বিইআরসি’র চেয়ারম্যানের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ আদালতের নির্দেশ অনুসারে গণশুনানির মাধ্যমে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিল না করায় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান হাইকোর্টে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। পরে আদালত মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ১১ই জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন। মঙ্গলবার বিচারপতি মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
গত ২৯শে নভেম্বর, আদালতের নির্দেশ অমান্যের অভিযোগে বিইআরসি’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। এর আগে ভোক্তা অধিকার সংস্থার (ক্যাব) দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৫শে আগস্ট বিইআরসিকে গণশুনানির মাধ্যমে এলপিজির দাম নির্ধারণ করে ৩০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ওই আদেশের পর দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হলেও বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আদেশটি প্রতিপালনে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি। এমনকি তারা আদালত প্রতিবেদন দাখিল করেনি। তাই সুনির্দিষ্টভাবে আদেশ প্রতিপালন না করায় বিইআরসি’র চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গতকাল বিইআরসি’র চেয়ারম্যান আদালতে উপস্থিত হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন-২০০৩ এর ২২ (খ) এবং ৩৪ ধারা অনুযায়ী এলপিজি, গ্যাস, বিদ্যুৎ এবং তেলসহ সকল প্রকার জ্বালানির দাম নির্ধারণের আইনগত দায়িত্ব এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের। বিশ্ববাজার ও দেশীয় চাহিদার ভিত্তিতে গণশুনানির মাধ্যমে বিইআরসি মূল্য পুনঃনির্ধারণ করে থাকে। সর্বশেষ ২০০৯ সালে সাড়ে ১২ কেজি ওজনের এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ৭০০ টাকা নির্ধারণ করে দেয় বিইআরসি। এরপর আন্তর্জাতিক বাজারের এই গ্যাসের দাম কয়েক দফা কমলেও দেশে গণশুনানি করে দাম পুনঃনির্ধারণ করেনি বিইআরসি। এর পরিপ্রেক্ষিতে সিলিন্ডারের দাম পুনঃনির্ধারণের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৬ সালের ৩১শে জুলাই বিইআরসিতে আবেদন করে ক্যাব। ওই আবেদনটি নিষ্পত্তি না করে রহস্যজনকভাবে ঝুলিয়ে রাখে বিইআরসি। সর্বশেষ ক্যাবের আবেদনে গত ২৫শে আগস্ট হাইকোর্ট বিইআরসি’র চেয়ারম্যানকে ৩০ দিনের মধ্যে গণশুনানি করে এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নির্ধারণ করে আদালতে প্রতিবেদন দিতে আদেশ দেয়। ১৭ই নভেম্বর বিইআরসি দাম নির্ধারণ না করেই আদালতে প্রতিবেদন দেয়। সে প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন-২০০৩ এর ৩৪ ধারা অনুযায়ী পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থের খুচরা ট্যারিফ প্রবিধিমালা- ২০১২, পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থ মজুতকরণ, বিপণন ও বিতরণ ট্যারিফ প্রবিধিমালা-২০১২ এবং পেট্রোলিয়ামজাত পদার্থ পরিবহন ট্যারিফ প্রবিধিমালা-২০১২ নামে তিনটি প্রবিধানমালার খসড়া অনুমোদনের জন্য আইন মন্ত্রণালয়, জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ ও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনে (বিপিসি) পাঠানো হয়েছে।