ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধের প্রস্তাব ভারতের

    0

    লোকসমাজ ডেস্ক॥ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করতে আইন প্রস্তাব করতে যাচ্ছে ভারত। দেশের কোনো নাগরিক যদি এ মুদ্রায় লেনদেন করেন বা এ ধরনের ডিজিটাল সম্পদের মালিক হন, তাহলে তাদের জরিমানা করার বিধানও রাখা হচ্ছে। শিগগিরই ভারতের লোকসভায় এ নিয়ে একটি বিল উত্থাপন করা হচ্ছে। খবর রয়টার্স।
    ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবহারকারীদের ‘রেড-হট অ্যাসেট ক্লাস’ আখ্যা দিয়ে ভারত সরকারের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, এরই মধ্যে কয়েক লাখ বিনিয়োগকারী এ শ্রেণীতে প্রবেশ করেছেন। তিনি জানান, এ মুহূর্তে ভারতের ৮০ লাখের বেশি মানুষ ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনের সঙ্গে জড়িত। এ বাজারে তারা বিনিয়োগ করেছেন ১০ হাজার কোটি রুপিরও বেশি।
    তাই ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেন গুটিয়ে ফেলতে ব্যবহারকারীদের ছয় মাস সময় দেয়া হবে। এ সময়ের মধ্যেই তাদের কাছে থাকা ক্রিপ্টোকারেন্সিকে ভারতের প্রচলিত মুদ্রায় পরিবর্তিত করে নিতে হবে। ছয় মাস পরেও কেউ এ ভার্চুয়াল মুদ্রার কারবার করলে তার ওপর জরিমানা কার্যকর হবে।
    ক্রিপ্টোকারেন্সি এক ধরনের সাংকেতিক মুদ্রা, যেটি কেবল অনলাইনেই দেখা যায়। বাস্তবে এ মুদ্রা ধরে দেখা যায় না। পুরো লেনদেনটিই অনলাইন নির্ভর। পিয়ার টু পিয়ার পদ্ধতিতে এ লেনদেন সরাসরি প্রাপক থেকে প্রেরকের কাছে যায়। ফলে তৃতীয় কোনো পক্ষের এতে সংশ্লিষ্টতা থাকে না। অন্য কেউ লেনদেনের বিষয়টি জানতেও পারে না। আর এটিই মূলত ক্রিপ্টোকারেন্সি নিয়ে রাষ্ট্রগুলোর আশঙ্কার কারণ।
    বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত ক্রিপ্টোকারেন্সি বিটকয়েনের মূল্য গত শনিবারে ৬০ হাজার ডলারে দাঁড়িয়েছে। নতুন বছরে এ নিয়ে বিটকয়েনের মান দ্বিগুণ বাড়ল। টেসলার সিইও ইলোন মাস্কের বিশ্বখ্যাত আইটি ব্যক্তিত্বদের সমর্থনের কারণে বিটকয়েনের মান বেড়েছে।
    ভারতের এ আইনকে, ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরুদ্ধে সবচেয়ে শক্ত বলে মনে করা হচ্ছে। আইনে জরিমানার বিধান থাকলেও কারাদণ্ডের শাস্তি থাকবে কিনা সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। যদিও ২০১৯ ক্রিপ্টোকারেন্সি লেনদেনসহ বিভিন্ন বিষয়ে জড়িত থাকলে অনধিক ১০ বছরের কারাদণ্ড রাখার সুপারিশ করেছিল সরকারের একটি প্যানেল। সে সময় বিষয়টি আলোর মুখ দেখেনি।
    এর আগে গত জানুয়ারিতেই বিটকয়েন ও অন্যান্য ভার্চুয়াল মুদ্রার লেনদেন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। এরই সূত্র ধরে ক্রিপ্টোকারেন্সির বিরুদ্ধে সক্রিয় হচ্ছে দেশটির সরকার। পাশাপাশি ভারতের ভেতরে লেনদেনের জন্য আনুষ্ঠানিক ডিজিটাল মুদ্রা চালুর বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রায় লেনদেনের বিষয়ে কাজ করছে। এটিও ক্রিপ্টোকারেন্সিকে নিষিদ্ধ করতে সরকারের আগ্রহের একটি কারণ হতে পারে। ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আর্থিক স্থিতিশীলতা বিঘ্নিত হতে পারে, গত মাসে এমন শঙ্কা প্রকাশ করে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই)।
    যেহেতু পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমর্থন বেশি, তাই সহজেই বিলটি পাস হয়ে আইনে পরিণত হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আর যদি আইনটি পাস হয়ে যায়, তাহলে ভারত হবে ক্রিপ্টোকারেন্সি অবৈধ ঘোষণা করা বড় অর্থনীতির প্রধান দেশ। এর আগে চীন ক্রিপ্টোকারেন্সি নিষিদ্ধ করলেও তাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করেনি।