের নিচে চলে গেছে। উনি কোনোমতে গিয়ে পার হয়ে চলে আসছেন। আমি মোটর সাইকেল ছেড়ে দিলাম, গাড়ি চলে গেল (ডুবে গেল)। আমিও তখন ডুবে গেছি। আর সাঁতার কাটতে পারছিনে। তখন জুতো খুললাম।” অমল বলেন, জুতা খোলার পর তিনি ফেরিতে একটি কভার্ড ভ্যানের ওপরে উঠে পড়েন। “তখন আমি অলরেডি পানিও খেয়েছি। দম আর নিতে পারছিনে। ইন দ্য মিন টাইম একটা দড়ি আমাকে দিয়েছে। তো দড়ি ধরছি। কিন্তু দড়িতে কভার করতে পারছিনে। পরে দেখি একটা চেইন ঝুলতেছে। চেইন ধরে কোনোমতে আস্তে আস্তে পার হওয়ার পরে আমাকে পাঁচ-সাতজনে টেনে নিয়ে গেছে। পরে আমি টের পাইনি।” ফেরিতে যাত্রী কেমন ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভেতরে ড্রাইভার, হেলপার, ফেরিওলারা ছিল। অন্যান্য যাত্রী খুব একটা বেশি ছিল না।” সুজন হোসেন নামে আরেক যাত্রী জানালেন, তার বাড়ি যশোর সদর উপজেলায়, চাকরি করেন একটি প্রাইভেট কোম্পানিতে। তিনিও মটরসাইকেল নিয়ে দৌলতদিয়া থেকে ঢাকায় যাচ্ছিলেন। ঘাটে পৌঁছানোর আগে আগে ফেরিতে পানি উঠতে শুরু করে জানিয়ে ৪০ বছর বয়সী সুজন বলেন, “ঘাটে লাগার পর কয়টা পিকআপ নেমে যায়। কিন্তু আমার মোটর সাইকেলটা নদীতে পড়ে যায়। আমি লাফ দিয়ে সাঁতরে তীরে উঠি।” কেন এই দুর্ঘটনা ঘটল, সে বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি বিআইডবি¬উটিসি বা ফায়ার সার্ভিস। তবে শিবালয় থানার ওসি ফিরোজ কবির বলেছেন, ফেরির নিচে যে ডাম্প (ফাঁকা অংশ) থাকে, সেখানে ফুটো হয়ে পানি ঢোকায় নৌযানটি উল্টো যায় বলে তারা ধারণা করছেন।