চৌগাছায় টিআর-কাবিখায় সোলিং করা হলো ৯ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা

0

এম এ রহিম চৌগাছা (যশোর)॥ যশোরের চৌগাছায় টিআর-কাবিখায় সোলিং করা হলো ৯ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা। ২০২০-২১ অর্থ বছরের টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর (কাবিখা) টাকায় দ্রুত রাস্ত পাকা করে জনভোগান্তি দূর করতে এ কর্মসুচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি অর্থের অপচয় রোধে গ্রামের কাঁদাযুক্ত রাস্তাগুলি ফ্লাট সোলিং করা হচ্ছে। এই উদ্যোগ নেয়ায় এলাকাবাসী সাধুবাদ দিচ্ছেন স্থানীয় এমপি ও উপজেলা প্রশাসনকে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, উপজেলা পর্যায়ের রাস্তা পাকা করা হয় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), উপজেলা পরিষদের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) এবং ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) মাধ্যমে। এরমধ্যে এলজিইডি বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা পিচ দিয়ে পাকা করেন। আর এডিপি এবং এলজিএসপির অর্থে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়াসহ সামাজিক অন্যান্য উন্নয়নের পাশাপাশি ক্ষুদ্র একটি অংশ দিয়ে গ্রামের রাস্তাগুলো ফ্লাট সোলিং (ইট বিছিয়ে পাকা) করা হয়। ফলে গ্রামের কাঁদাযুক্ত রাস্তা উন্নয়নে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। সে কারণে মাঠ থেকে কৃষকের উৎপাদিত ফসল ঘরে তুলতে বা বাজারজাত করতে নানা ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
অন্যদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের মাধ্যমে টেস্ট রিলিফ (টিআর) এবং কাজের বিনিময়ে খাদ্য বা টাকা (কাবিখা/কাবিটা) কর্মসূচির ৭০ শতাংশ দিয়ে রাস্তা পাকা করার সুযোগ থাকলেও আগে কোন সংসদ সদস্য বা উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ নেননি। ফলে সে টাকা দিয়ে শুধুমাত্র মাটির কাজের নামে লুটপাট করে সরকারি অর্থের অপচয় হয়েছে। সরকারি অর্থের এই অপচয় রোধ এবং গ্রামের অধিক কাঁদা হওয়া রাস্তাগুলি দ্রুত উন্নয়ন করতে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ মেজর জেনারেল (অব) অধ্যাপক ডাক্তার নাসির উদ্দিনের পরামর্শে টিআর-কাবিখার টাকায় রাস্তা ফ্লাট সোলিং করার সিদ্ধান্ত নেন চৌগাছা উপজেলা প্রশাসন। তাই ২০২০-২১ অর্থ বছরে টিআর ও কাবিখার ১ কোটি ৫৯ লক্ষ ৭৭ হাজার টাকায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৮ হাজার ৮৪০ মিটার অর্থাৎ ৮.৮৪ কিলোমিটার গ্রামীণ কাঁচা রাস্তা ফ্লাট সোলিং করা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) ইশতিয়াক আহমেদ বলেন গত (২০২০-২১) অর্থ বছরে কাবিখার বিশেষ (সংসদ সদস্যের) বরাদ্দে ৭৩ লক্ষ টাকায় ৩০টি রাস্তার ১২ হাজার ফুট এবং সাধারন বরাদ্দে ৫০ লক্ষ ১৭ হাজার টাকায় ২৬টি রাস্তার ১০ হাজার ৪০০ ফুট সোলিং করা হয়। এছাড়া সংসদ সদস্যের টেস্ট রিলিফের (টিআর) ৩৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকায় ৩৩টি রাস্তার ৬ হাজার ৬০০ ফুট সোলিং করা হয়েছে। তিনি বলেন সংসদ সদস্য ও ইউএনও মহোদয়ের পরামর্শ ও দৃঢ় অবস্থানের কারনে পাকা করণ (ফ্লাট সোলিং) করা গেছে। তিনি আরও বলেন, সুযোগ থাকা সত্বেও আগে টিআর-কাবিখার অর্থে শুধু মাটির কাজই করা হতো। রাস্তা পাকা করা হয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রকৌশলী এনামুল হক বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী টিআর-কাবিখা বরাদ্দের ৭০শতাংশ পর্যন্ত ফ্লাট সোলিং করার সুযোগ রয়েছে। এমপি মহোদয়ের পরামর্শে নীতিমালার আলোকে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নে বর্ষাকালে বেশি কাঁদা হওয়া রাস্তাগুলি সোলিং করা হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।’ চৌগাছা পাবলিক লাইব্রেরীর সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেন, এটা প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এজন্য এমপি ও ইউএনওকে চৌগাছাবাসীর পক্ষে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আরও বলেন, আগে কখনও টিআর-কাবিখার টাকায় রাস্তা পাকা হয়নি। মাটির কাজের নামে লুটপাট’ই হতো। উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য যশোর এমএম কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল আলম বলেন, আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন সরকারে আছে। আগেও দলের এবং অন্যদলের এমপি ছিলেন। তখন টিআর-কাবিখা’য় রাস্তা পাকা করা হয়নি। এমপি মহোদয়ের অনড় অবস্থানের কারনে এবার উপজেলার প্রায় ৯ কিলোমিটার রাস্তা পাকা হয়েছে। এভাবে উন্নয়ন করা হলে দ্রুত নেত্রীর ঘোষণা ‘গ্রাম হবে শহর’ বাস্তবায়ন সম্ভব হবে।