নারীদের আশান্বিত করছে না বাজেট

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা। নারী অধিকার কর্মীরা বলছেন, এবারের বাজেট চলতি অর্থবছরেরই ধারাবাহিকতা। স্যানিটারি প্যাডের ওপর ভ্যাট কমানো, উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় এসব ইতিবাচক উদ্যোগ থাকলেও বড় কোনও পরিবর্তন নেই। বাজেটে নারীর স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে স্থানীয় পর্যায়ে স্যানিটারি ন্যাপকিনের ওপর ভ্যাট অব্যাহতির প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী। নারী উদ্যোক্তারা আয়করেও ছাড় পাচ্ছেন। নতুন বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০ লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বৃহস্পতিবার বাজেট পেশ করার সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, চলতি অর্থবছরে সর্বাধিক দারিদ্র্যপ্রবণ ১১২টি উপজেলায় বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীকে শতভাগ বিধবা বিবেচনা করে ভাতা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছর থেকে আরও ১৫০টি উপজেলায় এ কার্যক্রমে উপকারভোগীর কভারেজ বিদ্যমান নীতিমালা অনুযায়ী প্রাপ্য শতভাগ বিধবা ও স্বামী নিগৃহীতা নারীকে অতি উচ্চ ও উচ্চ দারিদ্র্যভুক্ত গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। এতে ৪ লক্ষ ২৫ হাজার জন নতুন উপকারভোগী যোগ হবে এবং এ খাতে ২৫৫ কোটি টাকা অতিরিক্ত বরাদ্দ প্রদান করা হবে।
কেমন বাজেট হলো—এমন প্রশ্নে উই ক্যানের সমন্বয়ক জিনাত আরা হক বলেন, ‘স্যানিটারি ন্যাপকিনের দাম কমানোটা ইতিবাচক। কিন্তু এখন মেনুস্ট্রুলার কাপের দাম নিয়ে ভাবার সময়। আমাদের মধ্যে যুগোপযোগী পরিকল্পনা কম। তারপরও মনে করি এটুকু উদ্যোগ নেওয়াটা ইতিবাচক।’ বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ‘বাজেট কমেনি এটা ঠিক। নারীর জন্য আলাদা করে নতুন কিছু চোখেও পড়েনি। কোভিডে নারীর অবস্থা সবচেয়ে ঝুঁকিতে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ঝরে পড়াদের মধ্যে মেয়ে শিক্ষার্থী বেশি। তাদের জন্য কী করা যাবে সেই পরিকল্পনা দরকার। আমার কাছে মনে হয়েছে এই বাজেট ব্যবসায়ীদের জন্য।’ তিনি আরও বলেন, সবচেয়ে বেশি উৎসাহ জোগানো উদ্যোগ হলো পিছিয়ে পড়া তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর চাকরির ব্যবস্থায় বিশেষ ছাড় দেওয়া। কিন্তু তার আগে এদের পড়াশোনা নিশ্চিত করতে হবে। তা নিয়ে কিন্তু কোনও উদ্যোগ নেই।’ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক বিদিশা হক বলেন, ‘এই বাজেট চলতি অর্থবছরেরই ধারাবাহিকতা। আকার-ঘাটতি সবই আগের মতো। স্যানিটারি ন্যাপকিনে ছাড় ইতিবাচক এ কারণে যে এটাকে বিলাস পণ্য ভাবা হচ্ছে না। নারী উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করা হয়েছে, তবে ট্যাক্স প্যাকেজ বদলায়নি। গত বছরের বরাদ্দ সুবিধা- যেমন সামাজিক নিরাপত্তা, ভাতার আওতা বাড়ছে, কিন্তু মাথাপিছু বরাদ্দ বাড়েনি।’