বিরোধীদের স্লোগান, নতুন মন্ত্রীদের পরিচয় করাতে পারলেন না মোদি

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ নতুন নিয়োগ দেয়া মন্ত্রীদের পরিচয় করিয়ে দিতে পারলেন না ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি আজ সোমবার পার্লামেন্টের বর্ষাকালীন অধিবেশনে এসব মন্ত্রীকে পরিচয় করিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিরোধী দলের হট্টগোল ও স্লোগানে তা ব্যর্থ হয়। মারাত্মক এক তিক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় পার্লামেন্টের ভিতরে। ফলে স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত লোকসভা এবং তিনটা পর্যন্ত রাজ্যসভার অধিবেশন মুলতবি ঘোষণা করা হয়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। রীতি অনুযায়ী অধিবেশন শুরুর আগে তিনি বিরোধী দলের প্রতি অনুরোধ জানান কঠোর প্রশ্ন করার জন্য। কিন্তু পার্লামেন্টে এসব প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য সরকারকে সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানান মোদি।
এক পর্যায়ে তিনি নতুন মন্ত্রীদেরকে পরিচয় করিয়ে দেয়া শুরু করেন। কিন্তু চালের দাম এবং কৃষকদের বিক্ষোভ নিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন বিরোধীরা। এর ফলে নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্য মাঝপথে থামিয়ে দেন। এ সময় তিনি বলেন, সম্ভবত কিছু মানুষ এটা জেনে খুশি হতে পারেননি যে, কৃষকের ছেলেরা মন্ত্রী হোন। এ জন্যই তারা এসব মন্ত্রীকে পরিচয় করিয়ে দিতে দিচ্ছেন না। বিরোধীদের এমন অবস্থানের সমালোচনা করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তিনি বলেন, তার পার্লামেন্টারি ক্যারিয়ারের ২৪ বছরে এমন ঘটনা এটাই প্রথম। বিরোধী দল এবং ট্রেজারির মধ্যে সুস্থ্য সম্পর্ক থাকা উচিত। যদি নতুন ৫০ জন মন্ত্রীর মধ্যে একজনকে বা সবাইকে হাউজে পরিচয় করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী তার কথা শোনা উচিত পার্লামেন্টের। কিন্তু যা ঘটেছে তা দুঃখজনক। তিনি আরো বলেন, বর্ষাকালীন অধিবেশনের প্রথম দিনে বিরোধী দলীয় এমপিরা যে আচরণ করেছেন তার নিন্দা জানাই। লোকসভা এবং রাজ্যসভায় আমরা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছি। পার্লামেন্টের বাইরে সাংবাদিকদের সঙ্গে পরে কথা বলেন মোদি। তিনি বলেন, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তিনি পার্লামেন্টে করোনা মহামারি নিয়ে আলোচনা করতে চান।
কিন্তু গত রাতেই বিতর্ক ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষোভ দেখা দেয়। বলা হয়, ভারতীয় কিছু মন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতাদের এবং সাংবাদিকদের ডাটাবেজ হ্যাক করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে ইসরাইলের স্পাইওয়্যার পেগাসাস। কিন্তু এই প্রযুক্তিটি ভারতে শুধু সরকারের হাতে আছে। ফলে আজ সোমবার সকালে কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী লোকসভায় বলেছেন, এর মধ্য দিয়ে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাকে হুমকিতে ফেলা হয়েছে। আমি অবশ্যই এই ইস্যু পার্লামেন্টে তুলে ধরবো। ইঙ্গিত করা হচ্ছে, যেহেতু পেগাসাস শুধু ভারত সরকারের হাতে আছে, তাই ভারতীয় রাজনীতিক বা সাংবাদিক- যাদের বিরুদ্ধেই হ্যাক করা হোক না কেন, তা করেছে সরকার বা তার কোনো এজেন্ট। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তারা বলেছে, সরকার এই স্পাইওয়্যার দিয়ে সুনির্দিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নজরদারি করেছে এমন কোনো দৃঢ় প্রমাণ বা সত্য নেই।
আজকের পার্লামেন্টের উভয় কক্ষেই পেট্রোলের দাম বৃদ্ধি, কৃষি আইন বাতিল, টিকার সমাধান, অবনতিশীল অর্থনীতি, এমপিএলএডি ফান্ড পুনঃস্থাপন এবং কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক দুর্বলতা নিয়ে ৬টি নোটিশ উত্থাপন করে তৃণমূল কংগ্রেস।