ওপেক প্লাসের জন্য মাথাব্যথা লিবিয়ার সর্ববৃহৎ তেলক্ষেত্র

0

লোকসমাজ ডেস্ক॥ ঝিমিয়ে পড়া তেল শিল্পকে জাগিয়ে তুলতে নতুন এক সিদ্ধান্তে দেশের সর্ববৃহৎ তেলক্ষেত্রে উৎপাদনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আফ্রিকান দেশ লিবিয়া। যদিও এটি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেক ও রাশিয়ার মতো শীর্ষ তেল উৎপাদনকারী দেশকে নিয়ে গঠিত ‘ওপেক প্লাস’ জোটের জন্য নতুন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেননা জোটটি তেলের দাম বাড়াতে বৈশ্বিক সরবরাহ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছিল। খবর ব্লুমবার্গ।
লিবিয়ার রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি ‘দ্য ন্যাশনাল অয়েল করপোরেশন’ রোববার ‘ফোর্স মেজার’ তুলে নিয়ে পশ্চিমাঞ্চলের তেলক্ষেত্র থেকে উৎপাদন শুরু করতে তাদের অপারেটরদের নির্দেশ দিয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানানো হয়। সাহারা নামের এ ক্ষেত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র রয়টার্সকে জানায়, শুরুর দিকে প্রতিদিন ৪০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত তেল উৎপাদন করবে এ ক্ষেত্রটি। এরপর পুরোদমে উৎপাদনে গেলে এখান থেকে দিনে পাওয়া যাবে তিন লাখ ব্যারেল তেল!
ওই সূত্রটি জানায়, নতুনভাবে এ ক্ষেত্র থেকে যদি প্রতিদিন ৩ লাখ ব্যারেল তেল পাওয়া যায় তবে সব মিলিয়ে লিবিয়ার উৎপাদন দিনপ্রতি পৌঁছবে ছয় লাখ ব্যারেলে।
মুয়াম্মার গাদ্দাফির পতনের পর থেকে লিবিয়ায় দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ চলে এসেছে। আপাতত যুদ্ধবিরতি চলায় সাহারাসহ অন্য তেলক্ষেত্রগুলো পুনরায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু করতে চলেছে। তেমনি দেশের পূর্বাঞ্চলের বন্দরও খুলছে। জানুয়ারি থেকে এসব তেলক্ষেত্র আর বন্দর সবই কার্যত বন্ধ ছিল।
নভেল করোনাভাইরাসের কারণে দেশে দেশে লকডাউনের ফলে যে অচলাবস্থা তৈরি হয় তাতে তেলের দাম পড়ে যায়। ওই পরিস্থিতিতে তেলের দাম বাড়াতে ওপেক প্লাস জোটের দেশগুলো তেলের সরবরাহ কমিয়ে আনার পরিকল্পনা করে। দাম বাড়াতে ও মজুদ কমাতে উৎপাদন কমানোর পরিকল্পনা হাতে নেয় তারা। মে ও জুনে প্রতিদিন ৯৭ লাখ ব্যারেল কম উৎপাদন করা হয়। জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত এ লক্ষ্যমাত্রা দৈনিক ৮০ লাখ ব্যারেল আর ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত দৈনিক উৎপাদন কমানো হবে দৈনিক ৬০ লাখ ব্যারেল।
কিন্তু লিবিয়ার সবচেয়ে বড় তেলক্ষেত্রটিতে উৎপাদন শুরু হলে ওপেক প্লাসের পরিকল্পনা অনেকটাই ব্যর্থ হবে। কেননা তখন সরবরাহ কমিয়ে দাম বাড়ানোর কৌশলটি সফল নাও হতে পারে। লিবিয়া অবশ্য বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তাদের ওপর থেকে ‘ফোর্স মেজার’ তুলে নেয়। এটি চুক্তির একটি সাধারণ ধারা, যা মূলত উভয় পক্ষকে দায়বদ্ধতা বা বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্তি দেয়, যখন কোনো পক্ষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে একটি অস্বাভাবিক ঘটনা বা পরিস্থিতি তৈরি হয়।