আফগানিস্তানকে ‘ইসলামিক এমিরেট’ ঘোষণা দিয়ে নতুন সরকার গঠন তালেবানদের

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ আফগানিস্তানকে ‘ইসলামিক এমিরেট’ ঘোষণা দিয়ে নতুন সরকার গঠন করেছে তালেবানরা। তত্ত্বাবধায়ক এ সরকারের প্রধান করা হয়েছে মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ’কে। তাকে প্রধান করে আজ ঘোষণা করা হয়েছে নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মন্ত্রীপরিষদ। তবে নবগঠিত এই সরকারে মন্ত্রী পদে কোনো নারীর নাম ঘোষণা করা হয়নি। এমনকি নারী বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে কে থাকবেন তাও ঘোষণা করা হয়নি। কিছুক্ষণ আগে সংবাদ সম্মেলনে তালেবান মুখপাত্র জাবিহউল্লাহ মুজাহিদ এ ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ সরকারের উপনেতা বা ডেপুটি লিডারের দায়িত্ব পালন করবেন আবদুল গণি বারাদার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করবেন সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। তিনি হাক্কানি মিলিট্যান্টদের নেতা। যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের ওয়ান্টেড তালিকায় রয়েছে তার নাম। অন্যদিকে তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ওমরের ছেলে মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুবকে দেয়া হয়েছে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব। হায়বাতুল্লাহ বদ্রিকে বানানো হয়েছে ভারপ্রাপ্ত অর্থমন্ত্রী। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা ও বিবিসি। কাবুল থেকে আল জাজিরার সাংবাদিক চার্লস স্ট্র্যাটফোর্ড বলছেন, এখন পর্যন্ত যাদের নাম ঘোষণা করেছেন মুজাহিদ, তারা সবাই পুরনো মুখ। তিনি আরো বলেছেন, এসব ব্যক্তির বেশির ভাগই প্রকৃতপক্ষে পস্তুন উপজাতির। তবে এক্ষেত্রে বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর ব্যাপক অংশগ্রহণ বিবেচনা করা হয়নি বলে সমালোচকরা বলছেন। চার্লস স্ট্র্যাটফোর্ড বলেছেন, পাঞ্জশির উপত্যকা নিয়ে মুজাহিদ যে মন্তব্য করেছেন, তা ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি করেছে। ওই উপত্যকায় প্রধানত তাজিক সংখ্যালঘু জাতির বসবাস। কিন্তু মুজাহিদ তাদের উদ্দেশে বলেছেন, তাজিকরা যেখানেই থাকুন না কেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই। আমাদের ভবিষ্যত প্রশাসনে তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে মুজাহিদ আবারো বলেছেন, তারা যে সরকার গঠন করেছেন তা শুধু ‘ভারপ্রাপ্ত’ সরকার। তারা দেশের অন্য অংশের জনগণকে এর অংশ করার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। এখানে উল্লেখ করার বিষয় হলো, আফগানিস্তানে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা প্রেসিডেন্ট আশরাফ গণির সরকারকে উৎখাত করে গত মাসে ক্ষমতা দখল করে তালেবানরা। তারা সবার অংশগ্রহণমূলক একটি সরকার গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। বলেছিল, আফগানিস্তানের সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে। এমন কি নারীরাও তাতে যুক্ত থাকবেন। বিবিসি লিখেছে, তালেবানদের এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদেরই উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে আবদ্ধ। তবে মোল্লা হায়বাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এই সরকারে কোনো ভূমিকা আছে কিনা এখনও তা বলেনি তারা। এমনকি গত মাসে তালেবানরা ক্ষমতা নেয়ার পর তাকে প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। এমনকি তার কণ্ঠও শোনা যায়নি। তালেবানদের এই সুপ্রিম কমান্ডার আখুন্দজাদা রয়েছেন দলটির রাজনৈতিক, সামরিক ও ধর্মীয় বিষয়ক চার্জে। ওদিকে ১৯৯৪ সালে চারজন নেতা মিলে প্রতিষ্ঠা করেন তালেবান গ্রুপটি। এর মধ্যে অন্যতম আবদুল গণি বারাদার। তাকে নতুন প্রশাসনের ডেপুটি প্রধান বানানো হয়েছে।