যে কারণে পাকিস্তানের কোচ হতে চান না ওয়াসিম আকরাম

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ক্রিকেট ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা ফাস্ট বোলার পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম। খেলোয়াড়ি জীবনে বাঁহাতি পেস বোলিংয়ে গতির সঙ্গে সুইংয়ের দুর্দান্ত মিশেলে রীতিমতো অপ্রতিরোধ্য ছিলেন ওয়াসিম। যার প্রমাণ মেলে তার সমৃদ্ধ বোলিং পরিসংখ্যানেও। শুধু বোলার হিসেবেই নয়, অধিনায়ক হিসেবেও লম্বাসময় পাকিস্তান দলকে সার্ভিস দিয়েছেন ওয়াসিম। ইমরান খানের পর পাকিস্তানকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১০৯টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। কিন্তু কোচ হিসেবে কখনও পাকিস্তান দলে দেখা যায়নি এ কিংবদন্তি খেলোয়াড়কে। অথচ ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক লিগগুলোতে ঠিকই বোলিং কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন ওয়াসিম। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কলকাতা নাইট রাইডার্স কিংবা নিজেদের পাকিস্তান সুপার লিগে ইসলামাবাদ ইউনাইটেড, মুলতান সুলতানস এবং করাচি কিংসের ডাগআউটে বোলিং কোচ হিসেবে দেখা গেছে তাকে। তাহলে পাকিস্তান জাতীয় দলে কখনও কোচ হননি কেনো ওয়াসিম? এর পেছনে রয়েছে অন্যরকম একটি কারণ। যার দায় এড়াতে পারবে না পাকিস্তানে উগ্র ক্রিকেট সমর্থকরা। যারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাজেভাবে হেনস্থা করে থাকেন দলের খেলোয়াড় ও কোচদের। এ কারণেই মূলত পাকিস্তানের কোচ হতে চান না ওয়াসিম। এর বাইরে পারিবারিক কারণও জানিয়েছেন তিনি। ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ওয়াসিম বলেছেন, ‘জাতীয় দলের কোচ হলে বছরে ২০০ থেকে ২৫০ দিন ব্যস্ত থাকতে হয় দলকে নিয়ে। সেটা এক ভয়ানক কঠিন কাজ। আমার মনে হয় না, পাকিস্তান বা নিজের পরিবার ছেড়ে এতদিন বাইরে থাকতে পারব।’ জাতীয় দলের কোচ না হলেও, স্থানীয় বোলারদের জন্য নিজের সাহায্যের হাত সবসময় বাড়িয়ে দেয়া আছে জানিয়ে ওয়াসিম বলেছেন, ‘তবে পাকিস্তান সুপার লিগে বেশিরভাগ ক্রিকেটারই খেলে। সবার কাছে আমার নম্বর রয়েছে। যে কেউ সাহায্য চাইলে আমি রাজি।’ এসময় তিনি কোচ না হতে চাওয়ার অন্য কারণটি জানিয়ে বলেন, ‘আমি বোকা নই। মাঝে মাঝেই শুনি কোচ বা ক্রিকেটারদের সঙ্গে মানুষ খারাপ ব্যবহার করছে। কোচ কিন্তু মাঠে নেমে খেলে না। সে শুধু পরিকল্পনা করে। তাই দল হারলে সেই দায় শুধু কোচের উপরে বর্তায় না। এই কারণে আমি ভীত। আমি এ ধরনের আচরণ সহ্য করতে পারি না।’ ওয়াসিমের শেষ কথা, ‘এসব নিয়ে আমার ভয় কাজ করে, কারণ আমি কখনও খারাপ আচরণ মেনে নিই না। কিন্তু আমরা দিনে দিনে আরও বেশি করে সেরকমই করছি। আমি আমার দেশের মানুষকে ভালোবাসি, তাদের উৎসাহ, খেলাটা নিয়ে আবেগকে ভালোবাসি। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা যে আচরণ করেন… সেটা বোঝায় যে জাতি হিসেবে আমরা কেমন।’